থানা থেকে বেরিয়ে আত্মহত্যায় পুলিশের তথ্যে গড়মিল আছে: মানবাধিকার কমিশন


নিজস্ব প্রতিবেদক:

রাজশাহী মহানগরীর শাহ মখদুম থানা থেকে বের হয়ে কলেজছাত্রী লিজা রহমান শরীরে কেরোসিন ঢেলে আগুন ধরিয়ে আত্মহননের ঘটনায় পুলিশের দেওয়া তথ্য উপাত্তে গড়মিল রয়েছে বলে অভিযোগ উঠেছে। তদন্ত করতে গিয়ে বাংলাদেশ মানবাধিকার কমিশন কর্তৃক গঠিত তদন্ত কমিটি এই গড়মিল পেয়েছে।

শুক্রবার (২৫ অক্টোবর) সকালে বাংলাদেশ মানবাধিকার কমিশনের পরিচালক (অভিযোগ ও তদন্ত) আল মাহমুদ ফাইজুল কবির সাংবাদিকদের এ কথা বলেন।

তিনি বলেন, তদন্ত কমিটির কাছে পুলিশের সদস্যরা বলেছেন লিজা থানায় সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করার জন্য শ্বশুর বাড়ির তথ্য নিতে থানা থেকে বের হয়ে শরীরে আগুন দেন। অথচ থানায় পুলিশের করা জিডিতে লিজার শ্বশুর বাড়ির সব কথা রয়েছে। তাই এখানে অন্য ঘটনা রয়েছে।

এমন আরও গড়মিল পাওয়া গেছে। যা এখনই বলা যাবে না। আগামী রোববার (২৭ অক্টোবর) চার সদস্যের এই তদন্ত কমিটি মানবাধিকার কমিশনে তাদের রিপোর্ট পেশ করবেন বলেও জানান আল মাহমুদ ফাইজুল কবির।

এর আগে গত ৩ অক্টোবর নিহত লিজা রহমানের (১৮) স্বামী সাখাওয়াত হোসেনকে গ্রেফতার করে পুলিশ। চাঁপাইনবাবগঞ্জের গোমস্তাপুর থানার লক্ষ্মী নারায়ণপুর গ্রাম থেকে তাকে গ্রেফতার করা হয়। এ ঘটনায় পুলিশের একটি কমিটিও আলাদাভাবে তদন্ত করে। এতে বলা হয় লিজা আত্মহননের ঘটনায় পুলিশের কোনো গাফিলতি ছিল না। তবে গত ১ অক্টোবর প্রথম দফায় মানবাধিকার কমিশনের চার সদস্যের কমিটি রাজশাহী শাহ মখুদুম থানা, ভিকটিম সাপোর্ট সেন্টার, ওই কলেজছাত্রীর স্বামী, স্বজন ও বন্ধুদের সাক্ষ্য গ্রহণ করেন। গত ২৪ অক্টোবর দ্বিতীয় দফায় তদন্ত কমিটি আরও কয়েকজনের সাথে কথা বলেন। সব তথ্য উপাত্ত নিয়ে তারা চুল চেরা বিশ্লেষন করে রিপোর্ট তৈরী করেছেন।

গত ২৮ সেপ্টেম্বর দুপুরে স্বামীর বিরুদ্ধে নারী নির্যাতনের ঘটনায় মহানগরীর শাহ মখদুম থানায় অভিযোগ দিতে গেলে ওসি মাসুদ পারভেজ তাকে ভিকটিম সাপোর্ট সেন্টারে যাওয়ার পরামর্শ দেন। পরে সেখান থেকে বেরিয়ে থানার ১০০ গজ দূরে মহিলা কারিগরি কলেজের গেটের সামনে নিজ গায়ে কেরোসিন ঢেলে আগুন দেন লিজা।

পরে তাকে রাজশাহী মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে ভর্তির পর উন্নত চিকিৎসার জন্য ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের বার্ন ইউনিটে নেওয়া হয়। সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় ২ অক্টোবর সকালে তার মৃত্যু হয়।


শর্টলিংকঃ