- ইউনিভার্সাল ২৪ নিউজ - https://universal24news.com -

অসহায় নারীর স্বপ্নের ঘর ভেঙে দিল ভূমি অফিস


তানোর প্রতিনিধি :

রাজশাহীর তানোরে খাস জমিতে তৈরি স্বামী পরিত্যাক্তা ভূমিহীন স্বপ্নার স্বপ্নের ঘর ভেঙ্গে দিয়েছে ভূমি অফিসের কর্মকর্তারা। ফলে অন্যোর বাড়িতে আশ্রয় নিয়ে মানবেতর জীবন যাপন করছে অসহায় ভুমিহীন ওই নারী। এঘটনায় এলাকায় চলছে ব্যাপক আলোচনা ও সমালোচনা।

এলাকাবাসীসহ ভূমিহীন ওই নারী উর্ধবতন কর্মকর্তাদের হস্থক্ষেপ কামনা করেছেন। তানোর ভূমি অফিস ও এলাকাবাসী সুত্রে জানা গেছে, তানোর উপজেলার কলমা ইউপি এলাকার গংগারামপুর গ্রামে গংগারামপুর মৌজায়, জে-এল নং ৩৩, ১৯৭ নং দাগে ১নং খাস খতিয়ান ভূক্ত ৮২শতক জমি রয়েছে।

ওই খাস জমি লীজ না নিয়েই গংগারামপুর গ্রামের সামশুল আলম, সোহরাব হোসেন, ইদুল, মুসলেম উদ্দিন দখল করে বাড়ি ঘর নির্মান করে বসবাস করছেন। ওই একই দাগের এক কোনে একশতকেরও কম জমিতে বেড়া ও টিন দিয়ে একটি ঘর করে গংগারামপুর গ্রামের মৃত আবুল কাশেমের কন্যা স্বামী পরিত্যক্তা ১সন্তানের জননী অসহায় ভূমিহীন নারী স্বপ্না (৩০) তার মা ও একমাত্র কন্যাকে নিয়ে গত ৮বছর ধরে বসবাস করে আসছিলেন।

ঝড় ও বৃষ্টিতে প্রায় প্রতিবছরই ঘর ভেঙ্গে যায়। চলতি বছরেও ঝড়ে ঘরটি ভেঙ্গে পড়ার উপক্রম হয়। ফলে ওই জায়গা টুকু লীজের জন্য তানোর ভূমি অফিসের নির্ধারিত ফর্মে একটি আবেদন করে বিভিন্ন জনের সাহায্য-সহযোগীতা নিয়ে গত প্রায় ১মাস আগে ওই বেড়ার ঘরটি ভেঙ্গে সেখানে ইট দিয়ে স্বপ্না তার স্বপ্নের একটি ঘর তৈরি করছিলেন।

ঘরটি নির্মামের প্রায় শেষ পর্যায়ে হঠাৎ গত বুধবার ১৪ই আগস্ট/২০১৯ ইং তারিখ দুপুরে তানোর উপজেলা নির্বাহী অফিসারের পিওন আরিফ হোসেন তানোর ভূমি অফিসের কর্মকর্র্র্র্র্র্র্র্র্র্র্র্র্র্র্র্র্তা ও পুলিশ ফোর্সসহ ঘটনাস্থলে গিয়ে স্বপ্নার নির্মানাধীন সেই স্বপ্নের ঘর ভেঙ্গে ইট ও রড নিয়ে আসেন এবং বালি ও টিন ছড়িয়ে ছিটিয়ে ফেলেন।

এসময় স্বপ্না ২দিনের সময় চাইলে তাকে অশ্লিল ভাষায় গালাগালি করা হয়। ঘরসহ সহায় সম্বল হারিয়ে স্বপ্না স্থানীয় সাংসদ ও উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যানসহ সরকারের কর্মকর্তাদের দ্বারে দ্বারে ঘুরছেন। এব্যাপারে ক্ষতিগ্রস্থ স্বপ্না বলেন, কলমা ইউপি কার্যালয়ের অনুমতি নিয়ে ৮বছর ধরে ঘর নির্মান করে বসবাস করছিলাম, ঝড়ে ঘরটি ভেঙ্গে পড়ায় বিভিন্ন জনের সাহায্য-সহযোগীতায় ঘরটি নির্মান করছিলাম, ঘর ভাঙ্গার সময় ২দিনের সময় চেয়েছিলাম দেয়া হয়নি।

স্বপ্না বলেন, ঘরটি নির্মানের শুরুতে গত প্রায় ১মাস আগে গ্রামের রবিউল ইসলামসহ কয়েকজন বাধা দিয়েছিলো পরে পুলিশি হস্থক্ষেপে ঘরটি নির্মানকাজ চলছিলো। স্বপ্না বলেন, ওই খাস জমিতে আরো ৫জন বাড়ি-ঘর নির্মান করেছেন তাদেরটা ভাঙ্গা হলোনা, আমিতো একটি ঘর করার মত জায়গার জন্য লিজের আবেদন করে ঘর করছিলাম আমার ঘরটা ভাঙ্গা হলো তাদেরটা কেন ভাঙ্গা হলোনা।

যোগাযোগ করা হলে তানোর উপজেলা নির্বাহী অফিসারের পিওন আরিফ হোসেন বলেন নির্বাহী স্যারের নির্দেশে ভূমি অফিসের কর্মকর্তাসহ পুলিশ নিয়ে ঘর ভাঙ্গা হয়েছে, এর বেশী কিছু আমি জানিনা। এব্যাপারে তানোর ভূমি অফিসের নাজির সাহিন আলম বলেন, স্বপ্না খাস জমিতে ইট দিয়ে ঘর নির্মান করছিলেন, গ্রামবাসীর অফিযোগের প্রেক্ষিতে উপজেলা নির্বাহী অফিসারের নির্দেশে স্বপ্নার ঘর ভাঙ্গা হয়েছে।

এ ব্যাপারে তানোর উপজেলা নির্বাহী অফিসর নাসরিন বানুর মোবাইলে একাধীকার কল করা হলে তিনি ফোন রিসিভ না করায় বক্তব্য পাওয়া যায়নি। এব্যাপারে কলমা ইউপি’র সাবেক চেয়ারম্যান ও তানোর উপজেলা পরিষদ বর্তমান চেয়ারম্যান লুৎফর হায়দার রশিদ ময়না বলেন, বর্তমান প্রধানমন্ত্রী জননেত্রী শেখ হাসিনা যখন দরিদ্র অসহায় ভূমিহীনদের খাস জায়গায় টাকা দিয়ে ঘর নির্মান করে দিচ্ছেন ঠিক সেই সময়ে ভূমিহীন নারীর ঘর ভেঙ্গে দেয়াটা অপ্রত্যাশিত, অনৈতিক ও অমাবিকের পর্যায়েই পড়ে।

তিনি বলেন, স্বপ্না একেবারেই অসহায় মহিলা তার কোন জায়গা নেই, তাকে ওই জায়গাটি লীজ প্রদান করে ঘর নির্মানের ব্যবস্থা গ্রহন করা হচ্ছে।