গাড়ির চাকা বার্স্ট হলেও বলে আইএস করেছে: হাছান মাহমুদ


ঢাকার সায়েন্স ল্যাবরেটরিতে পুলিশের ওপর হাতবোমা হামলার ঘটনায় মধ্যপ্রাচ্যভিত্তিক জঙ্গি গোষ্ঠী আইএসের জড়িত থাকার বিষয়টি উড়িয়ে দিয়েছেন তথ্যমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ।


তিনি বলেন, ‘বাংলাদেশে আইএস নেই। গাড়ির চাকা বার্স্ট হলেও বলে আইএস করেছে। আবার ককটেল বিস্ফোরণ হলেও বলে আইএস করেছে। কারা যে এগুলো ছড়ায় আমরা জানি না।’

স্থানীয় সরকারমন্ত্রী তাজুল ইসলাম শনিবার রাতে ধানমণ্ডিতে যাওয়ার পথে তার গাড়িবহর সায়েন্স ল্যাবরেটরি মোড় পেরিয়ে সিটি কলেজের সামনের রাস্তায় ঢোকার আগে পুলিশ বক্সের সামনে হাতবোমার বিস্ফোরণ ঘটে। তাতে মন্ত্রীর নিরাপত্তায় নিয়োজিত একজনসহ দুজন পুলিশ সদস্য আহত হন।

এরপর শনিবার যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক সাইট ইন্টেলিজেন্স গ্রুপ খবর দেয়, মধ্যপ্রাচ্যভিত্তিক জঙ্গি দল আইএস ওই হামলার দায় স্বীকার করেছে।

রোববার দুপুরে সাংবাদিকরা এ বিষয়ে তথ্যমন্ত্রীর দৃষ্টি আকর্ষণ করলে তিনি বলেন, ‘আমরা জঙ্গি অবদমন করতে পেরেছি, কিন্তু জঙ্গি পুরোপুরি নির্মূল হয়নি। আগস্ট মাসের শেষ দিনে জঙ্গিরা একটি বোমা ফুটিয়ে জানান দেয়ার চেষ্টা করেছে যে তারা এখনো নির্মূল হয়নি। আমরা জাতিকে সঙ্গে নিয়ে তাদের নির্মূল করার জন্য বদ্ধপরিকর।’

বিএনপির ৪১তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীতে তাদেরকে জঙ্গিআশ্রয়ী রাজনীতি পরিহার করে জনমুখিতার পরামর্শ দিয়ে আওয়ামী লীগের প্রচার সম্পাদক ড. হাছান মাহমুদ বলেন, ‘বিরোধীদল হিসেবে গত সাড়ে দশবছরে বিএনপি যেভাবে জঙ্গিনির্ভর ও সন্ত্রাসাশ্রয়ী রাজনীতি করেছে, সেটি দেশের রাজনীতির জন্য অত্যন্ত দুঃখজনক।

গণমানুষের জন্য যারা রাজনীতি করে, কোনোভাবেই তাদের এধরনের বিধ্বংসী পথের আশ্রয় নেয়া উচিত নয়। আমি বলবো, বিএনপি যাতে ভবিষ্যতে জঙ্গিনির্ভর ও সন্ত্রাসাশ্রয়ী এবং দোষারোপ করার অপরাজনীতি পরিহার করে মানুষের কাছাকাছি যেতে সুস্থ রাজনীতিতে ফিরে আসে।’

মন্ত্রী বলেন, ৪১তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীতে বিএনপিকে অভিনন্দন। তবে বিএনপির জন্ম হয়েছে অবৈধভাবে ক্ষমতা দখলকারী জিয়াউর রহমানের হাতে। জিয়া অস্ত্রের মাধ্যমে ক্ষমতা দখল করে ক্ষমতার উচ্ছিষ্ট বিলিয়ে অন্যদল থেকে দলছুট হয়ে উচ্ছিষ্ট গ্রহণকারী অধিকাংশ নেতাদের নিয়ে দল গঠন করেছেন। এরই নাম বিএনপি।

বেগম জিয়ার নেতৃত্বেও বিএনপি দেশকে সুশাসন দিতে পারেনি। দুর্নীতি-দুঃশাসনই শুধু নয়, বিএনপির দশবছরে দেশ জঙ্গিদের অভয়ারণ্যে পরিণত হয়েছিল। হাওয়া ভবন তৈরি করে সেখানে সমান্তরাল সরকার পরিচালনা করা হচ্ছিল। তাদের নেতৃত্বে দেশ লজ্জাস্করভাবে পরপর পাঁচ বার দুর্নীতিতে চ্যাম্পিয়ন হয়েছে। অগ্রগতির চাকা একই জায়গায় ঘুরপাক খেয়ে পরিণত হয়েছিল ঘুর্ণায়মান চাকায়।

বিএনপিকে পেছনে ফিরে তাকানোর অনুরোধ জানিয়ে তথ্যমন্ত্রী বলেন, ‘বিএনপির আমলে প্রকাশ্য দিবালোকে জনসভায় হামলা চালিয়ে সংসদ সদস্য শাহ এএমএস কিবরিয়া ও আহসানউল্লাহ মাস্টারকে হত্যা করা হয়েছিল। বিএনপি ক্ষমতায় থাকাকালে আওয়ামী লীগকে সমাবেশের অনুমতিও দিত না।

২১ আগস্ট সমাবেশের অনুমতি দিয়েছিল মধ্যরাতে। যাতে আমরা মঞ্চ বানাতে না পারি। সে কারণে আমরা ট্রাকের ওপর সমাবেশ করেছিলাম। তারা আমাদের প্রার্থিত মুক্তমঞ্চে না দিয়ে বঙ্গবন্ধু এভিনিউয়ে এমন জায়গায় আমাদের সমাবেশের অনুমতি দিয়েছিল যাতে ভবন থেকে গ্রেনেড ছোড়া যায়।’

গাড়িচাপায় পা হারানো কৃষ্ণা রানী প্রসঙ্গে মন্ত্রী বলেন, ‘পথচারী কৃষ্ণা রাণীর ওপর গাড়ি তুলে দেয়া অত্যন্ত মর্মান্তিক। আমি গাড়ির মালিক ও চালকদের সমিতিকে বলবো, প্রশিক্ষিত চালক ছাড়া যাতে কোনও হেলপার গাড়ি না চালান, তা নিশ্চিত করতে। যারা এই দুর্ঘটনাটি ঘটিয়েছে তাদের বিচার হোক, সেটি আমি চাই।’


শর্টলিংকঃ