স্বজন হারানোদের কান্নার রোল


ইউএনভি ডেস্ক:

নারায়ণগঞ্জের পশ্চিম তল্লা এলাকায় এখন শুধু স্বজনহারাদের কান্নার রোল। শোকবিহবল এলাকাবাসী শনিবার সারাদিন বন্ধ রেখেছিলেন দোকানপাট। টানানো হয়েছিল কালো পতাকা। কলেজ পড়ুয়া দুই ছেলে সাব্বির ও জুবায়েরের মৃত্যুতে বুকফাটা কান্নায় ভেঙে পড়েন নারায়ণগঞ্জ প্রেস ক্লাবের কর্মচারী নুরুদ্দিন।


বিস্ফোরণের কারণে পুরো এলাকার গ্যাস লাইনের সংযোগ তিতাস কর্তৃপক্ষ বন্ধ করে দিয়েছে বলে জানা গেছে। শোকে কাতর এলাকাবাসী এই সাময়িক অসুবিধাও মেনে নিচ্ছেন মৃতদের কথা ভেবে। শনিবার রাত ১০টা পর্যন্ত ছয়জনের জানাজা হয়েছে। তল্লা বড় মসজিদে বাদ মাগরিব মুয়াজ্জিন দেলোয়ার হোসেন (৪৫) ও তার ছেলে জুনায়েদের (১৪) জানাজা অনুষ্ঠিত হয়েছে।

বোমওয়ালা বাড়ির মাঠে বাদ আসর সাব্বির (২১), জুবায়ের (১৮) ও কুদ্দুস বেপারীর (৭২) জানাজা এবং তল্লা চেয়ারম্যান বাড়ি মসজিদে হুমায়ুন কবিরের (৬৫) জানাজা সম্পন্ন হয়। এদিকে মাইনুদ্দিনের (১২) লাশ তল্লা এলাকায় আনা হলেও পরিবারের সম্মতিতে গ্রামের বাড়ি চাঁদপুরে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানে তার জানাজা ও দাফন করা হবে। আরও কয়েকজনের লাশ তাদের গ্রামের বাড়িতে নিয়ে যাওয়া হয়েছে।

কলেজছাত্র দুই ভাইয়ের মৃত্যু : নারায়ণগঞ্জ সদর উপজেলার ফতুল্লার পশ্চিম তল্লা বাইতুস সালাত জামে মসজিদে বিস্ফোরণের ঘটনায় মো. সাব্বির (২১) ও মো. জুবায়ের (১৮) নামে দুই কলেজছাত্রের মৃত্যু হয়েছে।

নারায়ণগঞ্জ প্রেস ক্লাবের কর্মচারী নুরুদ্দিনের ছেলে সাব্বির ও জুবায়ের ওই মসজিদে নিয়মিত নামাজ আদায় করতেন। জুবায়ের সরকারি তোলারাম কলেজের দ্বাদশ শ্রেণির ছাত্র ও সাব্বির নারায়ণগঞ্জ কলেজের ছাত্র ছিল। দুর্ঘটনার সময় বড় দুই ভাইয়ের সঙ্গে ছোট ভাই ইয়াসিনও (১২) ছিল। তারা তিনজনই এক সঙ্গে নামাজ পড়তে গিয়েছিলেন। তবে ইয়াসিন পেছনের সারিতে দাঁড়ানোয় বিস্ফোরণের সময় দৌড়ে বেরিয়ে আসে।

২০ সেকেন্ডের জন্য বেঁচে যান বজলু : বায়তুস সালাত জামে মসজিদে বিস্ফোরণের ঘটনায় ভাগ্যক্রমে বেঁচে গেছেন বজলুর রহমান। বিসমিল্লাহ স্টোরের মালিক বজলুর মসজিদে এশার নফল নামাজ না পড়েই বের হন। মসজিদ থেকে তিনি বের হওয়া মাত্র বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটে। বজলু জানান, প্রতিদিন এশার নামাজ পড়তে তিনি মসজিদে যান।

সেখানে ফরজ নামাজ শেষে পেছনে চলে আসেন। তবে ফরজ নামাজের এক রাকাত শেষ করতেই বিদ্যুৎ চলে যায়। বিকল্প আরেকটি বিদ্যুৎ সংযোগ রয়েছে যা চালু করা হয়। সেই বিদ্যুৎ সংযোগ দিয়ে মসজিদের মুসল্লিরা বাকি নামাজ সারেন। তিনিও ফরজ নামাজের পর সুন্নত নামাজ পড়ে বের হয়ে বিকট শব্দ শোনেন। মসজিদ থেকে বের হয়ে ২০ সেকেন্ডের মধ্যে শব্দ শুনে প্রথমে তিনি কিংকর্তব্যবিমূঢ় হয়ে পড়েন। মসজিদে অগ্নিকাণ্ডের বিষয়টি টের পেয়ে দৌড়ে সরে পড়েন। তিনি বলেন, একটু দেরি করে বের হলে আমিও দগ্ধ হতে পারতাম।


শর্টলিংকঃ