কলকাতায় মুজিব-ইন্দিরা বৈঠকে যা উঠে আসে


ইউএনভি ডেস্ক:

ভারতের আমন্ত্রণে ১৯৭২ সালের ৬ থেকে ৮ ফেব্রুয়ারি কলকাতা সফর করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ মুজিবুর রহমান। সফরকালে তার সঙ্গে ভারতের প্রধানমন্ত্রী ইন্দিরা গান্ধীর বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়।


এতে পারস্পরিক অর্থনৈতিক সম্পর্ক গড়ার ব্যবস্থা পর্যালোচনা করে সিদ্ধান্ত নেওয়ার বিষয়ে দুই প্রধানমন্ত্রীর মধ্যে মতৈক্য হয়েছে। তারা দুদেশের মধ্যে নিয়মিত বৈঠক এবং প্রতিনিধি দলের মধ্যে আলোচনা অব্যাহত রাখতে একমত হন। এ প্রক্রিয়ার মধ্য দিয়ে সহযোগিতা প্রতিষ্ঠার জন্য প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলে উল্লেখ করা হয়।

প্রথম দিনে দুই প্রধানমন্ত্রীর আলোচনা ৩ ঘণ্টার বেশি স্থায়ী হয়। ১৯৭২ সালের ৭ ফেব্রুয়ারি প্রকাশিত নিউইয়র্ক টাইমস পত্রিকার খবরে এসব তথ্য উঠে আসে।

ভারতের প্রধানমন্ত্রী দুই দেশের মধ্যে দীর্ঘস্থায়ী শান্তি, প্রতিবেশীসুলভ আচরণ ও পারস্পরিক সহযোগিতা বৃদ্ধিতে দৃঢ় সংকল্প ব্যক্ত করেন। আলোচনায় বাংলাদেশ ও ভারতের মধ্যে রাষ্ট্রভিত্তিক বাণিজ্য চলবে বলে সিদ্ধান্ত হয়।

দুদেশের পারস্পরিক সম্পর্ক সংশ্লিষ্ট সব বিষয়ে বিস্তারিত আলোচনা হয়। গণতন্ত্র, সমাজতন্ত্র, ধর্মনিরপেক্ষতা, জোটনিরপেক্ষতা, অসাম্প্রদায়িক বাংলাদেশ ও সাধারণ মানুষের ন্যায্য ও গভীর আশা-আকাঙ্ক্ষার বাস্তব রূপ দেওয়ার সংকল্প ঘোষণা করা হয়। দুদেশের প্রধানমন্ত্রী বিশ্বশান্তি ও স্থিতিশীলতার স্বার্থে কাজ করার সংকল্প ব্যক্ত করেন। ১০ জানুয়ারি নয়াদিল্লিতে তাদের সাক্ষাতের পর থেকে এ পর্যন্ত সব ক্ষেত্রে সাধিত অগ্রগতি পর্যালোচনা করেন তারা।

ভারতের প্রধানমন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারকে সম্ভাব্য সব রকমের সহযোগিতার আশ্বাস দেন। প্রধানমন্ত্রী দুদেশের পারস্পরিক কল্যাণকর অর্থনৈতিক সম্পর্ক পর্যালোচনা করেন। সমতা ও পারস্পরিক কল্যাণের ভিত্তিতে উন্নয়ন ও বাণিজ্যের ক্ষেত্রে ঘনিষ্ঠ সহযোগিতা বৃদ্ধির জন্য দুই দেশের মধ্যে নিয়মিত আলোচনা, পরামর্শ ও প্রতিনিধি দলের সফরের বিষয়ে তারা সম্মত হন।

প্রয়োজনে উপযুক্ত সংস্থা গঠন, আন্তর্জাতিক বিষয় নিয়ে আলোচনা এবং বিশ্বশান্তি ও স্থিতিশীলতার স্বার্থে একযোগে কাজ করার সিদ্ধান্ত নেন। বাংলাদেশের আইনশৃঙ্খলা রক্ষায় সহায়তা করার জন্য ভারতীয় সেনাদের একটি অংশ দেশটিতে অবস্থান করার সম্ভাবনা রয়েছে। যদিও ডিসেম্বরে পাকিস্তানি সেনার আত্মসমর্পণের পর থেকে ভারতীয় সেনাবাহিনীর বেশিরভাগ অংশ প্রত্যাহার করে নেওয়া হয়েছে।

কলকাতা বিমানবন্দরে ৬ ফেব্রুয়ারি ভারত সরকারের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা, কূটনীতিক ও বড় সংখ্যক জনসাধারণের উপস্থিতিতে শেখ মুজিবুর রহমানকে স্বাগত জানানো হয়। এ সময় কলকাতায় মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের কনসাল জেনারেল হারবার্ট গর্ডন উপস্থিত ছিলেন।


শর্টলিংকঃ