২১ আগস্ট: এখনো অধরা তারেক রহমানসহ ১৬ আসামি


ইউএনভি ডেস্ক:

২০০৪ সালের ২১ আগস্ট বঙ্গবন্ধু এভিনিউতে আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে জনসভায় নারকীয় গ্রেনেড হামলার ১৬ বছর পূর্ণ হলো আজ বৃহস্পতিবার। এ ঘটনায় দুই মামলার বিচার শেষে রায় ঘোষণা করা হয়েছে। মামলায় দণ্ডপ্রাপ্ত তারেক রহমানসহ ১৬ আসামি এখনো অধরা।


২০১৮ সালের ১০ অক্টোবর তৎকালীন ঢাকার দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনাল-১ এর বিচারক শাহেদ নূর উদ্দিন পুরান ঢাকার নাজিমউদ্দিন রোডে স্থাপিত আদালতে নারকীয় গ্রেনেড হামলা মামলার রায় ঘোষণা করেন। মামলায় আসামি ছিল ৫২ জন। এদের মধ্যে জামায়াতের সেক্রেটারি জেনারেল আলী আহসান মোহাম্মদ মুজাহিদ, হুজি নেতা মুফতি আবদুল হান্নান ও শরিফ শাহেদুল ইসলাম বিপুলের অন্য মামলায় ফাঁসি কার্যকর হওয়ায় আসামির সংখ্যা দাঁড়ায় ৪৯ জনে। রায়ে সকল আসামিরই সাজা হয়।

রায়ে সাবেক স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী লুৎফুজ্জামান বাবরসহ ১৯ জনকে মৃত্যুদণ্ড এবং বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানসহ ১৯ জনকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দেয়া হয়েছে।

রায় ঘোষণার সময় ১৮ আসামি পলাতক ছিলেন। পরে গত বছর ২৮ জানুয়ারি দুই পলাতক আসামি- সাবেক ডিআইজি খান সাঈদ হাসান ও সাবেক পুলিশ সুপার ওবায়দুর রহমান খান বিচারিক আদালতে আত্মসমর্পণ করেন। ওই দিন আদালত তাদের জামিন নাকচ করে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন। এখনো তারেক রহমানসহ দণ্ডপ্রাপ্ত ১৬ আসামি অধরা রয়েছে।

ইতোমধ্যেই পলাতক আসামিদের গ্রেপ্তার ও বিদেশে থাকা আসামিদের দেশে ফিরিয়ে আনার উদ্যোগ গ্রহণ করা হয়েছে। তবে সে কার্যক্রম চলছে ধীর গতিতে। কবে নাগাদ পলাতক আসামিদের গ্রেপ্তার বা বিদেশে থাকা আসামিদের দেশে ফিরিয়ে আনা সম্ভব হবে- তা সঠিকভাবে কেউ বলতে পারছেন না। স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী জানিয়েছেন, বঙ্গবন্ধুর খুনি ও ২১ আগস্ট গ্রেনেড হামলার আসামিদের বিদেশ থেকে দেশে ফিরিয়ে আনার জোর প্রচেষ্টা অব্যাহত রয়েছে।

আসাদুজ্জামান খান কামাল বলেন, ২১ আগস্ট গ্রেনেড হামলা মামলায় বিদেশে পলাতক আসামিদের লোকেশন আমরা পেয়েছি। পলাতকদের গ্রেপ্তারের ব্যাপারে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী যথেষ্ট তৎপর রয়েছে। বঙ্গবন্ধুর খুনি ও ২১ আগস্ট গ্রেনেড হামলা মামলার পলাতক আসামিদের দেশে ফিরিয়ে আনার জোর চেষ্টা চলছে। শিগগিরই পলাতকদের দেশে ফিরিয়ে এনে বিচারের মুখোমুখি করা হবে।

পলাতক আসামিরা হলেন- তারেক রহমান ওরফে তারেক জিয়া, শাহ মোয়াজ্জেম হোসেন কায়কোবাদ, হানিফ এন্টারপ্রাইজের মালিক হানিফ, মেজর জেনারেল (অব.) এটিএম আমিন, লে. কর্নেল (অব.) সাইফুল ইসলাম জোয়ার্দার, বাবু ওরফে রাতুল বাবু, মাওলানা তাজুল ইসলাম , জঙ্গি নেতা শফিকুর রহমান, মুফতি আবদুল হাই, মাওলানা আবু বকর, ইকবাল, খলিলুর রহমান, জাহাঙ্গীর আলম ওরফে বদর, মাওলানা লিটন ওরফে জোবায়ের ওরফে দেলোয়ার, ফরিদপুরের আনিসুর মুরসালিন ও তার ভাই মুহিবুল মুক্তাকীন।

পলাতক আসামিদের অবস্থান : আইনশৃঙ্খলা বাহিনী সূত্রে জানা গেছে, বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান বর্তমানে লন্ডনে রয়েছেন। বিএনপি নেতা শাহ মোয়াজ্জেম হোসেন কায়কোবাদ ব্যাংককে, হানিফ এন্টারপ্রাইজের মালিক হানিফ কলকাতায়, মেজর জেনারেল (অব.) এটিএম আমিন যুক্তরাষ্ট্রে, লে. কর্নেল (অব.) সাইফুল ইসলাম জোয়ার্দার কানাডায়, বাবু ওরফে রাতুল বাবু ভারতে, মাওলানা তাজুল ইসলাম দক্ষিণ আফ্রিকায় অবস্থান করছেন। আর জঙ্গি নেতা শফিকুর রহমান, মুফতি আবদুল হাই, মাওলানা আবু বকর, ইকবাল, খলিলুর রহমান, জাহাঙ্গীর আলম ওরফে বদর, মাওলানা লিটন ওরফে জোবায়ের ওরফে দেলোয়ার পাকিস্তানে রয়েছেন। এছাড়া গ্রেনেড হামলায় সরাসরি জড়িত আসামি ফরিদপুরের আনিসুর মুরসালিন ও তার ভাই মুহিবুল মুক্তাকীন দীর্ঘদিন ভারতের তিহার কারাগারে আছেন।


শর্টলিংকঃ