ইসরায়েলে অস্ত্র বিক্রি বন্ধে জার্মানির বিরুদ্ধে মামলা


ইউএনভি ডেস্ক:

ইসরায়েলে অস্ত্র পাঠিয়ে জার্মান সরকার আন্তর্জাতিক আইন লঙ্ঘন করছে। ইসরায়েল এসব অস্ত্র ব্যবহার করে ফিলিস্তিনের গাজার বেসামরিক মানুষের ওপর ব্যবহার করছে বলে ধারণা করা হচ্ছে। তাই জার্মানির আদালতে দেশটির সরকারের বিরুদ্ধে মামলা করেছেন একটি মানবাধিকার সংগঠনের আইনজীবী আলেকজান্ডার শোয়ারৎস।

জার্মান সংবাদ সংস্থা ডয়চে ভেলের খবরে বলা হয়, আলেকজান্ডার শোয়ারৎস বার্লিনভিত্তিক মানবাধিকার সংগঠন ইউরোপিয়ান সেন্টার ফর কনস্টিটিউশনাল অ্যান্ড হিউম্যান রাইটস বা ইসিসিএইচআরের ইন্টারন্যাশনাল ক্রাইমস অ্যান্ড অ্যাকাউন্টেবিলিটি প্রোগ্রামের ডেপুটি প্রোগ্রাম ডিরেক্টর। অস্ত্র রপ্তানি বন্ধের আশায় সংস্থাটি বার্লিনের ফেডারেল আদালতে জার্মান সরকারের বিরুদ্ধে মামলা করেছে।

মানবাধিকার আইনজীবী শোয়ারৎস বলেছেন, ইসরায়েলকে দেওয়া জার্মানির অস্ত্রের মধ্যে রয়েছে বাজুকা রকেট লঞ্চার, গোলাবারুদ ও ট্যাংক ইঞ্জিন। ইসিসিএইচআরের কাছে বিশ্বাস করার যুক্তিসংগত কারণ রয়েছে যে এসব অস্ত্র ব্যবহার করে ইসরায়েল গাজার বেসামরিক মানুষের বিরুদ্ধে অপরাধ করছে। এসব অপরাধের মধ্যে আছে যুদ্ধাপরাধ ও মানবতার বিরুদ্ধে অপরাধ। সম্প্রতি আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালতের প্রধান প্রসিকিউটর বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।

ইসরায়েল যুদ্ধাপরাধের অভিযোগ অস্বীকার করে বলেছে, তারা হামাসের বিরুদ্ধে লড়ছে। যুক্তরাষ্ট্র, ইউরোপীয় ইউনিয়নসহ আরও অনেকে হামাসকে সন্ত্রাসী সংগঠন মনে করে।

শোয়ারৎস বলেন, সম্ভাব্য অপরাধের প্রমাণ হিসেবে ভিডিও, ছবি ও প্রত্যক্ষদর্শীদের বক্তব্য সংগ্রহ করেছে তার সংস্থা। তিনি বলেন ‘আমরা জাতিসংঘ, হিউম্যান রাইটস ওয়াচসহ বিভিন্ন সংগঠনের প্রতিবেদন সংগ্রহ করেছি, যেগুলোতে অনেক ঘটনার বর্ণনা আছে।’

জার্মানির এই মানবাধিকারবিষয়ক আইনজীবী বলেন, ইসরায়েলের আত্মরক্ষার একটি ‘সহজাত অধিকার’ রয়েছে। তবে ‘ইসরায়েলকে মানবাধিকারবিষয়ক আইনকে সম্মান দেখাতে হবে। যেটা আমাদের দৃষ্টিকোণ থেকে মনে হয়, তারা সেটি করছে না।’

জার্মানি ২০২৩ সালে ইসরায়েলকে ৩২৬ দশমিক ৫ মিলিয়ন ইউরোর অস্ত্র দিয়েছে। ইসরায়েলকে অস্ত্রসহায়তার ক্ষেত্রে যুক্তরাষ্ট্রের পরই জার্মানির অবস্থান।

আইন অনুযায়ী, জার্মানিতে ‘যুদ্ধাস্ত্র’ বলতে ট্যাংক, বোমা ও ক্ষেপণাস্ত্র বোঝায়। এই সংজ্ঞায়, জার্মানি ইসরায়েলে যে অস্ত্র রপ্তানি করেছে, তার মাত্র দুই শতাংশ যুদ্ধাস্ত্র। ইসিসিএইচআর বার্লিনের আদালতে যে মামলা করেছে, সেখানে এই অস্ত্রগুলোই বিবেচ্য হবে।

ইসরায়েলে রপ্তানি করা বাকি অস্ত্রের বিষয়ে ফ্রাঙ্কফুর্টের আরেকটি আদালতে মামলার পরিকল্পনা করা হচ্ছে বলে জানান শোয়ারৎস। তিনি বলেন, জার্মানি যে ইতিমধ্যে ইসরায়েলে যুদ্ধাস্ত্র সরবরাহ বন্ধ করেছে, সেই তথ্য তাদের কাছে আছে। তবে যেকোনো সময় আবার এটি শুরু হতে পারে।

 


শর্টলিংকঃ