Site icon ইউনিভার্সাল ২৪ নিউজ

করোনার প্রভাব রাজশাহীতে আমচাষীদের মাথায় হাত


আবু হাসাদ,পুঠিয়া :

রাজশাহী অঞ্চলে আটি জাতীয় আম পাকতে হাতেগোনা আর মাত্র কয়েকদিন বাকি। কিন্তু এবার দেশে করোনাভাইরাসের প্রভাব আমের উপর পড়ার আশঙ্কা করছেন সংশ্লিষ্ঠরা। এর প্রভাব দেখা যাচ্ছে আম কেনা-বেচার জন্য আড়ৎগুলোতে।

যেখানে সার্বক্ষনিক কর্মযজ্ঞ চলতো সেখানে এখনো পর্যন্ত কোনো প্রকার প্রস্তুতিই শুরু করা হয়নি। প্রশাসনের পক্ষ থেকে আম পাড়ার জন্য এখনো পর্যন্ত দেয়া হয়নি নির্দিষ্ট কোনো দিনক্ষণ। সর্বত্রই এখন অজানা আতঙ্ক বিরাজ করছে। স্থানীয় আমচাষি ও ব্যবসায়িরা বলছেন বর্তমান প্রেক্ষাপটের কোনো পরিবর্তন না হলে এ বছর ব্যাপক লোকসান গুনতে হবে।

জেলার সর্ববৃহৎ আমের আড়ৎ বানেশ্বর হাটের ব্যবসায়িদের তথ্যমতে জানা গেছে, গত বছরও মে মাসের শুরুতেই জেলা প্রশাসক আম বাগান মালিক ও ব্যবসায়ীদের নিয়ে একটি আলোচনা সভার আয়োজন করেন। সভায় আম ক্রয়-বিক্রয়ে কয়েকটি ধাপে নির্দিষ্ট সময় নির্ধারন করে দেন। এতে আমের প্রকার ভেদে ৬টি ধাপে আম কেনা-বেচা করতে বলা হয়। সে নির্দেশনা মোতাবেক গত বছর ১৫ মে থেকে গুটি জাতীয় আম পাড়া ও কেনা বেচা শুরু করা হয়। তবে চলতি বছর করোনাভাইরাস প্রভাব বিস্তার করায় প্রশাসনের পক্ষ থেকে এখনো পর্যন্ত আম পাড়ার কোনো দিকনিদের্শনা আসেনি।

অপরদিকে আম পাড়ার মৌসুম শুরু হওয়ার প্রায় এক মাস আগেই জেলার সর্ববৃহৎ আড়ৎগুলোতে পরিস্কার পরিচ্ছন্ন ও রক্ষনা-বেক্ষন কাজ শুরু হতো। কিন্তু বর্তমানে লকডাউন থাকায় এই আড়ৎগুলো এখনো পর্যন্ত বন্ধ রয়েছে।

আমচাষি হাবিবুর রহমান বলেন, অনুকূল আবহাওয়া বিরাজ করায় এ বছর সকল আম বাগানে প্রচুর পরিমান আম এসেছে। চাষিদের সময়মত সঠিক পরিচর্যা ও এখনো পর্যন্ত প্রকৃতিক দুর্যোগ না হওয়ায় প্রায় প্রতিটি গাছে আমে পরিপূর্ণ হয়ে আছে। মৌসুমের শুরু থেকে চাষিরা আমের বাম্পার ফলনের আশা করছিল। কিন্তু বর্তমান প্রেক্ষাপটের পরিবর্তন না হলে এবার আমে ব্যাপক লোকসানের হতে পারে।

বানেশ্বর বাজারে আলমগীর হোসেন নামের একজন আড়ৎদার বলেন, আড়তের পাশাপাশি আমরা কয়েকজন ব্যবসায়ি মিলে বাগান থেকে আম কিনে দেশের বিভিন্ন স্থানে চাহিদা মোতাবেক সরবরাহ করি। এ বছরের শুরুতে আমাদের প্রায় ৭৫ বিঘা আমবাগান কেনা আছে। করোনার কারণে এবার আমের বাজার কি হবে বলা মুশকিল।

এ ব্যাপারে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ও নির্বাহী ম্যজিস্ট্রেট ওলিউজ্জামান বলেন, করোনার প্রভাবের কারণে এখনো পর্যন্ত আম পাড়ার বিষয়ে কোনো সিন্ধান্ত হয়নি। তবে অচিরেই স্থানীয় আমচাষি ও ব্যবসায়িদের নিয়ে জেলা পর্যায়ে একটি আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হবে। সেখানে কোন আম কখন পাড়তে হবে সে অনুযায়ী একটি দিক নির্দেশনা ক্রেতা-বিক্রেতাদের দেয়া হবে। এছাড়া অসাধু ব্যবসায়ি ও চাষিরা আমে কোনো প্রকার বিষাক্ত কেমিক্যাল ব্যবহার না করতে পারে সে জন্য আমাদের পক্ষ থেকে সার্বক্ষনিক মনিটরিং থাকবে। এ ছাড়া কোথাও কোনো অনিয়মের খবর পেলে তৎক্ষনিক আইনী ব্যবস্থা নেয়া হবে।

উল্লেখ্য, গত বছর মহামান্য হাইকোট রাজশাহী অঞ্চলের আম বাগান গুলোতে মানব দেহের ক্ষতিকর কোনো প্রকার রাসয়ানিক পদার্থ আমে ব্যবহার না করা হয় সে জন্য বাগানগুলোতে পুলিশ পাহারার নিদের্শনা দিয়ে ছিলেন। এ নিয়ে সংশ্লিষ্ট দপ্তরের কর্মকর্তাগন স্থানীয় আমবাগান গুলোতে সার্বিক অবস্থা ও বাগান মালিকদের নিয়ে আলোচনা করেন। এছাড়া আম বিদেশের বাজারে রপ্তানীর বিষয়ে ফ্রুটব্যাগিং পদ্ধতিরও পরামর্শ দেন। এছাড়া বাগানে মানবদেহের জন্য ক্ষতিকর কোনো প্রকার রাসায়নিক পদার্থ ফরমালিন, কার্বাইড মিশ্রণ থেকে বিরত থাকার জন্য নিদের্শনা দিয়ে ছিলেন।

আরো পড়তে পারেন করোনা ঝুঁকিতে পরিবর্তন হচ্ছে পুলিশের ডিউটিপ্ল্যান


Exit mobile version