ক্যাসিনোর পর ঢাকায় এবার শিলং তীরের আসর


ইউএনভি ডেস্ক:

রাজধানীতে ক্যাসিনো জুয়ার লাগাম টানতে গত কয়েক বছর ধরে কাজ করতে হয়েছে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর। এই ফাঁকে ঢাকায় জায়গা করে নিয়েছে শিলং তীর নামের অনলাইন ভিত্তিক জুয়া।

ক্যাসিনো ধাঁচের এই খেলার লেনদেনে ব্যবহার করা হচ্ছে মোবাইল ব্যাংকিং সেবা। ক্যাসিনোর পর অনলাইন ভিত্তিক এই জুয়ার মাধ্যমেও দেশ থেকে বিপুল অর্থ পাচারের শঙ্কা রয়েছে গোয়েন্দাদের। পাশ্ববর্তী দেশ থেকে পরিচালিত এই জুয়ার আসর সম্প্রতি রাজধানীতে শনাক্তের পর মামলা করেছে গোয়েন্দা পুলিশের সাইবার অ্যান্ড স্পেশাল ক্রাইম বিভাগ।

শুরুর দিকে ভারতের মেঘালয় রাজ্যের রাজধানী শিলংকেন্দ্রিক বিভিন্ন ওয়েবসাইটকে কেন্দ্র করে এই জুয়া আবর্তিত হলেও এখন এগুলোর পাশাপাশি স্থানীয়ভাবে একাধিক ওয়েবসাইট তৈরি করে খেলা পরিচালনা করা হচ্ছে। প্রথমে সিলেটের চা-বাগাম শ্রমিকদের মাঝে এই জুয়ার ব্যাপকতা থাকলেও বর্তমানে তা সারা দেশেই ছড়িয়ে পড়েছে।

শিলং তীর খেলায় এক থেকে ৯৯ পর্যন্ত সংখ্যা থাকে। তা থেকে যেকোনো এক বা একাধিক নম্বর বেছে নিতে পারে জুয়াড়ি। এ ক্ষেত্রে ১০ টাকা থেকে শুরু করে ইচ্ছামতো টাকা এক বা একাধিক সংখ্যার ঘরে ধরা যায়। বেছে নেওয়া সংখ্যা লেগে গেলে বাজি ধরা টাকার ৬০ থেকে ৮০ গুণ বেশি টাকা মেলে। রবিবার বাদে সপ্তাহে ছয় দিন এই জুয়া খেলা চলে।

গুলশানের কালাচাঁদপুরে এই শিলং তীর জুয়ার আসরের সন্ধান পেয়ে অভিযান চালিয়েছে গোয়েন্দা পুলিশ। অভিযানে গ্রেফতার করা হয়েছে চার জনকে। তাদের কাছ থেকে ৬টি মোবাইল, একটি রেজিস্ট্রার খাতা, ১-৯৯ পর্যপ্ত নাম্বার বিশিষ্ট ৪টি চার্ট সম্বলিত ব্যবহৃত শিট এবং পাঁচটি অব্যবহৃত চার্ট উদ্ধার করা হয়। মঙ্গলবার এঘটনায় গুলশান থানায় একটি মামলা দায়ের করা হয়েছে।

ডিএমপির সাইবার অ্যান্ড স্পেশাল ক্রাইম বিভাগের অর্গানাইজড ক্রাইম ইনভেস্টিগেশন টিমের এসআই মো. মোসলেহ উদ্দিন বাদী হয়ে মামলাটি করেন। এজাহারে বলা হয়েছে, ভারতের শিলং থেকে পরিচালিত ওয়েবসাইট নির্ভর খেলাটির বাংলাদেশী এজেন্ট হিসেবে কাজ করে আসছিলেন শামিম মিয়া, আব্দুল আলী, এরশাদ মিয়া এবং সোহাগ মিয়া। মোবাইল ব্যাংকিং সার্ভিসের মাধ্যমে জুয়ারীদের কাছ থেকে অর্থ সংগ্রহ করা হয়। খেলায় জিতলে একই সার্ভিসের মাধ্যমে লেনদেন সম্পন্ন করা হয়।

গোয়েন্দা পুলিশের উপ-পুলিশ কমিশনার মীর মোদাচ্ছের হোসেন জানান, ভারতের শিলংয়ের জুয়ারিরা বাংলাদেশে এজেন্ট নিয়োগ করে এই খেলার অর্থ সংগ্রহ করে আসছিলো। এজেন্টরা আবার সেলসম্যান নিয়োগ করে তাদের মাধ্যমে দেশের সাধারণ মানুষকে জুয়ার ফাঁদে ফেলে। তারা মূলত একটি ওয়েবসাইটের মাধ্যমে ১ হতে ৯৯ নম্বরগুলো বিক্রি করে।

যারা এসব নম্বর কেনেন, সেলসম্যানরা তাদের সাথে যোগাযোগ করে টাকা নিয়ে থাকে। এরমধ্যে যারা বিজয়ী হিসেবে গণ্য হয় তারা এজেন্টের মাধ্যমে ৮০ গুণ টাকা পেয়ে থাকে। সমস্ত লেনদেন সম্পন্ন হয় মোবাইল ব্যংকিং এর মাধ্যমে। তবে, বেশিরভাগ জুয়াড়ি বিজয়ী হতে না পেরে সর্বস্বান্ত হয়।


শর্টলিংকঃ