আজ পদ্মা সেতু পরিদর্শনে যাচ্ছেন সচিবসহ সংশ্লিষ্টরা


ইউএনভি ডেস্ক:

পদ্মা সেতু রেল সংযোগ প্রকল্পের ত্রুটি সারাতে সংশ্লিষ্টরা তৎপর হয়ে উঠেছেন। আজ প্রকল্প এলাকায় সরেজমিন পরির্দশনে যাচ্ছেন দুই মন্ত্রণালয়ের সচিবসহ সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা।

রেলপথ মন্ত্রণালয় সূত্র জানায়, সরকারের উচ্চপর্যায়ের নির্দেশনায় আজ পদ্মা সেতু এলাকা পরিদর্শনে যাচ্ছেন রেলপথ সচিব সেলিম রেজা, সেতু সচিব বেলায়েত হোসেনসহ সংশ্লিষ্টরা।

তারা প্রকল্পের কর্মকর্তা, প্রকৌশলী ও চীনা ঠিকাদারদের সঙ্গে বৈঠক করবেন। পদ্মা সেতুর দুই প্রান্তে রেললাইনের কারণে ট্রাক, ট্যাংকলরিসহ বেশি উচ্চতার যানবাহনের যাতায়াতে যেন বিঘ্ন না ঘটে, সে বিষয়ে একটি সমাধান খুঁজবেন তারা। তবে নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক বেশ কয়েকজন রেলওয়ে কর্মকর্তা বৃহস্পতিবার জানিয়েছেন, এ সমাধান যদি শুধু রেলওয়ের পক্ষ থেকে করা হয়, তাহলে ক্ষতির পরিমাণ অনেক বাড়বে।

কারণ হিসেবে তারা জানান, পদ্মা সেতু রেল সংযোগ প্রকল্পে ১ হাজার ৬১টি পিলার, পাইলের মধ্যে প্রায় ৬০ শতাংশ সম্পন্ন হয়েছে। ত্রুটি সারাতে হলে ৭ কিলোমিটার উড়াল রেলপথে প্রভাব পড়বে।

এ বিষয়ে রেলওয়ে মহাপরিচালক শামছুজ্জামান বলেন, শুক্রবার (আজ) দুই মন্ত্রণালয়ের সচিব, প্রকল্প পরিচালকসহ সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা পদ্মা সেতু সরেজমিন পরির্দশনে যাবেন।

দিনভর সেখানে ঠিকাদার, প্রকৌশলীদের সঙ্গে বৈঠক করবেন। নিশ্চয়ই একটি সলিউশন বের হবে। আমরা চাচ্ছি কম ক্ষতি হয় এমন ইঞ্জিনিয়ারিং সলিউশন বের করতে। ইতোমধ্যে আমরা বুয়েটের সঙ্গেও আলোচনা করছি।

পদ্মা রেল সংযোগ প্রকল্পের পরিচালক গোলাম ফখরুদ্দিন এ চৌধুরী বলেন, আমরা পদ্মা সেতু সরেজমিন পরিদর্শনে যাচ্ছি। কী করে চলমান রেললাইন ডিজাইনের ত্রুটির সমাধান বের করা যায়- আমরা সব পক্ষের সঙ্গে আলোচনা করব।

এদিকে নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক রেলওয়ের এক কর্মকর্তা জানান, ত্রুটি সমাধানে রেলওয়ের পক্ষ থেকে সেতু বিভাগকে জানানো হয়েছে। এ ত্রুটি বা ভুলের দায় কাউকে না কাউকে নিতেই হবে। ত্রুটি সারাতে হলে চলমান রেল সংযোগ প্রকল্পে ডিজাইন পরিবর্তন করতে হবে।

এজন্য কী পরিমাণ ক্ষতি হবে- এ বিষয়টিও ভাবতে হবে। তাছাড়া ঠিকাদারদের সঙ্গে যে চুক্তি রয়েছে, সেই বিষয়টিও দেখতে হবে। পুরো বিষয়টি নিয়েই সংশ্লিষ্টদের সঙ্গে বৈঠক হবে।

আগামী বছরের ডিসেম্বরে পদ্মা সেতু দিয়ে যান চলাচল শুরু হওয়ার কথা। করোনা ও বন্যার কারণে কাজে কিছুটা ভাটা পড়লেও এখন চলছে পুরোদমে। কিন্তু নতুন করে রেললাইন ডিজাইনে মারাত্মক ‘ত্রুটি’ই পদ্মা সেতু চালুর ক্ষেত্রে এখন বড় বাধা হয়ে দাঁড়িয়েছে।

ডিজাইনের ত্রুটি ধরার পর রেল সংযোগ প্রকল্প কাজে আপত্তি দেয় সেতু কর্তৃপক্ষ। কিন্তু রেলওয়ে কর্মকর্তাদের কেউ কেউ বলছেন, উভয় প্রকল্পের কাজ সমীক্ষা অনুযায়ীই হচ্ছে, যা ২০১৫ সালে মীমাংসিত। সমীক্ষার বাইরে রেলওয়ের সাইডে কোনো প্রকার কাজ হয়নি। সেতু কর্তৃপক্ষ বলছে, সেতুর দুই সড়ক নির্মাণ এক প্রকার সম্পন্ন হয়ে গেছে। এখন সমস্যা দেখা দিয়েছে রেলওয়ের সাইডে।

রেলওয়ে সাইডে যে ত্রুটি দেখা দিয়েছে, সেই ত্রুতির কারণে মূল সেতু দিয়ে উঁচু যানবাহন চলাচল করতে পারবে না। এর দায় সেতু কর্তৃপক্ষ নেবে না। মূল পদ্মা সেতুর ভেতরে ৬ দশমিক ১৫ কিলোমিটার রেললাইন নির্মাণকাজ করছে সেতু কর্তৃপক্ষ। এর ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান চায়না মেজর ব্রিজ ইঞ্জিনিয়ারিং কোম্পানি।


শর্টলিংকঃ