একবিংশ শতাব্দীতে সবচেয়ে বড় শক্তি হলো সৃজনশীলতা-মাহফুজ আনাম


ইবি সংবাদদাতা:

“একবিংশ শতাব্দীতে সবচেয়ে বড় শক্তি হলো সৃজনশীলতা। যাকে বলা যায় আমাদের নতুন করে চিন্তা করার শক্তি। একসময় যে দেশের সম্পদ বেশী ছিল তারা বেশী শক্তিশালী হতো। কিন্তু বর্তমানে যারা যত বেশী সৃজনশীল তারা তারাই বেশী শক্তিশালী।” বুধবার ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ে অনুষ্ঠিত এক সেমিনারে ইংরেজি দৈনিক দি ডেইলি সম্পাদক মাহফুজ আনাম এসব কথা বলেন।

তিনি আরও বলেন, “এই চিন্তা করার শক্তিতে আমাদের সাহায্য করবে লেখক, কবি, সাহিত্যিক ও বিজ্ঞানীরা। আমরা যখন সৃজনশীলতার কথা বলি তখন বলি মুক্ত চিন্তার কথা, স্বাধীন ভাবে মত প্রকাশের কথা। এই স্বাধীনভাবে মত প্রকাশের অধিকারের সাথে আরেকটি দায়িত্ব চলে আসে সেটি হচ্ছে পরমত সহিষ্ণুতা। আমার যেমন স্বাধীনভাবে চিন্তা করার অধিকার আছে তেমনি আমার বন্ধুরও অধিকার আছে স্বাধীনভাবে চিন্তা করার।”

মাহফুজ আনাম বলেন, “আমার স্বাধীন চিন্তার সাথে যদি অন্যের স্বাধীন চিন্তার সাথে সম্পর্ক না থাকে তাহলে আমরা সমাজ গড়তে পারব না। নিজের চিন্তার স্বাধীনতাকেও রক্ষা করতে হবে সেই সাথে অন্যের স্বাধীন চিন্তার অধিকারও রক্ষা কর‍তে হবে।”

বুধবার বেলা সাড়ে ১১ টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের রবীন্দ্র-নজরুল কলা ভবন গ্যালারিতে অনুষ্ঠিত “আবুল মনসুর আহমদের সাহিত্যে সমাজের ধর্মান্ধতা ও শ্রেণীচরিত্র” শীর্ষক সেমিনার সেমিনারে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন। বিশ্ববিদ্যালয়ের বাংলা বিভাগ সেমিনারটর আয়োজন করে।

বিভাগের সভাপতি অধ্যাপক ড. সাইদুর রহমানের সভাপতিত্বে সেমিনারে প্রধান আলোচক ছিলেন বিশিষ্ট লেখক ও প্রাবন্ধিক সৈয়দ আবুল মকসুদ। বিশেষ আলোচক হিসেবে উপস্থিত ছিলেন ইবি’র বাংলা বিভাগের সিনিয়র অধ্যাপক গাজী মো: মাহবুব মুর্শিদ এবং আবুল মনসুর আহমদ স্মৃতি পরিষদের গবেষক ও আহ্বায়ক ইমরান মাহফুজ।

আবুল মনসুরের কনিষ্ঠ পুত্র মাহফুজ আনাম তার পিতা সম্পর্কে বলেন, “আবুল মনসুর আহমদ আজীবন তার আমিত্ববোধ থেকে সমগ্র বিশ্বকে জানার চেষ্টা করেছেন। একই সাথে ধর্মীয়, সাংস্কৃতিক ও হাস্যরসাত্বক এক ব্যক্তিত্ব ছিলেন তিনি। একজন বাঙালী মুসলমান হিসেবে ব্যক্তি আবুল মনসুর ছিলেন আত্মসম্মানবোধী ও গণতন্ত্রে বিশ্বাসী একজন মানুষ।”

উল্লেখ্য,আবুল মনসুর আহমেদ (১৮৯৮-১৮ মার্চ ১৯৭৯) একজন বাংলাদেশী সাহিত্যিক, রাজনীতিবিদ এবং সাংবাদিক। তিনি ছিলেন একাধারে রাজনীতিবিদ, আইনজ্ঞ ও সাংবাদিক এবং বাংলা সাহিত্যের অন্যতম শ্রেষ্ঠ বিদ্রূপাত্মক রচয়িতা। ১৯৪৬-এ অবিভক্ত বাংলার কলকাতা থেকে প্রকাশিত ইত্তেহাদ-এর সম্পাদক এবং তৎকালীন কৃষক ও নবযুগ পত্রিকায়ও কাজ করেন তিনি। আমার দেখা রাজনীতির পঞ্চাশ বছর (১৯৬৯) তার বিখ্যাত আত্মজীবনীমূলক রচনা।


শর্টলিংকঃ