পড়ে থেকেই নষ্ট সরকারি দু’টি ছাত্রাবাসের আসবাব


নিজস্ব প্রতিবেদক : 

ছাত্রলীগ ও ছাত্রমৈত্রীর মধ্যে সংঘর্ষের পর বন্ধ করা হয় রাজশাহী পলিটেকনিক ইনস্টিটিউটের ছাত্রাবাস দু’টি। এরই মধ্যে ১০ বছর পার। কিন্তু এখন পর্যন্ত খোলা হয় নি।দীর্ঘদিন ধরে বন্ধ থাকায় নষ্ট হয়ে গেছে আসবাবপত্র ও বৈদ্যুতিক সংযোগ। এতে করে শিক্ষার্থীরা চরম দুর্ভোগের শিকার হচ্ছেন। তবে সংস্কার করতে ৩৫লাখ টাকা বরাদ্দ হয়েছে। চলতি বছরের শেষদিকে ছাত্রাবাস দু’টি চালু হতে পারে। 

ঝোঁপঝাড়ে ঢাকা পড়েছে শাহ্ নেয়ামতুল্লাহ ছাত্রাবাস

জানা গেছে, ২০১০ সালের ৭ জানুয়ারি ছাত্রমৈত্রীর পলিটেকনিক শাখার সহ-সভাপতি রেজওয়ানুল ইসলাম চৌধুরী ওরফে সানিকে কুপিয়ে জখম করেন ছাত্রলীগের নেতা-কর্মীরা। ওই দিন বিকেলেই হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তিনি মারা যান। এ হামলায় আরও কয়েকজন ছাত্র মৈত্রীর নেতা গুরুতর আহত হন। ওই দিনই কর্তৃপক্ষ অনির্দিষ্টকালের জন্য পলিটেকনিক ক্যাম্পাস বন্ধ ঘোষণা করেন এবং শিক্ষার্থীদের ছাত্রাবাস ত্যাগের নির্দেশ দেন। এর প্রায় সাড়ে চার মাস পর ২০১০ সালের ২৬ মে ক্যাম্পাস খুলে দেওয়া হলেও আর ছাত্রাবাস খুলে দেওয়া হয়নি। এখনো সেই অবস্থা চলছে।

শুনশান নীরবতায় শহীদ মোনায়েম ছাত্রাবাস

রাজশাহী পলিটেকনিক ইনস্টিটিউটের ক্যাম্পাসে তিনটি ছাত্রাবাস রয়েছে। এগুলো হচ্ছে শাহ্ নেয়ামতুল্লাহ (রহ.) ছাত্রাবাস, শহীদ মোনায়েম ছাত্রাবাস ও আক্তারুন্নেসা ছাত্রীনিবাস। তিনটি ছাত্রাবাসে প্রায় ২৫০ শিক্ষার্থীর আবাসন ব্যবস্থা ছিল। ছাত্রাবাস খোলা থাকা অবস্থায় এই এলাকা শিক্ষার্থীদের পদচারণে মুখর থাকত। কিন্তু এখন সেখানে ভুতুড়ে পরিবেশ। চারদিকে সুনসান নীরবতা। যাতায়াতের রাস্তাগুলো ঝোপঝাড়ে ভরে গেছে। দেয়াল থেকে পলেস্তারা খসে পড়েছে। ছাত্রাবাসের বারান্দার গ্রিল বেয়ে উঠেছে লতাপাতা। গেটের তালায় মরিচা ধরেছে।

পলিটেকনিক ইনস্টিটিউটে গিয়ে কথা হয় পাওয়ার টেকনোলজি বিভাগের কয়েক শিক্ষার্থীর সঙ্গে।  তারা বলেন,  বাইরের মেসে এক-দেড় হাজার টাকা ভাড়া দিয়ে একটি ছোট্ট কক্ষে কয়েকজন গাদাগাদি করে থাকতে হয়। অথচ ১০বছর ধরে পড়ে আছে ছাত্রাবাস দুু’টি। মেয়েদের ছাত্রীনিবাস চালু হলেও ছেলেদের দুটি এখনো বন্ধ। খুলে দেওয়ার জন্য আন্দোলন হচ্ছে, কিন্তু মেরামত না করলে সেখানে ওঠার পরিবেশও নেই।

রাজশাহী পলিটেকনিক ইনস্টিটিউটের প্রধান ফটক

এ বিষয়ে পলিটেকনিক ইনস্টিটিউটের অধ্যক্ষ প্রকৌশলী ফরিদ উদ্দীন আহম্মেদ ইউনিভার্সাল২৪নিউজকে বলেন, ছাত্রাবাসগুলো দীর্ঘদিন পড়ে থাকায় ফার্নিচার ও বৈদ্যুতিক লাইনসহ অনেক কিছু নষ্ট হয়ে গেছে। অনেক কক্ষের জানালা-দরজা, গ্রিল নেই। এগুলো সংস্কার করতে ৩৫লাখ টাকা বরাদ্দ হয়েছে। টেন্ডারও হয়েছে। শিগগিরই কার্যাদেশ দেয়া হবে। ঠিকঠাক মতো সংস্কারকাজ শেষ হশেষ হলে চলতি বছরের শেষদিকে ছাত্রাবাস দুটি খুলে দেয়া হবে।


শর্টলিংকঃ