নিজস্ব প্রতিবেদক :
ছবিগুলোর দিকে তাকালে হঠাৎই চোখ আটকে যাবে বিস্ময়ে! এধরনের দৃশ্য আমাদের দেশে খুব একটা পরিচিত নয়। দেখে মনে হবে তুষারপাত। কিন্তু এভাবেই শিলা পড়ায় গেছে রাজশাহীর পুঠিয়া উপজেলার মধুখালি এলাকার সড়ক। এই শিলাবৃষ্টিতে আমের মুকুলসহ কৃষিফসলের ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। রোববার ভোর সাড়ে ৪টার পর রাজশাহীর পুঠিয়াসহ বিভিন্ন এলাকায় এই শিলাবৃষ্টি হয়।

শিলাবৃষ্টির আঘাতে রাজশাহীর গোদাগাড়ী, তানোর, পবা, পুঠিয়া, চারঘাট ও বাঘা উপজেলায় আমের মুকুলের ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। গাছ থেকে প্রচুর পরিমাণে মুকুল ঝরে পড়েছে। তবে আমের মুকুলের ক্ষয়-ক্ষতির পরিমাণ নিরূপণ করা না গেলেও এই ক্ষতি পুষিয়ে ওঠা সম্ভব নয় বলে দাবি করেছেন স্থানীয় আম চাষি ও ব্যবসায়ীরা।
রাজশাহীর পবা উপজেলার কুখণ্ডি এলাকার আম বাগানের মালিক দুরুল হোদা জানান, এবার আমের গাছে গাছে প্রচুর মুকুল এসেছিল। কিন্তু ভোরে শিলাবৃষ্টির আঘাতে আমের মুকুল ঝরে পড়েছে। এতে লোকসান গুণতে হবে।
পুঠিয়া উপজেলার বানেশ্বর এলাকার কৃষক শহিদুল ইসলাম জানান, শিলাবৃষ্টিতে কৃষি ফসলের ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। বিশেষ করে ক্ষেতের পিঁয়াজে মারাত্মক ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।
পুঠিয়া উপজেলার শাহনেওয়াজ জানান, বানেশ্বর, ভালুকগাছি ও জিউপাড়া ইউনিয়নে এভাবেই শিলা পড়েছে। এতে ফলের ব্যাপক ক্ষতি হলো। এভাবে শিলা পড়া আগে কখনো দেখেন নি এলাকাবাসী।

এবিষয়ে রাজশাহী ফল গবেষণা কেন্দ্রের প্রধান বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা ড. আলিম উদ্দিন ইউনিভার্সাল টোয়েন্টিফোরকে জানান, যেভাবে আমের মুকুল ঝরে পড়লো তাতে ফলন কমে যাবে। তারপরও যত মুকুল এখনো আছে শেষ পর্যন্ত আবহাওয়া অনুকূলে থাকলে চাষীরা খুব বেশি লোকসানে পড়বেন না।

রাজশাহী আবহাওয়া অফিসের সিনিয়র পর্যবেক্ষক নজরুল ইসলাম জানান, ভোর ৪টা ৪০ মিনিট থেকে ৫টা ১৮ মিনিট পর্যন্ত এই শিলাবৃষ্টি স্থায়ী ছিল। এসময় বজ্রপাতও হয়েছে। তবে বৃষ্টির সময় ঝড়ো হাওয়া ছিল না। রাজশাহীতে ১৭ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত রেকর্ড করা হয়েছে। আকাশে এখনও মেঘ রয়েছে। তাই আবারও বৃষ্টি হতে পারে।
এদিকে, আবহাওয়া অধিদফতরের পূর্বাভাসে বলা হয়েছে, আগামী ২৪ ঘণ্টায় লঘুচাপের প্রভাবে রাজশাহী, রংপুর, ময়মনসিংহ, ঢাকা, চট্টগ্রাম ও সিলেট বিভাগের কিছু কিছু জায়গায় এবং খুলনা ও বরিশাল বিভাগের দু’এক জায়গায় অস্থায়ী দমকা হাওয়াসহ বৃষ্টি বা বজ্রসহ বৃষ্টি হতে পারে।