দুর্গাপুর প্রতিনিধি:
ভারতের ভেলোর সিএমসি হাসপাতালে চিকিৎসা শেষে হোটেল বন্দী জীবনযাপন করছেন রাজশাহী জেলার দুর্গাপুর উপজেলা সদরের বাসিন্দা সাবেক সেনাকর্মকর্তা মোস্তাফিজুর রহমান রঞ্জু ও তার স্ত্রী সাফিনা পারভীন মুক্তা। এই দম্পতি ছাড়াও সেখানে প্রায় অর্ধশতাধিক বাংলাদেশি আটকে আছেন বলে জানা গেছে।
![সাবেক সেনাকর্মকর্তা মোস্তাফিজুর রহমান রঞ্জু](https://universal24news.com/wp-content/uploads/2020/03/754.jpg)
লকডাউনের কারণে ১০/১৫ দিন ধরে ভেলরের বিভিন্ন আবাসিক হোটেলে আটকে পড়েছেন বাংলাদেশিরা। এরই মধ্যে অনেকের টাকা শেষ হয়ে গেছে। অনেকের শেষের পথে। দ্রুত দেশে ফিরতে না পারলে হোটেলে না খেয়ে থাকতে হবে তাদের। এদিকে, ভারতে আটকে পড়া বাংলাদেশিদের ফিরিয়ে আনতে ব্যবস্থা নেয়া হচ্ছে ফেসবুক স্ট্যাটাসে এমনটিই জানিয়েছেন পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী শাহরিয়ার আলম।
বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর ১৫ বীর ৪৯ বেঙ্গলের অবসরপ্রাপ্ত সার্জেন্ট মোস্তাফিজুর রহমান রঞ্জু অনলাইনে ভিডিও কলের মাধ্যমে এই প্রতিবেদককে জানান, তিনি ও তার স্ত্রী গত ২৩ ফেব্রুয়ারি চিকিৎসা ভিসায় ভারতে যান। ২১ মার্চ চিকিৎসা অপারেশন সহ অন্যান্য চিকিৎসা শেষ হয় তার। পরের দিন ২২ মার্চ ট্রেনের টিকিটও কনফার্ম করেন। কিন্তু ভারতে কারফিউ ও লকডাউনের কারণে ট্রেন চলাচল ও বাইরে সাধারণ মানুষের চলাচল বন্ধ রাখে ভারত সরকার। এ কারনে স্ত্রী সহ হোটেলেই আটকে যান তিনি।
তিনি আরো জানান, দ্রব্যসামগ্রীর উর্ধমূল্যর কারণে তিনি সাথে করে যে টাকা পয়সা নিয়ে গেছিলেন তা প্রায় শেষের পথে। এর মধ্যে দেশে ফিরতে না পারলে হোটেল ভাড়া দিতে গিয়ে স্ত্রী সহ তাকে না খেয়ে থাকতে হবে। তাই দ্রুত দেশে ফিরতে বাংলাদেশ সরকারের সহায়তা চেয়েছেন তিনি।
এদিকে, সাবেক সেনাকর্মকর্তা মোস্তাফিজুর রহমান রঞ্জুর মাধ্যমে ভেলর পুলিশ ফাড়িতে যোগাযোগ করলে ভেলর পুলিশ ফাঁড়ির এক কর্মকর্তা জানান, চিকিৎসা শেষে সেখানে প্রায় অর্ধশত বাংলাদেশী হোটেল বন্দী জীবনযাপন করছেন। লকডাউনের কারণে তারা কেউ বাইরে বের হতে পারছেন না। তবে তাদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে সবরকম ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে ভারতীয় পুলিশ বাহিনীর পক্ষ থেকে।
এদিকে বাংলাদেশ সরকারের পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী শাহরিয়ার আলম ফেসবুক স্ট্যাটাসের মাধ্যমে জানিয়েছেন, ভারতে সব ধরনের যোগাযোগ বন্ধ।
কোয়ারেন্টাইনে থাকলে ঘণ্টায় ঘণ্টায় সেলফি পাঠাতে হবে, সঙ্গে জিপিএস!
আমরা শুনতে পাচ্ছি চিকিৎসা নিতে গিয়ে সেখানে কিছু বাংলাদেশী আটকা পড়েছেন এবং তাদের থাকতে অসুবিধা হচ্ছে। আমাদের দূতাবাস ইতিমধ্যে একটি প্রাথমিক তালিকা প্রস্তুত করেছেন, যারা এখনও জানাননি, আপনাদের অনুরোধ করছি আপনারা একসাথে কতজন, কোথায় আছেন, নাম, বয়স, পাসপোর্ট নম্বর, যোগাযোগের জন্য মোবাইল নম্বর আমাদের দিল্লিতে অবস্থিত দূতাবাসে জানান। আমাদের দিল্লিতে দূতাবাসের টেলিফোন নমর 85955-52494 (অথবা মুম্বাই কন্সুলেট 98331 59930. যারা ইতিমধ্যে জানিয়েছেন তাদের আবার জানানোর প্রয়োজন নেই।
পূর্ণ তালিকা পেলে আমাদের পরবর্তী পদক্ষেপ নিতে সুবিধা হবে। আপনাদেরকে বাংলাদেশে ফিরিয়ে আনতে না পারা পর্যন্ত অন্তত আমরা চেস্টা করবো স্থানীয় কর্তৃপক্ষ যেন আপনাদের চাহিদার বিষয়গুলো দেখভাল করেন। আর যারা ফিরে আসতে চান তাদেরকে আশকোনা হাজি ক্যাম্পে এবং যারা চিকিৎসাধীন তারা কুর্মিটোলা বা অন্য হাসপাতালে ১৪ দিন কোয়ারেন্টাইনে থাকার সম্মতি দিতে হবে।