- ইউনিভার্সাল ২৪ নিউজ - https://universal24news.com -

হংকংয়ে পুলিশ-শিক্ষার্থী ব্যাপক সংঘর্ষ, ক্যাম্পাস ঘেরাও


হংকংয়ে পলিটেকনিক বিশ্ববিদ্যালয়ে নতুন করে পুলিশের সঙ্গে শিক্ষার্থীদের সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যম জানায়, সোমবার (১৮ নভেম্বর) ভোরে বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাস ঘিরে ফেলে নিরাপত্তা বাহিনীর সদস্যরা। এসময়, কিছু শিক্ষার্থী বাইরে বের হতে চাইলে তাদের ওপর রাবার বুলেট, জলকামান ও কাঁদানে গ্যাস ব্যবহার করে দাঙ্গা পুলিশ। ক্যাম্পাসে প্রবেশ করতে চাইলে শিক্ষার্থীরা পাল্টা জবাবে বিভিন্ন গাড়ি ও স্থাপনা লক্ষ্য করে পেট্রোল বোমা ছোড়ে ও প্রধান গেটে আগুন ধরিয়ে দেয়।

পুলিশের সঙ্গে বিক্ষোভকারীদের সংঘর্ষ। ছবি: সংগৃহীত

এরপর থেকে থেকেই শহরের ভেতর গুলির শব্দ পাওয়া গেছে ও আগুন দেখা গেছে। বিশ্ববিদ্যালয়ের বেশিরভাগ এলাকাই শিক্ষার্থীরা দখল করে নিয়েছে। প্রধান গেটগুলোতে ব্যারিকেড দিয়ে পুলিশের প্রবেশপথ বন্ধ করে দেওয়ার চেষ্টা করছে আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীরা।

সরকারবিরোধী বিক্ষোভ সহিংসতায় রূপ নেওয়ায় গত সপ্তাহেই বন্ধ ঘোষণা করা হয়েছে হংকংয়ের অধিকাংশ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান। তবে, ক্যাম্পাস ছাড়েনি পলিটেকনিক শিক্ষার্থীরা।

সোমবার ভোরে পুলিশের সঙ্গে সংঘর্ষের রেশ খানিকটা কেটে গেলে ক্যাম্পাস ছেড়ে বের হওয়ার চেষ্টা করেন কিছু শিক্ষার্থী। কিন্তু, পুলিশের বাধার মুখে বাইরে বের হতে পারেননি তারা। আর পুলিশ ভেতরে প্রবেশের চেষ্টা করলেই তাদের লক্ষ্য করে ইট-পাটকেল ছুড়ছেন আন্দোলনকারীরা।

সকালে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রধান প্রফেসর জিং গুয়াং ত্যাং এক ভিডিওবার্তায় জানান, শিক্ষার্থীরা শান্তিপূর্ণভাবে ক্যাম্পাস ছাড়তে চাইলে তিনি সর্বাত্মক সাহায্য করবেন। নিজে পুলিশের সঙ্গে বোঝাপড়া করে শিক্ষার্থীদের বিরুদ্ধে কোনো ধরনের অভিযোগ যেন না হয়, সে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

এর প্রতিক্রিয়ায় শিক্ষার্থীরা কিছু জানাননি। কিন্তু ক্যাম্পাস ছাড়ার চেষ্টাও করছে না তারা।

বিবিসির এক প্রতিবেদনে বলা হয়, সারারাত পুলিশ ও শিক্ষার্থীদের ইঁদুর বিড়াল খেলাই চলেছে কিন্তু শিক্ষার্থীদের শান্ত করতে ব্যর্থ হয়েছে নিরাপত্তা বাহিনী।

রোববার রাতে তাদের লক্ষ্য করে গুলি ছোড়ার চেষ্টাও করেছে দাঙ্গা পুলিশ। শিক্ষার্থীরা বিপজ্জনক অস্ত্র ব্যবহার করলে তাদের আর কোনো উপায় থাকবে না বলে হুঁশিয়ারি দিয়েছেন পুলিশ কর্মকর্তারা।

এই বিক্ষোভের শুরু পাঁচ মাস আগে অপরাধী প্রত্যর্পণ বিল সংশোধনকে কেন্দ্র করে। বিলটিতে বলা ছিল, বিশেষ পরিস্থিতিতে অপরাধীদের হংকংয়ে বিচার না করে চীনের মূল ভূখণ্ডে হস্তান্তর করা যাবে। এতে ‘এক দেশ দুই নীতি’ ব্যবস্থায় হংকং পূর্ণস্বায়ত্তশাসন হারাবে বলে আওয়াজ ওঠে। বিক্ষোভকারীদের চলমান আন্দোলনের মুখে বিলটি প্রত্যাহার করে নিলেও তাদের বিরুদ্ধে অভিযোগ তুলে নেওয়া হয়নি।

চলতি মাসের শুরু থেকে সবার ভোটাধিকার, আন্দোলনের স্বাধীন তদন্ত ও আটক বিক্ষোভকারীদের ছেড়ে দেওয়ার দাবিতে নতুন করে আন্দোলন চালিয়ে যাচ্ছেন শিক্ষার্থীরা।