নিজস্ব প্রতিবেদক :
রাজশাহী নগরীতে দীর্ঘদিন ধরে বন্ধ আছে মশা নিধন কার্যক্রম।পরিবেশবান্ধব না হওয়ায় কয়েক বছর আগেই ফগার মেশিনে ওষুধ স্প্রে থেকে সরে গেছে সিটি কর্পোরেশন। কিন্তু নতুন কোনো পদ্ধতির দিকে আর এগোয় নি। ফলে মশা মারতে কেরোসিন ও ডিজেলই এখন ভরসা সিটি কর্পোরেশনের।
সিটি কর্পোরেশনের মশক নিধন ও পরিচ্ছন্নতা বিভাগের একজন শীর্ষ কর্মকর্তা (নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক) জানিয়েছেন, পরিবেশের জন্য ক্ষতিকর-এমন ধারণা থেকেই রাজশাহী নগরীতে মশা মারতে ফগার মেশিনের ব্যবহার ২০১৪ সালে বন্ধ করে দেয়া হয়েছে। এরপর থেকে মশা নিধন কার্যক্রম তেমন জোরদার নেই। মাঝে মাঝে চলে।
সিটি কর্পোরেশনের তথ্যমতে, মশা নিয়ন্ত্রণে ফেব্রুয়ারি থেকে এপ্রিল এবং অক্টোবর থেকে ডিসেম্বর-এ দুই মৌসুমে লার্ভিসাইড ও অ্যাডাল্টিসাইড স্পে করা জরুরি। নগরীর ৩০টি ওয়ার্ডে এই কার্যক্রম চালাতে প্রয়োজন অন্তত ১৫ কোটি টাকা। কিন্তু এখন আর কোনো কীটনাশক ব্যবহার করা হয় না। তাই কেরোসিন ও ডিজেলের মিশ্রণই ভরসা।
এবিষয়ে রাজশাহী রক্ষা সংগ্রাম পরিষদের সভাপতি লিয়াকত আলী বলেন, সিটি কর্পোরেশনের মশা মারার কার্যক্রমে আমি সন্তুষ্ট নয়। কারণ, যা তারা করছে তা কেবল বিচ্ছিন্নভাবেই করছে। যখন সেখানে মনে হয় সেখানে একটু কেরোসিন-ডিজেল ছিটিয়ে দেয়। কিন্তু প্রয়োজন একইসাথে ড্রেনগুলো পরিস্কার করা। এসমন ব্যবস্থা থাকা উচিত যাতে পানির প্রবাহের ড্রেন পরিস্কার হয়ে যাবে। বিভিন্ন দেশে এই পদ্ধতি চালু আছে।
সুশাসনের জন্য নাগরিক (সুজন) এর রাজশাহী জেলা শাখার সভাপতি আহমদ সফিউদ্দিন বলছেন, এখাতের জন্য সিটি কর্পোরেশনে একজন বিশেষজ্ঞ কর্মকর্তা থাকার কথা। কিন্তু নেই। অতীতে মশা মারতে নানা দুর্নীতি করে বিপুল টাকা লুটপাট হয়েছে। ফলে কাজের কাজ কিছুই হয় নি। আমরা মশা নিয়ন্ত্রণ করতে না এর দায় থেকে রেহাই পাবে না কেউই।
তবে রাজশাহী সিটি কর্পোরেশনের মেয়র এএইচএম খায়রুজ্জামান লিটন বলেন, ঢাকায় ডেঙ্গুর যে প্রকোপ তাতে আমরাও আর নিরাপদ নই। কারণ, ইতোমধ্যেই বেশ কিছু মানুষ ঢাকা থেকে আক্রান্ত হয়েছে রাজশাহীতে এসেছেন্। এজন্য নগরীর অগ্রাধিকার ভিত্তিতে চলছে মশা নিয়ন্ত্রণের কাজ। তবে কেবল সরকার বা সিটি কর্পোরেশনের পক্ষে মশা নিয়ন্ত্রণ সম্ভব নয়। সফলতা পেতে জনসচেতনতা সবচে’জরুরি।
উল্লেখ্য, এখন পর্যন্ত রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন অর্ধশতাধিক ডেঙ্গু রোগী। তবে রাজশাহীতে এ রোগে আক্রান্তের খবর না মিললেও আশঙ্কা একেবারেই উড়িয়ে দিচ্ছেন না বিশেষজ্ঞরা।