একেক’টি আমগাছ মাত্র ১৬ টাকায় ইজারা দিল বিএমডিএ!


মাহবুব হোসেন, নাটোর:

নাটোর-বনপাড়া মহাসড়কের দু’পাশের ৯১২টি আম গাছ ১৬ টাকা করে লিজ দিয়েছে বিএমডিএ। অথচ অপরিপক্ক যে আম এখন ঠিকাদার গাছ থেকে নামাচ্ছে, তা বাজারে বিক্রি করছে ১৫ টাকা কেজি দরে। এ পর্যন্ত গাছগুলো থেকে প্রায় সাড়ে ৩ হাজার কেজি আম পেড়ে বিক্রি করা হয়েছে। এখনও গাছে প্রচুর আম দেখা যাচ্ছে। 

প্রতিটি গাছের আম মাত্র ১৬ টাকা। অনেকে হয়তো অবাক হয়ে ভাবতে পারেন ১৬ টাকা কেজি! কিন্তু তা নয়, পুরো গাছের আম বিক্রি করা হয়েছে মাত্র ১৬ টাকায়।

একটি, দু’টি নয়; ৯১২টি ফলবান আমগাছ ১৬টা করে ইজারা দিয়েছে বরেন্দ্র বহুমুখি উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ (বিএমডিএ)। আগামী তিন বছর এই হিসেবে গাছগুলো ইজারা চুক্তি করা হয়েছে।

বিএমডিএ সূত্র জানায়, পুষ্টির চাহিদা পূরন এবং পরিবেশের ভারসাম্য রক্ষায় ২০০৭-০৮ অর্থ বছরে নাটোর-বনপাড়া মহাসড়কের দুই পাশে আমসহ অন্যান্য ফলদ গাছ রোপণ করে বরেন্দ্র বহুমুখী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ (বিএমডিএ)। গত বছর থেকে ওই সব গাছে ফল আসা শুরু করে।

চলতি বছর প্রকল্পের ব্যয় সংকোচন ও আয় বৃদ্ধির অজুহাত দেখিয়ে ৯১২টি গাছের আম ইজারা দেয় বিএমডিএ কর্তৃপক্ষ। যেখানে প্রতি গাছের আমের মূল্য ধরা হয়েছে মাত্র ১৬ টাকা।

সরেজমিনে দেখা দেখা গেছে, ইজারা গ্রহণের পর প্রতিটি গাছ থেকে অপরিপক্ক এবং কাঁচা আম পাড়ছেন ঠিকাদার শামছুল হকের লোকজন।

তারা জানান, প্রতিটি গাছ থেকে অন্তত ১৫ থেকে ২০ কেজি করে আম সংগ্রহ করা হচ্ছে। এ পর্যন্ত প্রায় ৩ হাজার ২’শ কেজি আম পেড়েছেন তারা। বাজারে সেগুলো ১৫ টাকা কেজি দরে বিক্রি করছে ঠিকাদার।

জানা যায়, আমগাছগুলো ইজারা নিতে তিনজন ইজারাদার অংশ নেয়। এরমধ্যে সর্বোচ্চ দরদাম দাতা নাটোরের ঠিকাদার শামছুল ইসলামকে ৯১২টি গাছের আম ১৬ টাকা করে ইজারা দেয় বিএমডিএ। ফলে চলতি বছরসহ আরও দুই বছরের জন্য মোট ৪২ হাজার টাকায় ইজারা পান তিনি।

সম্প্রতি লীজ নেওয়া এসব গাছের অপরিপক্ক এবং কাঁচা আমপাড়া শুরু করে ঠিকাদারের লোকজন। পরে বিষয়টি প্রকাশ পাওয়ার তীব্র ক্ষোভ বিরাজ করছে স্থানীয়দের মধ্যে।

সচেতন নাগরিক কমিটির (সনাক) সদস্য রফিকুল ইসলাম নান্টু বলেন, সরকারের টেকসই উন্নয়নে পরিবেশ ও জীববৈচিত্র্য রক্ষায় ব্যাপক গুরুত্ব দিলেও পুষ্টির চাহিদা পুরনের পাশঅপাশি পাখি রক্ষায় এমন সিদ্ধান্ত সাংঘর্ষিক। তাই ভবিষ্যতে এমন জনবিমূখ ও ক্ষতিকর সিদ্ধান্ত বাতিলের দাবি জানাচ্ছি।

জীববৈচিত্র্যর জন্য আম বিক্রি না করলে উপকারে আসতো স্বীকার করে বরেন্দ্র বহুমুখি উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ (বিএমডিএ) সহকারি প্রকৌশলী মুহাম্মাদ আহসানুল করিম বলেন, সরকারের আয় বৃদ্ধির জন্য এটা করা হয়েছে। তবে ভবিষত্যে জীববৈচিত্র্য রক্ষার বিষয়টি উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের নজরে আনা হবে।


শর্টলিংকঃ