বিস্ময়ে ভরা আধুনিক সব যুদ্ধ বিমান


বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি ডেস্ক:

যুদ্ধবিমান শব্দটি মূলত প্রথম বিশ্বযুদ্ধের সময় থেকে প্রচলিত। ১৯০৬ সালে বিমান আবিষ্কারের পর থেকে যুদ্ধবিমান নিয়ে ব্যাপক গবেষণা চলতে থাকে । পরবর্তীতে বিমানকে যুদ্ধক্ষেত্রে ব্যবহার করা শুরু হয় ।

প্রথম বিশ্বযুদ্ধ চলাকালীন সময়ে মূলত কাঠের ফ্রেমে তৈরী বিমান ব্যবহার করা হত । দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সময়ে যে সব যুদ্ধবিমান ব্যবহার করা হত, সেগুলো মূলত লোহার ফ্রেমে তৈরী । এদের বেগ সর্বোচ্চ ৪০০ কিলোমিটার প্রতি ঘন্টা ।প্রথমে এক ইঞ্জিনের বিমান দেখা গেলেও পরবর্তীতে দুই ইঞ্জিনচালিত বিমান এর প্রচলন ঘটে । যুদ্ধ বিমানে টার্বোজেট এর ব্যবহার এবং নতুন প্রযুক্তি (যেমন রাডার) এর ব্যবহার এবং এ সংক্রান্ত গবেষণা যুদ্ধবিমানকে বর্তমান পর্যায়ে নিয়ে এসেছে।

 

ড্যাসল্ট মিরাজ ২০০০

ড্যাসল্ট মিরাজ ২০০০
এটি ফ্রেঞ্চ এয়ার ফোর্স (আর্মি দে এল’এর) মিরেজ ফোর্থ জেনারেশন কে প্রতিস্থাপন করার জন্য ১৯৭০ এর দশকের শেষ দিকে ডিজাইন করা হয়েছিল। ১০ মার্চ ১৯৭৮-এ প্রথম বার আকাশের বুকে উড়ানো হয়েছিল এই যুদ্ধ বিমানটিকে। এই উন্নতমানের যুদ্ধবিমানটি একসঙ্গে ৬০০টি নির্মাণ করা হয়েছিল এবং বর্তমানে ভারত সহ আরও আটটি দেশের কাছে রয়েছে এই মিরাজ ২০০০।

ড্যাসল্ট রাফাল

ড্যাসল্ট রাফাল
এই যুদ্ধবিমানটি বানিয়েছে ফ্রান্সের সংস্থা দাসো অ্যাভিয়েশন। লাইট কমব্যাট এই যুদ্ধবিমানে রয়েছে প্রায় সমস্ত রকমের অত্যাধুনিক প্রযুক্তি। ফ্লাই বাই ওয়্যার ফ্লাইট কনট্রোল সিস্টেম, অ্যাডভান্স ডিজিটাল ককপিট, মাল্টিমোড ব়্যাডার, ইন্ট্রিগ্রেটেড ডিজিটাল অ্যাভিওনিস সিস্টেম, ফ্ল্যাট রেটেড ইঞ্জিন। ১৯৯১ সালের ১৯ মে প্রথম উড়ানো হয়েছিল এই যুদ্ধ বিমানটিকে । প্রাথমিক ভাবে এর ব্যবহার হত ফ্রান্স এয়ারফোর্স, ফ্রান্স নেভি এবং ইজিপ্সিয়ান এয়ারফোর্স-এ।

এলসিএ তেজস

এলসিএ তেজস
ভারতের এই লাইট কমব্যাট এয়ারক্রাফটে রয়েছে প্রায় সমস্ত রকমের অত্যাধুনিক প্রযুক্তি। ফ্লাই বাই ওয়্যার ফ্লাইট কনট্রোল সিস্টেম, অ্যাডভান্স ডিজিটাল ককপিট, মাল্টিমোড ব়্যাডার, ইন্ট্রিগ্রেটেড ডিজিটাল অ্যাভিওনিস সিস্টেম, ফ্ল্যাট রেটেড ইঞ্জিন। এছাড়া তেজসে রয়েছে নাইট ভিসন কমপ্যাটিব্যাল গ্লাস ককপিট। তেজসের নির্মাতা ব্যাঙ্গালোরের সংস্থা এয়ারক্রাফটের নির্মাতা অ্যাডভান্স সিস্টেম ইন্ট্রিগ্রেশন অ্যাণ্ড এভালিউশন অর্গানাইজেশন (এএসআইইও) । সংস্থার পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, তেজসে রয়েছে ব়্যাডার ওয়ার্নার রিসিভার, জ্যামার, লেজার ওয়ার্নার, মিশাইল অ্যাপ্রোচ ওয়ার্নার ।

মিকোয়ান গুরভিচ মিগ ২১

মিকোয়ান গুরভিচ মিগ ২১
মিগ ২১ যুদ্ধবিমানটি মিকোয়ান ডিজাইন ব্যুরো মিগ ২১ বিমানের নকশা ন্যাটো কোডনেম ফিসবেড থেকে তৈরি। মিগ ২১-এর জন্ম হয় সোভিয়েত ইউনিয়নে। এটি ইতিহাসে সর্বাধিক নির্মিত ফাইটার জেট। এটি মালালাইকা নামে অধিক পরিচিত ছিল। এর আগের জেনারেশনটি ছিল মিগ ১৯, যা ছিল মূলত গ্রাউন্ড অ্যাটাক ফাইটার। ১৯৪৮-৪৯ সালে সোভিয়েতরা মিগ-১৭, মিগ-১৯ এবং সুখোই-৭ এর সমন্বয়ে একটা সুপারসনিক ফাইটার বিমান তৈরি হয়। সর্বোচ্চ ৩৫০০ কেজি ওজনের অস্ত্র ৪ টি এন্টি-এয়ারক্রাফট মিসাইল রয়েছে এতে। আধুনিক এই যুদ্ধ বিমানের স্পিড হল ঘন্টায় ২,৩৫০ কিলোমিটার।

মিকোয়ান মিগ ২৭

মিকোয়ান মিগ ২৭
এটি একটি গ্রাউন্ড অ্যাটাক যুদ্ধবিমান, যা মূলত সোভিয়েত ইউনিয়নে মিকোয়ান-গুয়েরভিচ নকশা ব্যুরোর দ্বারা নির্মিত এবং পরে লাইসেন্স- ভারতবর্ষে হিন্দুস্তান অ্যারোনটিক্স দ্বারা বাহাদুর (“ভ্যালিয়েন্ট”) হিসাবে তৈরী করা হয়। ভারতে কার্গিল যুদ্ধের সময় ১৯৯৯ সালে প্রথমবার মিগ ২৭ এবং মিগ ২১ ব্যবহার করা হয়। আধুনিক এই যুদ্ধ বিমানের স্পিড হল ঘন্টায় ১৮৮৫ কিলোমিটার। সোভিয়েত ইউনিয়নের পক্ষ থেকে ১৯৭৫ সালে ২০আগষ্ট প্রথম উড়ান হয়েছিল এই ফাইটার জেট ।

পড়তে পারেন…জেনে নিন : গ্যাস সিলিন্ডার ব্যবহারে সতর্কতা


শর্টলিংকঃ