এসএসসিতে ভিন্ন প্রশ্নপত্রে পরীক্ষার ঘটনা ধামাচাপা


জিয়াউল গনি সেলিম:

রাজশাহী শিক্ষা বোর্ডের একটি কেন্দ্রে পরীক্ষা নেয়া হয়েছে ভিন্ন প্রশ্নপত্রে। এসএসসির হিসাব বিজ্ঞান বিষয়ের পরীক্ষায় পবা উপজেলার কাটাখালী উচ্চ বালিকা বিদ্যালয় কেন্দ্রের এঘটনা ঘটে। তবে এ ঘটনা চাপা দিয়ে রেখেছেন কেন্দ্রসচিব। এ অবস্থায় রেজাল্ট নিয়ে দুশ্চিন্তায় পড়েছে পরীক্ষার্থীরা। তবে শিক্ষা বোর্ডের পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক বলেছেন, কেন্দ্রসচিবের বিরুদ্ধে আইনী ব্যবস্থা নেয়া হবে।

কাটাখালী  উচ্চ বালিকা বিদ্যালয় কেন্দ্রে সরবরাহ করা প্রশ্নপত্র সেট-৩

শিক্ষার্থীরা জানায়, রাজশাহী শিক্ষা বোর্ডে হিসাব বিজ্ঞান সৃজনশীল বিষয়ের পরীক্ষা হয়েছে গেল ২৫ ফেব্রুয়ারি। ওইদিন হলে বসার পর প্রশ্নপত্র হাতে পেয়ে খানিকটা বিব্রত হয় তারা। কারণ প্রত্যাশা অনুযায়ী প্রশ্ন কমন পড়ে নি। তবে পরীক্ষা ঠিকই শেষ করতে হয় তাদের। কিন্তু হল থেকে বের হওয়ার পর পাশের আরেকটি কেন্দ্রে পরীক্ষা দেয়া সহপাঠীদের কথায় কথায় বেরিয়ে আসে ভিন্ন প্রশ্নপত্রের বিষয়টি।

কাটাখালী উচ্চ বালিকা বিদ্যালয়

কাটাখালী উচ্চ বালিকা বিদ্যালয় কেন্দ্রের পরীক্ষার্থী তানভীর ইসলাম, সোহেল রানা আদিব ও মুন্না জানায়, শিক্ষা বোর্ডের সকল কেন্দ্রে পরীক্ষা হয়েছে সেট-৪ এ। কিন্তু কেবল তাদের কেন্দ্রের পরীক্ষার্থীদের কাছে সরবরাহ করা হয় সেট-৩। সেট- ৩ এর প্রশ্নপত্র তুলনামূলক কঠিন ছিল। এ কারণে পরীক্ষা খারাপ হয়েছে তাদের।

পরীক্ষা শেষে এনিয়ে অন্য কেন্দ্রের পরীক্ষার্থীদের সঙ্গে কথা হয় তাদের। তখন তারা জানতে পারে, কাটাখালী উচ্চ বালিকা বিদ্যালয় কেন্দ্রের পরীক্ষা হয়েছে ভিন্নসেটে। বিষয়টি তারা কেন্দ্র সচিব মহরম আলী খানকে জানায়। কিন্তু সবাইকে ‘পাস করিয়ে’ দেয়ার আশ্বাসে এঘটনা চাপা রাখতে শিক্ষার্থীদের নির্দেশ দেন তিনি।

এবিষয়ে কথা বলতে স্কুলে গিয়েও পাওয়া যায় নি কাটাখালী উচ্চ বালিকা বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক ও কেন্দ্রসচিব মহরম আলী খানকে। কয়েকদফা মোবাইল ফোনে চেষ্টা করা হলেও তিনি ব্যস্ততার অজুহাতে কথা বলেন নি।

কেন্দ্র সচিব মহরম আলী খান

তবে স্কুল পরিচালনা কমিটির সভাপতি ও কাটাখালী পৌরমেয়র মো. আব্বাস আলী ইউনির্ভাসাল টোয়েন্টিফোরকে বলেন, এধরনের ঘটনা আমি শুনেছি। কিন্তু তা ভুল করে হয়তো হয়েছে। এই ভুলের যেন শিক্ষার্থীরা কোনোভাবে ক্ষতিগ্রস্ত না হয় তা বিবেচনার জন্য শিক্ষা বোর্ডের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন তিনি।

এদিকে রাজশাহী শিক্ষা বোর্ডের পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক অধ্যাপক আনারুল হক প্রাং বলেন, ‘এরকম অনাকাঙ্ক্ষিত কোনো ঘটনা ঘটলে প্রথমেই শিক্ষা বোর্ডকে জানাতে হবে। কিন্তু এখন পর্যন্ত কেন্দ্রসচিব আমাদেরকে এ ঘটনাটি অবহিত করেন নি। এরইমধ্যে উত্তরপত্র মূল্যায়নের জন্য পরীক্ষকদের কাছে পাঠানো হয়েছে। কাজেই এটির সুরাহা করা কঠিন হয়ে পড়লো। তবে কেন্দ্র সচিবকে শোকজ করা হবে। এরপর তার বিরুদ্ধে আইনী ব্যবস্থা নেয়া হবে’।

প্রশ্নপত্র সেট-৪

তবে পরীক্ষার্থীরা যাতে কোনোভাবেই ন্যায্য নম্বর থেকে বঞ্চিত না হয় তা বিবেচনা করা হবে বলেও জানিয়েছেন পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক।

উল্লেখ্য, পবা উপজেলার মাসকাটাদীঘি বহুমুখী কারিগরি উচ্চ বিদ্যালয়, সমসাদিপুর উচ্চ বিদ্যালয় এবং এমআরকে উচ্চ বিদ্যালয়ের অর্ধশত শিক্ষার্থী বাণিজ্য শাখা থেকে এই কেন্দ্রের পরীক্ষার্থী ছিলো।

আরও পড়ুন… মার্কসশিট দিতে ঘুষ, ইবি কর্মকর্তা বহিস্কার


শর্টলিংকঃ