মধ্যপ্রাচ্য সংকটে কি ইউরোপীয় ইউনিয়নও জড়িয়ে পড়তে পারে


লেবাননের সশস্ত্র গোষ্ঠী হিজবুল্লাহ ইসরায়েলের পাশাপাশি ইউরোপীয় ইউনিয়নের (ইইউ) দেশ সাইপ্রাসেও হামলা চালানোর হুমকি দিয়েছে। লেবাননের অদূরে অবস্থিত ভূমধ্যসাগরের দেশটিতে হামলা হলে ইইউ ও যুক্তরাজ্যও সংঘাতে জড়িয়ে পড়তে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে।

হিজবুল্লাহর প্রধান হাসান নাসরাল্লাহ গত বুধবার টেলিভিশনে দেওয়া এক ভাষণে বলেছেন, ‘লেবাননে হামলা চালানো হলে ইসরায়েলের কোনো স্থানই আমাদের রকেট থেকে রেহাই পাবে না। লেবাননে হামলা চালানোর জন্য ইসরায়েলকে নিজেদের আকাশসীমা খুলে দিলে সাইপ্রাসেও হামলা চালানো হবে।’আগের দিন মঙ্গলবার ইসরায়েলের সেনাবাহিনী ঘোষণা দেয়, তারা লেবাননে সামরিক অভিযান পরিচালনার পরিকল্পনা অনুমোদন করেছে।

জবাবে লেবাননভিত্তিক সশস্ত্র গোষ্ঠী হিজবুল্লাহর প্রধান হাসান নাসরাল্লাহ ইসরায়েলসহ সাইপ্রাসে হামলা চালানোর ওই হুমকি দেন।এদিকে গাজায় ইসরায়েল ও হামাসের যুদ্ধ আট মাস পেরিয়েছে। এখন গাজার সর্ব দক্ষিণের অঞ্চল রাফায় ইসরায়েলি সেনা ও হামাস এবং ফিলিস্তিনের অন্য সশস্ত্র গোষ্ঠীর মধ্যে তীব্র লড়াই চলছে। এ অবস্থায় লেবাননের হিজবুল্লাহ ও ইসরায়েলের মধ্যে যুদ্ধ শুরু হলে এবং তা সাইপ্রাস পর্যন্ত গড়ালে পরিস্থিতি অন্যদিকে মোড় নিতে পারে।

হিজবুল্লাহর হুমকির মুখে সাইপ্রাসের প্রেসিডেন্ট নিকোস ক্রিস্টোডৌলিদেস বলেছেন, তাঁর দেশ কোনো সংকটেই কোনো পক্ষকে সমর্থন করছে না। তিনি বরং যুদ্ধবিধ্বস্ত গাজায় ত্রাণ পৌঁছানোর ক্ষেত্রে নিজের দেশের ইতিবাচক ভূমিকা তুলে ধরেন। তাঁর মতে, আরব দেশগুলো ও আন্তর্জাতিক সমাজ সেই ভূমিকাকে স্বীকৃতি দিচ্ছে। সাইপ্রাস প্রকাশ্যে সরাসরি ইসরায়েলি সেনাবাহিনীকে কোনো সহায়তা দেয়নি। তবে সাইপ্রাসের বিশাল আকাশসীমার মধ্যে ইসরায়েলি বিমানবাহিনী মাঝেমধ্যে মহড়া চালানোর অনুমতি পেয়েছে।

সাইপ্রাসে অবস্থিত যুক্তরাজ্যের সামরিক ঘাঁটি থেকে অতীতে সিরিয়ায় ও সম্প্রতি ইয়েমেনে হামলা চালানো হয়েছে। সাবেক ঔপনিবেশিক শক্তি হিসেবে যুক্তরাজ্যের দুটি সামরিক ঘাঁটি সে দেশে সক্রিয় রয়েছে।

ইরান-সমর্থিত হিজবুল্লাহ, ইয়েমেনের হুতি ও সিরিয়ার বাশার আল-আসাদ সরকার ইসরায়েলের সঙ্গে আরও বড় সংঘাতে জড়িয়ে পড়লে মধ্যপ্রাচ্যজুড়ে অস্থিরতা বাড়ার আশঙ্কা রয়েছে। জাতিসংঘ ও মার্কিন প্রশাসন এ ধরনের সংঘাত এড়ানোর চেষ্টা করছে।

অন্যদিকে বুধবার মার্কিন বিমানবাহিনী ইয়েমেনে হুতি-নিয়ন্ত্রিত এলাকার ওপর হামলা চালিয়েছে। হুতিদের অবস্থান থেকে লোহিত সাগরে জাহাজের ওপর হামলা চালানো হচ্ছিল বলে দাবি করেছে যুক্তরাষ্ট্র।

একই দিন ইসরায়েলি বিমানবাহিনী লেবাননের দক্ষিণে হিজবুল্লাহর কয়েকটি স্থাপনার ওপর হামলা চালিয়েছে। হিজবুল্লাহও ইসরায়েলের উত্তরে ড্রোন হামলা চালিয়েছে। আগের দিন মঙ্গলবার লেবাননের সশস্ত্র গোষ্ঠীটি ইসরায়েলের উত্তরে নিজস্ব ড্রোন থেকে তোলা ভিডিও প্রকাশ করে। এ ভিডিও ফুটেজ ধরে তারা ইসরায়েলের হাইফা শহর ও বন্দরের সামরিক স্থাপনার ওপর হামলার হুমকি দিয়েছিল। তবে এখন পর্যন্ত সেই ভিডিওর সত্যতা যাচাই করা সম্ভব হয়নি।


শর্টলিংকঃ