Site icon ইউনিভার্সাল ২৪ নিউজ

করোনার অবসরে শখের ঘুড়ি ওড়ানো


এমএ আমিন রিংকু :

শৈশবে ঘুড়ি ওড়ানোর সুখস্মৃতি নেই এমন মানুষ খুঁজে পাওয়া দুষ্কর। বিশেষ গ্রাম বা মফস্বল শহরে যারা বেড়ে উঠেছেন, ঘুড়ির সঙ্গে তাদের পরিচিতিটা অন্যরকমেরই। তবে এখন স্মার্ট ফোন সহজলভ্য হওয়ার পর  আকাশে তেমন দেখা মেলে না ঘুড়ির।  করোনার অবসরে এবার ছাদে ছাদে ঘুড়ি ওড়ানোর দৃশ্য মন কেড়েছে সবার।

ঘুড়ি উড়ানো যখন কয়েকটি ঘুড়ি উৎসবের মধ্যে সীমাবদ্ধ হয়ে পড়েছিল। ঠিক সেই সময়ে আকাশে ঘুড়ির প্রাচুর্য দেখে স্মৃতিকাতর হয়ে পড়েছেন অনেকেই। কেউ নিছক সময় কাটাতে আবার কেউবা শৈশবের স্মৃতিতে ফেরার উপলক্ষ মনে করছেন ঘুড়িকে।

রাজশাহী মহানগরীর বিভিন্ন এলাকায় বিকেল হলেই এমন দৃশ্য চোখে পড়ছে প্রতিদিন। কারও বাবার অফিস বন্ধ আর কারও মায়ের। যে বাচ্চাগুলোর স্কুল বাসা আর কোচিং এর চক্করে খেলার সময় মিলত না, তারাও এখন ঘটা করে ঘুড়ি উড়াতে পারছেন পরিবারের সাথে।

জানতে চাইলে একটি বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের প্রধান নির্বাহী হাসান ফেরদৌস বলেন, আমরা দুজনেই কর্মজীবী। আশেপাশে ঘুড়ি উড়তে দেখে বাচ্চাদের আবদারে ঘুড়ি নিয়ে এসেছি। আগে এভাবে সময় হয়ে উঠত না।ঘুড়ি উড়ানোর এই অনুভিতিটা আসাধারণ। মনে হচ্ছে শৈশবের দিনগুলোতে ফিরে গেছি।

হুট করে ঘুড়ির এমন প্রচলনে লাটাই আর ঘুড়ি বানাতে ব্যাস্ত সময় কাটাচ্ছেন বেত পট্টির কারিগরেরা। লকডাউনে বেচাকেনা নেই বেতের আসবাবের তবে সেই ঘাটতি কিছুটা হলেও কাটছে লাটাই আর ঘুড়ির বেচাকেনায়।

আশেপাশের ভিন্ন পণ্যের কিছু দোকানিও বাড়তি চাহিদার যোগান দেওয়ার জন্য শুরু করেছেন লাটাই আর ঘুড়ির ব্যাবসা। উদ্যশ্য বন্ধের ক্ষতি পুষিয়ে নেওয়া।রাজশাহীর হোসেনিগঞ্জ বেতপট্টির দোকানী মতিন আলী বলেন, লাকডাউন শুরুর পর থেকে আমাদের বিক্রি বেড়েছে। আগে মাসে ১/২ টা লাটাই বিক্রি হত আর এখন দিনে ৮/১০ টা লাটাই বিক্রি করছি।

অনেকে ঘরে বানানোর চেষ্টা করলেও কাংখিত মানের না হওয়ায় আসতে হচ্ছে পেশাদার এসব কারিগরদের কাছেই। নানা সাইজ আর ধাঁচের লাটাই মিলছে দুইশ থেকে তিনশ টাকার মধ্যে। আর সাইজ ও ডিজাইন ভেদে ঘুড়ি মিলছে ১০ থেকে ২০০টাকার মধ্যে।

অনেকের কাছে দামটা একটু বেশি মনে হলেও কেহই ফিরছেন না খালি হাতে। কেহ আসছেন নিজের জন্য কিনতে আবার কেহ আসছেন প্রিয়জনের আবদার মেটাতে। তবে সব শেষে একটা ঘুড়ি ক্রেতার সাথে যাচ্ছে স্বপ্ন হয়ে। কেহ হয়ত এ ঘুড়িতে খুজবে নিজের হারানো অতীত আর কেহ হয়ত তৈরি করবে আগামীর স্মৃতি।


Exit mobile version