১০দিনেই সিনারিওটা উল্টোদিকে টার্ন নিয়েছে : লিটন


নিজস্ব প্রতিবেদক : 

‘এখানে গভীর উৎকণ্ঠার সঙ্গে বলতে চাই- আসলে গত সাত দিনে বা ১০ দিনে এই সিনারিওটা পুরোপুরি উল্টো দিকে টার্ন নিয়েছে। যারা স্বাস্থ্যকর্মী আমাদের ছিলেন তারাও আক্রান্ত হচ্ছেন। যারা বাসা বাড়িতে ছিলেন বা এমনি বাজার হাটে যাওয়া আসা করছেন তারাও আক্রান্ত হচ্ছেন। আমাদের ছোট শহর, সাড়ে ৭ লাখ, ৮ লাখ লোক আমাদের। এখানে গতকালকেই ৬২ জন পজিটিভ শনাক্ত হয়েছেন’

আসন্ন ঈদুল আজহায় ঘরমুখো মানুষের যাতায়াত বিশেষ করে পশুর হাঁটকে ঘিরে করোনা ভাইরাস (কোভিড-১৯) মহামারি পরিস্থিতির মারাত্মক অবনতির আশংকা করেছেন জনপ্রতিনিধিরা। একই সঙ্গে ঈদে করোনা সংক্রমণ নিয়ন্ত্রণে রাখতে প্রয়োজনীয় কঠোর ব্যবস্থা নিতে প্রধানমন্ত্রীসহ সরকারের নীতিনির্ধারকদের প্রতি আহ্বান জানান তারা।

করোনাকালীন সংকট নিয়ে বিশেষ ওয়েবিনার ‘বিয়ন্ড দ্য প্যানডেমিক’-এর সপ্তম পর্বে ‘জনস্বাস্থ্য ও স্থানীয় সরকার’ শীর্ষক আলোচনায় সভায় অংশগ্রহণকারী জনপ্রতিনিধিরা এ আহ্বান জানান।

শনিবার রাতে আওয়ামী লীগের গবেষণা প্রতিষ্ঠান সেন্টার ফর রিসার্চ অ্যান্ড ইনফরমেশনের (সিআরআই) আয়োজিত এই আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়।

প্রধানমন্ত্রীর বিশেষ সহকারী ব্যারিস্টার শাহ আলী ফরহাদের সঞ্চালনায় এতে আলোচক হিসেবে ছিলেন স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় (এলজিআরডি) মন্ত্রী মো. তাজুল ইসলাম, ঢাকা উত্তর সিটি কর্পোরেশনের মেয়র আতিকুল ইসলাম, ঢাকা দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশনের মেয়র ব্যারিস্টার শেখ ফজলে নূর তাপস, রাজশাহী সিটি কর্পোরেশনের মেয়র এএইচএম খায়রুজ্জামান (লিটন), নারায়ণগঞ্জ সিটি কর্পোরেশনের মেয়র ডা. সেলিনা হায়াৎ আইভী, ময়মনসিংহ সিটি কর্পোরেশনের মেয়র ইকরামুল হক টিটু।

করোনাকালীন সংকট নিয়ে রাজশাহী সিটি কর্পোরেশনের মেয়র এএইচএম খায়রুজ্জামান লিটন বলেন, ‘আগামী যে ঈদুল আজহা যাকে আমরা কোরবানী ঈদ বলি এই ঈদে আরেকটি ভয়ংকর চিত্র নিয়ে আসবে কি না এটা নিয়ে আজকে মিটিং করেছি বিকেল বেলায়। আমাদের শহর তলীতে তিনটি পশুর হাট বসে, বেশ বড় বড়’।

হাট থেকে সংক্রমিত হওয়া এবং সঙ্গে করে জীবাণু বাড়ি পর্যন্ত যাওয়ার প্রবল সম্ভাবনার কথা তুলে ধরে তিনি বলেন, ‘হাটে যে পরিমাণ মানুষ যাওয়া আসা করবে; যাবে, আসবে, কিনবে দেখবে, একটি মানুষের সঙ্গে গরু কিনতে কৌতুহলী যেহেতু আমাদের বাঙালি সমাজ, বাবা যাবেন, বাবার সঙ্গে ছেলে যাবে, সঙ্গে কাজের একটা লোক নিয়ে যাবে। তিন চারটা হাট ঘুরে তারা পছন্দ করবেন এই সব কাজ করতে গিয়ে; হাটে এমনিতেই যে অবস্থা থাকে, বর্ষার সময়, বৃষ্টি হলে কাদা সেখানে তো আটকানো যাবেই না। সেই কাদা জীবাণু মিশ্রিত হয়ে বাড়ি পর্য ন্ত যাওয়ার একটা সম্ভবনা আছে। জীবাণু বাড়ি পর্যন্ত আসাটা ঠেকাতে কী করা যায়? আমরা ভাবছি।’

মেয়র খায়রুজ্জামান লিটন, ‘ঈদে ঘরমুখো পরিবার পরিজনের সঙ্গে ঈদ করার জন্য আসবেন। ৃ ‘আমরা যেভাবে বলি না কেন? ঈদ উপলক্ষে আবারও মানুষ বিভিন্ন জায়গায় যাওয়া আসা করবে। সেজন্য এই ঈদে পরিস্থিতি যাতে জটিল না হয় সে জন্য আমাদের কিছু করা দরকার।’

প্রধানমন্ত্রীসহ সরকারের নীতিনির্ধারকদের দৃষ্টি আকর্ষণ করে রাজশাহীর মেয়র বলেন, ‘আমি জানি এটি আমি রাজশাহীতে চাইলেই হবে না, এখানে সরকার প্রধানের বিষয় আছে, আমাদের মন্ত্রী পরিষদের বিষয় আছে, সিদ্ধান্তের বিষয় আছে। এবারের পশুর হাটটি বা কোরবানির বিষয়ে সীমিত আকারে কিছু করা যায় কি না বা নিয়ন্ত্রণটা কীভাবে কড়াকড়িভাবে আরোপ করা যায়।’

‘এই বিষয়ে আইন প্রয়োগকারী সংস্থাকে দিয়ে অথবা মানুষকে বুঝিয়ে- আমি এবং আমার কাউন্সিলরগণ বাড়ি বাড়ি গিয়ে বোঝাতে প্রস্তুত আছি যে জীবনে বেঁচে থাকলে কোরবানী ঈদ অনেক আসবে, পরের আবার ঈদ করা যাবে। কিন্তু যদি ক্ষতি হয়ে যায় তবে সেটা পরিবারের কান্না হয়ে দাঁড়াবে।’

বিষয়টি নিয়ে প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে আলোচনা করতে স্থানীয় সরকার মন্ত্রীকে অনুরোধ জানিয়ে লিটন বলেন, ‘মাননীয় মন্ত্রী আপনি প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে আলাপ করে কী ব্যবস্থা নেওয়া যায় দয়া করে একটু নেবেন।’

গত ঈদুল ফিতরের পর রাজশাহীতে করোনা ভাইরাস পরিস্থিতির অবনতি হওয়ার কথা তুলে ধরে মেয়র লিটন বলেন, ‘করোনার যে ভয়াবহ বিস্তার তার থেকে কিছুটা হলেও রাজশাহী মুক্ত ছিল। গত ঈদুল ফিতরের আগ পর্যন্ত আমরা মুক্ত রাখতে পেরেছিলাম।’

(-বাংলা নিউজ)


শর্টলিংকঃ