রাইসির মৃত্যু দুর্ঘটনা নাকি হত্যাকাণ্ড: ইসরায়েল কী জড়িত?


ইউএনভি ডেস্ক:

ইরানের প্রেসিডেন্ট ইব্রাহিম রাইসি হেলিকপ্টার বিধ্বস্ত হয়ে মারা গেছেন। ইরান কর্তৃপক্ষ এটাকে প্রাথমিকভাবে দুর্ঘটনা বলেই দাবি করছে। উদ্ধারকারীদের দেয়া তথ্যের বরাতে ইরান জানিয়েছে, আপাতত নাশকতার কোনো হদিস পাওয়া যায়নি। বিশদ তদন্তের পরই হয়তো রাইসির মৃত্যু রহস্য পরিষ্কার হবে। অবশ্য তাতে কয়েক বছরও লেগে যেতে পারে।

তবে এর মধ্যেই রাইসির মৃত্যুকে হত্যাকাণ্ড হিসেবে দাবি করে সোশ্যাল মিডিয়াসহ নানা অনলাইনমাধ্যমে পোস্ট করছেন অনেকে। যদিও সেই দাবির স্বপক্ষে তারা কোনো প্রমাণ হাজির করছেন না।

ইরানের নানা লক্ষ্যবস্তুতে গোপনে হামলা চালানোর নজির ইসরায়েলের আছে। এর আগেও দেশটি সিরিয়ায় ইরানি কনস্যুলেটে হামলা চালিয়ে বেশ কয়েকজন ইরানি শীর্ষ কর্মকর্তাকে হত্যা করেছে। তার জবাবে ইরানও রাইসির নেতৃত্বেই প্রথমবারের মতো ইসরায়েলি ভূখণ্ডে হামলা চালায়। সেই হামলার জবাব ইসরায়েলও দিয়েছিল মৃদুভাবে।
তবে রাইসির মতো গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তি হামলা চালিয়ে ইসরায়েল হত্যা করবে এমনটা অবিশ্বাস্য ঠেকছে আন্তর্জাতিক সম্পর্ক ও বিশ্ব রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের কাছে। কারণ এতে ভয়াবহ রকম পরিণতির ঝুঁকি আছে। আর ইসরায়েলের গোয়েন্দা সংস্থা মোসাদ ইরানি স্বার্থের বিরুদ্ধে কার্যক্রম চালানোর সঙ্গে জড়িত হিসেবে বিবেচিত হলেও অতীতে সংস্থাটি কখনো কোনো রাষ্ট্রপ্রধানকে তাদের লক্ষ্যবস্তু বানায়নি।

এদিকে রয়টার্সের বরাতে বিভিন্ন আন্তর্জাতিক গণমাধ্যম জানাচ্ছে, ইসরায়েলের নাম প্রকাশ না করা এক কর্মকর্তা দাবি করেছেন রাইসির এই ঘটনার সাথে ইসরায়েলের কোনো যোগসূত্র নেই।

ইরানের পারমাণবিক সক্ষমতা বৃদ্ধিতে উল্লেখযোগ্য ভূমিকা পালন করেছিলেন ইব্রাহিম রাইসি। তার নেতৃত্বেই অনেকখানি পোক্ত হয়েছে ইরানি সামরিক শক্তির ভিত্তি।

ইকোনমিস্টের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ‘রাইসির মৃত্যুর পেছনে ইসরায়েলের যুক্ততা নিয়ে সংশয় প্রকাশ করার যথেষ্ট কারণ রয়েছে। কারণ ইসরায়েল কখনো কোনো রাষ্ট্রপ্রধানকে হত্যা করার দিকে যায়নি। এমন কিছু করতে যাওয়া মানে নিশ্চিতভাবেই যুদ্ধ শুরু করা এবং ইরানের তরফে কঠোর অবস্থান নেওয়ার পথ তৈরি করা।’

যদিও দেশটির সরকারি ব্যাখ্যায় এখন পর্যন্ত বৈরি আবহাওয়া পরিস্থিতির কারণে হেলিকপ্টার দুর্ঘটনা ঘটেছে বলে জানানো হচ্ছে। ইরানের রাষ্ট্রায়ত্ত সংবাদমাধ্যম বলছে, ভারী বৃষ্টিপাত আর ঘন কুয়াশার কারণে ফ্লাইটের দৃষ্টিসীমায় ব্যাঘাত ঘটেছে। তবে এই দুর্ঘটনায় শত্রুপক্ষের জড়িত থাকার সম্ভাবনা নিয়েও জল্পনা ছড়িয়েছে। প্রেসিডেন্ট রাইসির মেয়াদ ও ইরানের অভ্যন্তরীণ এবং বাহ্যিক চ্যালেঞ্জের পরিপ্রেক্ষিতে দেশীয় শত্রু, এমনকি ইসরায়েলের মতো বহিরাগত ক্রীড়নকদের সম্ভাব্য জড়িত থাকার বিষয়েও আলাপ উঠেছে।

 

সূত্র: টাইমস অব ইন্ডিয়া, মিডলইস্ট মনিটর


শর্টলিংকঃ