২৫ লাখ টাকার পাম্প ৩ কোটি টাকায় ক্রয়


ইউএনভি ডেস্ক:

পঁচিশ লাখ টাকা মূল্যের দুটি বৈদ্যুতিক মোটরপাম্প প্রায় ১২ গুণ বেশি মূল্যে অর্থাৎ তিন কোটি টাকায় কেনার অভিযোগে ৬ জনকে আসামি করে মামলা করেছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)।

সার্বক্ষণিক বিদ্যুৎ সরবরাহ নিশ্চিত করতে ২০১৬ সালে চট্টগ্রামের পটিয়ার শিকলবাহায় অবস্থিত ১৫০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ কেন্দ্রের জন্য এ দুটি পাম্প কেনা হয়। পাম্প কেনা নিয়ে দুর্নীতির অভিযোগে মঙ্গলবার বিকালে চট্টগ্রাম দুদক কার্যালয়-২ এ ঠিকাদারসহ ৬ জনকে আসামি করে মামলা হয়। দুদকের প্রধান কার্যালয়ের সহকারী পরিচালক মামুনুর রশীদ চৌধুরী বাদী হয়ে মামলাটি করেছেন।

আসামিদের বিরুদ্ধে বৈদ্যুতিক মোটরপাম্প ক্রয়ের নামে সরকারের ২ কোটি ৫৯ লাখ টাকা আত্মসাতের অভিযোগ আনা হয়েছে। ৬ আসামি হলেন- ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান মেসার্স পাওয়ারটেক ইন্টারন্যাশনালের প্রোপ্রাইটর আবদুল আলীম, শিকলবাহা ১৫০ মেগাওয়াট পিকিং বিদ্যুৎ কেন্দ্রের ব্যবস্থাপক প্রকৌশলী ভুবন বিজয় দত্ত, উপব্যবস্থাপক মো. মিজানুর রহমান, রাজশাহী সার্ভিসেস নেসকো লিমিটেড প্রধান প্রকৌশলী (উৎপাদন) এএইচএম কামাল, অতিরিক্ত প্রধান প্রকৌশলী (ভারপ্রাপ্ত) আবু ইউসুফ ও নকশা ও পরিদর্শন পরিদফতর-১ এর পরিচালক তোফাজ্জেল হোসেন।

দুদক সূত্রে জানা যায়, ২০১৬ সালের ২৭ জুন উন্মুক্ত দরপত্রের মাধ্যমে ‘জিটি মেইন লুব অয়েল পাম্প, ইমার্জেন্সি লুব অয়েল পাম্প’ ক্রয়ের জন্য আন্তর্জাতিক দরপত্র আহ্বান করে বাংলাদেশ বিদু্যুৎ উন্নয়ন বোর্ডের (পিডিবি) ক্রয় দফতর।

কিন্তু দরপত্র মূল্যায়ন কমিটি এমনভাবে শর্ত আরোপ করে দেয়, যাতে পাওয়ারটেক ইন্টারন্যাশনাল নামে একটি প্রতিষ্ঠান ছাড়া অন্য কোনো ঠিকাদার এ কাজে অংশ নিতে না পারে। এ বিষয়ে গত বছর দুদকে অভিযোগ জমা পড়ে। এরপরই অনুসন্ধানে নামেন দুদকের সহকারী পরিচালক মামুনুর রশীদ।

দুদক সূত্র জানায়, ‘জিটি মেইন লুব অয়েল পাম্প উইথ এসি, ইমার্জেন্সি লুব অয়েল পাম্প উইথ ডিসি মোটর’ ক্রয়ের জন্য ঠিকাদার প্রতিষ্ঠান পাওয়ার টেকের সঙ্গে চুক্তি সম্পন্ন করে পিডিবি। পাম্প দুটির মূল্য ধরা হয় ৩ লাখ ৬৫ হাজার মার্কিন ডলার, যা বাংলাদেশি মুদ্রায় প্রায় তিন কোটি টাকা। চুক্তি অনুযায়ী এ প্রকল্পের মোটরপাম্পসহ যন্ত্রাংশের ঠিকাদার জার্মানের সিমেন্স থেকে সরবরাহ করেছে।

কিন্তু দুদকের অনুসন্ধানে বেরিয়ে আসে সরবরাহকারী ঠিকাদার প্রতিষ্ঠানটি ২০১৮ ও ২০১৯ সালে রাজধানী ঢাকার শ্যামলী শাখার ইসলামী ব্যাংকে এলসির মাধ্যমে ভারতে টাকা পাঠায় ৩০ হাজার ১৭ মার্কিন ডলার, যা বাংলাদেশের মুদ্রায় প্রায় ২৫ লাখ টাকা। জার্মানির সিমেন্স থেকে পাম্পগুলো সরবরাহ করার কথা থাকলেও তা করা হয়েছে পার্শ্ববর্তী দেশ ভারত থেকে।

 


শর্টলিংকঃ