দিল্লির নজরে আরও চিনা সংস্থা


ইউএনভি ডেস্ক:

লাদাখ সীমান্তে চিনের চোখরাঙানির কারণে সে দেশের ৫৯টি অ্যাপের (মোবাইল অ্যাপ্লিকেশন) উপরে নিষেধাজ্ঞা চাপিয়েছে দিল্লি। কড়াকড়ি বেড়েছে চিনা যন্ত্র, যন্ত্রাংশ, পণ্য আমদানিতে।

পরিস্থিতি যে দিকে গড়াচ্ছে, তাতে আগামী দিনে এই কড়াকড়ির আওতায় আসতে পারে হুয়েই-সহ আরও বেশ কিছু চিনা সংস্থা। সূত্রের খবর, জাতীয় সুরক্ষার স্বার্থে তথ্যের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতেই এই বিষয়ে কড়া নজর রাখছে দিল্লি।

কেন্দ্রের পর্যবেক্ষণ অনুযায়ী, অনেক সময়ে আপাত-নিরীহ অ্যাপের মাধ্যমেও এমন তথ্য (ডেটা) অন্য দেশের হাতে চলে যেতে পারে, যাতে ক্ষতিগ্রস্ত হতে পারে দেশের নিরাপত্তা। ওই তথ্য জমা রাখার ভাণ্ডার বা সার্ভারও বিদেশে।

ফলে এক বার বেরিয়ে যাওয়ার পরে ওই তথ্য গোপন রাখার উপায় নেই। উপরন্তু যে দেশের সংস্থার সার্ভারে তা জমা রয়েছে, তার সরকার জোর খাটিয়ে তা দেখলে সমস্ত তথ্য চলে যেতে পারে তাদের হাতে। মূলত এই আশঙ্কা থেকেই চিনা অ্যাপ কিংবা সংস্থার বিষয়ে আরও অনেক বেশি সাবধানী হওয়ার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে বলে সূত্রের খবর।

উদাহরণ হিসেবে উঠে আসছে একটি স্বাস্থ্য সচেতক অ্যাপের কথা। তাতে পাওয়া তথ্য অনুযায়ী, ২০১৫ থেকে ২০১৭ সালের মধ্যে ব্যবহারকারীরা মোট ২,৭০০ কোটি কিলোমিটার দৌড়েছেন। আর শুধু তা বিশ্লেষণ করেই বেরিয়ে এসেছে ৩ লক্ষ কোটি তথ্য-বিন্দু! তাঁরা কবে, কোথায় গিয়েছেন, কত ক্ষণ থেকেছেন, কার কোথায় যাওয়ার প্রবণতা বেশি ইত্যাদি।

সাম্প্রতিক গবেষণায় এই বিশ্লেষণ উঠে আসার পরে উদ্বেগ, সেনা ছাউনির মতো কোনও এলাকায় যদি এ ধরনের বিদেশি অ্যাপ কয়েক জনও ব্যবহার করেন, তবে তা দেশের নিরাপত্তার পক্ষে মারাত্মক হতে পারে। সূত্রের খবর, এই সমস্ত ভেবেই চিনা অ্যাপের বিষয়ে বাড়তি সতর্কতা বজায় রাখছে দিল্লি। সরকারের যদিও দাবি, যে কোনও ভিন্ দেশি সংস্থার সার্ভার ঘুরেই দেশের তথ্য বাইরে যাওয়ার বিরোধী তারা। সংসদে তথ্য নিরাপত্তা বিল আনাও সেই কারণে।

তবে আপাতত এই কড়া নজরের আতসকাচে সব থেকে বেশি করে রয়েছে একাধিক চিনা সংস্থা। যেমন, ভারত-সহ সারা বিশ্বে ৫জি পরিষেবার জাল বিছোতে চাওয়া হুয়েই, টেলিকম যন্ত্রাংশ নির্মাতা জ়েডটিই। এই দুই সংস্থা চিনা সেনাবাহিনীকে নিয়মিত তথ্য জোগায় বলে দীর্ঘ দিন ধরেই অভিযোগ তুলছে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের প্রশাসন।

বিশেষত হুয়েই নিয়ে তিক্ততা চরমে দুই দেশের। লাদাখ পরবর্তী অধ্যায়ে তাকে পুরোপুরি বিশ্বাস করতে রাজি নয় দিল্লিও। নজরে রয়েছে সিইটিসি, জিনজিং ক্যাথে ইন্টারন্যাশনালের মতো আরও বেশ কিছু সংস্থা। জল্পনা, পুরোপুরি না-হলেও, হুয়েইর মতো সংস্থার কার্যকলাপে অন্তত আংশিক ভাবে রাশ টেনে রাখতে চায় সরকার।


শর্টলিংকঃ