- ইউনিভার্সাল ২৪ নিউজ - https://universal24news.com -

৪৭ বছর ধরে বাঁশের সাঁকোয় পারাপার শিবগঞ্জের ৪০ হাজার মানুষের


নিজস্ব প্রতিবেদক:

চাঁপাইনবাবগঞ্জের শিবগঞ্জ উপজেলার মোবারকপুরের প্রায় ৪০ হাজার মানুষের একটি দাঁড়া পারাপারের এক মাত্র ভরসা বাঁশের সাঁকো। সাঁকোটি প্রায় ৪৭বছর আগে স্থানীয়রা নির্মাণ করেন। এর পর হতে নষ্ট হলে আবারও চাঁদা তুলে নিজ উদ্যোগে নির্মাণ করতে হয় স্থানীয়দের। স্থানীয় বাসিন্দাদের অভিযোগ বিগত এমপি ও সংশ্লিষ্ট একাধীকবার জানিয়ে কোন কাজ হয়নি। এনিয়ে ক্ষোভ আর হতাসা দানা বেঁধেছে সাঁকো পারাপারকারিদের মধ্যে।

সরজমিনে গিয়ে দেখা গেছে,শিবগঞ্জ উপজেলাধীন মোবারকপুর ইউনিয়নের শংকর মাদিয়া গ্রামের মধ্যে চালের ডালার উপর বাঁশের সাঁকোটির উপর দিয়ে মানুষ অতি কষ্টে পারাপার হচ্ছে। সাঁকোটির দীর্ঘ প্রায় সাড়ে ৩শ ফিট ও প্রস্তু প্রায় সাড়ে ৩ ফিট।

ওই সাঁকো দিয়ে উপজেলার মোবারকপুর, কানসাট ও চককীর্তি ইউনিয়নের শংকর মাদিয়া, চাতরা,শিবনগর, ত্রিমোহনী,গোয়াবাড়ি চাঁদপুর,রানীবাড়ি, সাহেবগ্রাম, কৃষ্ণচন্দ্রপুর,বরগুনাসহ ১২-১৩টি গ্রামের প্রায় ৪০ হাজার মানুষ প্রতিদিন যাতায়াত করে থাকেন।

শংকরমাদিয়া গ্রামের মৃত মোকসেদের ছেলে আবদুর রশিদ জানান,দেশ স্বাধীনের পর ১৯৭২-৭৩সালের দিকে দাঁড়াটিতে কয়েকটি বাঁশের খুঁটি পুঁতে পানির উপরে ও খুঁটির মাঝামাঝিতে ২/৩টি বাঁশ পাশাপাশি বেঁধে ও তার খানিকটা উপরে বাঁশ বেঁধে রাখা হত। উপরের বাঁশটি ধরে ও নীচের ২/৩টি বাঁশের উপর দিয়ে অতি কষ্টে হেঁটে মানুষ পার হত ।

সাবেক ইউপি সদস্য আবদুল আলিম জানান, স্বাধীনের কয়েক বছর পর থেকে এলাকার বিভিন্ন গ্রামের গণ্যমান্য ব্যক্তিদের উদ্যোগে চাঁদা তুলে প্রতি বছরই দেড় লাখ টাকার বাঁশ কিনে নিজ শ্রমে বাঁশের সাঁকোটি তৈরী করা হয়।

তারা আরও জানান,বন্যার সময় এ সাঁকোটির উপর দিয়ে পারাপার হওয়া খুবই কষ্টকর ও ভয়ঙ্কর হয়ে পড়ে। বিশেষ করে বেশি আতঙ্কে থাকতে হয় বিদ্যালয়গামী শিশুদের নিয়ে।

শংকর মাদিয়া গ্রামের মৃত শুকন আলির ছেলে রমজান আলি (৯৫) বলেন, অনেক নেতাই প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন।কিন্তু কেও একটি ব্রীজ নির্মাণের উদ্যোগ নেয়নি। যদি শেষ বয়সে ব্রীজটি দেখে যেতে পারতাম-তবে নিজেকে ধন্য মনে করতাম। তাঁর দাবি- সাঁকোটির দক্ষিনের গ্রামে অনেক আপণ জন থাকলেও সাঁকোর উপর যেতে না পারায় তাদের সাথে দেখা করতে পারি না।

মোবারকপুর ইউপি চেয়ারম্যান তোহিদুর রহমান মিঞা বলেন, ব্রীজে নির্মাণের জন্য আগামী উপজেলা উন্নয়ন কমিটির সভায় বিষয়টি তুলে ধরবো। শিবগঞ্জ উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন অফিসার আরিফুল ইসলাম,সাঁকো সম্পর্কে আমার জানা নেই।তবে এখন জানলাম,সরাসরি দেখে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিব।

এ ব্যাপারে জানতে চাইলে ৪৩ চাঁপাইনবাবগঞ্জ ১(শিবগঞ্জ) আসনের সংসদ সদস্য ডা:সামিল উদ্দিন আহমেদ শিমুল বলেন,বর্তমান সরকারের আমলে শিবগঞ্জ উপজেলায় নদী বা দাঁড়ার উপর কোন বাঁশের সাঁকো থাকবে না। পর্যায়ক্রমে সবগুলোতে ব্রীজ ও কালভার্ট নির্মাণের মাধ্যমে যাতায়াত ব্যবস্থাকে অধিকতর উন্নত করা হবে।