ক্যান্সারের মতোই ধুঁকছে ‘ক্যান্সার প্রকল্প’


জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটির (একনেক) সভায় অনুমোদিত একটি প্রকল্পের ক্ষেত্রে সমীক্ষা যাচাই না করেই এর পরিধি, কার্যক্রম, ব্যয় ও মেয়াদ বাড়িয়ে নতুন প্রস্তাব তৈরি করেছে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়। এ ধরনের কাজকে ‘মোটেও সমীচীন হয়নি’ বলে মন্তব্য করেছে পরিকল্পনা কমিশন। প্রকল্পটি একনেকে অনুমোদনের পর বাস্তবায়নের মেয়াদ ২ বার পার করলেও আশাব্যঞ্জক অগ্রগতি হয়নি। এখন প্রকল্পের নাম, ব্যয় ও বাস্তবায়ন মেয়াদ সংশোধন করতে পরিকল্পনা কমিশনে নতুন করে প্রস্তাব পাঠিয়েছে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়

আলোচিত এ প্রকল্পের নাম ‘৮টি বিভাগীয় শহরে পূর্ণাঙ্গ ক্যান্সার, হৃদরোগ ও কিডনি চিকিৎসাকেন্দ্র স্থাপন (সর্বমোট ৩৫৩৪ শয্যা)’। সম্প্রতি এই প্রকল্পের ১ম সংশোধন প্রস্তাবের ওপর প্রকল্প মূল্যায়ন কমিটির (পিইসি) সভা করেছে পরিকল্পনা কমিশন। প্রকল্প বাস্তবায়ন এবং সংশোধনীতে বিধি না মানায় পিইসি সভায় স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়কে সতর্ক করে দিয়েছেন পরিকল্পনা কমিশনের আর্থসামাজিক অবকাঠামো বিভাগের সদস্য (সিনিয়র সচিব) মোসাম্মৎ নাসিমা বেগম।পরিকল্পনা কমিশনের কর্মকর্তারা জানান, নাম পরিবর্তন করে মোট তিন হাজার ৫৭০ কোটি ৯৫ লাখ টাকা প্রাক্কলিত ব্যয় ধরে প্রকল্পটির প্রথম সংশোধনীর প্রস্তাব করা হয়েছে।

বিজ্ঞাপনসরকারি অর্থায়নে প্রকল্পটি ২০১৯ সালের জুলাই থেকে ২০২২ সালের জুন মেয়াদে বাস্তবায়ন করার কথা ছিল। কিন্তু এই সময়ের মধ্যে প্রকল্পটি বাস্তবায়ন করতে না পারায় ব্যয় না বাড়িয়ে এক বছর মেয়াদ বাড়ানো হয়। কিন্তু এই সময়েও প্রকল্পটি বাস্তবায়নে ব্যর্থ হয় স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়। বর্তমানে নতুন করে সমীক্ষা যাচাই ছাড়াই এক হাজার ১৮২ কোটি ৫৫ লাখ টাকা ব্যয় বাড়িয়ে প্রকল্পটি সংশোধনের প্রস্তাব করেছে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়। সেই সঙ্গে প্রকল্পের বাস্তবায়ন মেয়াদ ২০২৫ সালের জুন পর্যন্ত বাড়ানোর প্রস্তাব করা হয়েছে।

স্বাস্থ্যসেবা বিভাগের কর্মকর্তারা জানান, মূল ডিপিপি অনুযায়ী ক্যান্সার সেন্টার স্থাপন কাজের প্রস্তুতিকালে হাসপাতালে হৃদরোগ ও কিডনি সেন্টারের অন্তর্ভুক্তিতে পরিবর্তিত নকশা ও রেট শিডিউলের ভিত্তিতে বর্ধিত কলেবরে ভবন নির্মাণকাজের দরপত্র প্রক্রিয়া শেষে কার্যাদেশ প্রদান করা হয়। যার কার্যক্রম চলমান রয়েছে। জুন ২০২৩ পর্যন্ত ব্যয় ৩১৫ কোটি ৯৮ লাখ টাকা বা ১৩ শতাংশ।

প্রকল্পের শিরোনামে হাসপাতালের বেডের সংখ্যা উল্লেখ থাকা সমীচীন নয়। কেননা, সময় ও পরিস্থিতিতে এ সংখ্যার তারতম্য হতে পারে। এ ছাড়া, চাহিদা নিরূপণ ও সম্ভাব্যতা যাচাই ব্যতীত নতুন অঙ্গের অন্তর্ভুক্তির মাধ্যমে প্রকল্পের পরিধি, কার্যক্রম, ব্যয় ও মেয়াদ বৃদ্ধি করাও সমীচীন নয়। এমনকি প্রকল্প সংশোধন
কর্মকর্তারা আরও জানান, আলোচ্য প্রকল্পের দুটি দিক হলো- সার্জারি বিভাগ ও মেডিসিন বিভাগ। নতুন কোনো জমি অধিগ্রহণ না করে মূলত এক জায়গা থেকে সম্পর্কিত সব রোগের চিকিৎসাসেবা দেওয়ার জন্য বিদ্যমান হাসপাতালের মধ্যেই ক্যান্সার, কিডনি ও হৃদরোগ ইউনিট স্থাপন করা হচ্ছে। সম্ভাব্যতা যাচাই ব্যতীত প্রকল্পে নতুন অঙ্গের অন্তর্ভুক্তি এবং প্রকল্প সংশোধন ব্যতীত উক্ত অঙ্গের কাজের কার্যাদেশ দেওয়ার বিষয়ে আরডিপিপিতে যথাযথ ব্যাখ্যা প্রদান এবং বর্তমান প্রেক্ষাপটে প্রকল্পের অর্থনৈতিক বিশ্লেষণ করার জন্য মতামত দেওয়া হয়েছে।

পরিকল্পনা কমিশনের স্বাস্থ্য উইংয়ের যুগ্ম প্রধান মাকসুদা হোসেন বলেন, মূল প্রকল্পটিতে স্বাস্থ্যসেবা বিভাগের আওতায় স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মাধ্যমে ২ হাজার ৩৮৮ কোটি ৩৯ লাখ টাকা ব্যয় নির্ধারণ করা হয়। মূল অনুমোদিত ডিপিপি অনুযায়ী প্রকল্পটি গত ২০১৯ সালের জুলাই থেকে ২০২২ সালের জুনের মধ্যে বাস্তবায়নের লক্ষ্য নির্ধারণ করা হয়। বর্তমানে প্রকল্পের আওতাধীন ক্যান্সার চিকিৎসাকেন্দ্রের বেড সংখ্যা ১০০ থেকে বাড়িয়ে ১৮২টি, কিডনি ও ডায়ালাইসিস সেন্টারের জন্য ১৫৬টি এবং হৃদরোগ সেন্টারের জন্য ১১২টি বেডসহ ঢাকা বিভাগের হাসপাতালে ৩৮৬টি এবং অবশিষ্ট সাতটি বিভাগের হাসপাতালে ৪৫০টি করে বেডসহ মোট তিন হাজার ৫৩৪ বেডের সংকুলান এবং ভবনসমূহকে পুনর্বিন্যস্ত করা হয়।

তিনি বলেন, প্রকল্পের কলেবর বৃদ্ধি ও গণপূর্ত অধিদপ্তরের রেট শিডিউল পরিবর্তিত (শিডিউল- ২০২২) হওয়ায় নির্মাণকাজ, যন্ত্রপাতি ও আসবাবপত্রের পরিমাণ এবং ব্যয় বৃদ্ধি, হৃদরোগ ও কিডনি সেন্টারের অন্তর্ভুক্তিতে প্রকল্পের নাম পরিবর্তন করা হয়েছে। সংশোধনী প্রকল্পের ডিপিপিতে মোট তিন হাজার ৫৭১ কোটি টাকা ব্যয় নির্ধারণ করা হয়েছে। যা মূল অনুমোদিত ব্যয়ের চেয়ে এক হাজার ১৮২ কোটি ৫৫ লাখ টাকা বা ৪৮.৫১ শতাংশ বেশি।

মাকসুদা হোসেন আরও বলেন, প্রস্তাবিত সংশোধিত ডিপিপি অনুযায়ী জুন ২০২২ পর্যন্ত প্রকল্পের ক্রমপুঞ্জিত আর্থিক অগ্রগতি হয়েছে ১১৬ কোটি ৯৯ লাখ টাকা। যা মোট ব্যয়ের তুলনায় আর্থিক অগ্রগতি ৪.৯০ শতাংশ এবং মোট ভৌত অগ্রগতি প্রায় ২০ শতাংশ।

নাম পরিবর্তন করে মোট তিন হাজার ৫৭০ কোটি ৯৫ লাখ টাকা প্রাক্কলিত ব্যয়ে প্রকল্পটির প্রথম সংশোধনের প্রস্তাব করা হয়েছে। সরকারি অর্থায়নে প্রকল্পটি ২০১৯ সালের জুলাই থেকে ২০২২ সালের জুন মেয়াদে বাস্তবায়ন করার কথা ছিল। কিন্তু এ সময়ে প্রকল্পটি বাস্তবায়ন করতে না পারায় ব্যয় ছাড়া ২০২৩ সালের জুনের মধ্যে প্রকল্পটি বাস্তবায়নের লক্ষ্যে এক বছর মেয়াদ বাড়ানো হয়। কিন্তু এ সময়েও প্রকল্পটি বাস্তবায়নে ব্যর্থ হয় স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়
প্রকল্প পরিচালক ডা. এস এম মাসুদ আলম বলেন, আটটি বিভাগেই ভবন নির্মাণ কাজ ইতোমধ্যে শুরু করা হয়েছে। নকশা পরিবর্তন হওয়ায় প্রতিটি হাসপাতাল ভবনে প্রায় ৪২ হাজার বর্গফুট ফ্লোর এরিয়া বৃদ্ধি পাওয়ায় আরডিপিপিতে মোট ফ্লোর এরিয়া মূল প্রকল্পের চেয়ে ২০ শতাংশ এবং নির্মাণ ব্যয় ২০ শতাংশ বৃদ্ধি পেয়েছে। বাস্তব অগ্রগতির মধ্যে সব হাসপাতালের পাইল ড্রাইভিং সম্পন্ন হয়েছে এবং বর্তমানে বেসমেন্ট ১/২-এর ছাদ ঢালাই, লিনাক রুমের ছাদ ঢালাই, স্টিল ব্রেসিং ও মাটি কাটার কাজ চলমান আছে। এ ছাড়া, রাজস্ব খাতের কিছু অঙ্গের বাস্তবায়ন কাজও শুরু করা হয়েছে।

তিনি প্রকল্প সংশোধনের কারণ, কাজের অগ্রগতি, অবশিষ্ট কার্যক্রম এবং অঙ্গভিত্তিক বিভাজনসহ অন্যান্য প্রয়োজনীয় তথ্য/উপাত্ত পরিকল্পনা কমিশনকে জানান।

গণপূর্ত অধিদপ্তরের অতিরিক্ত প্রধান প্রকৌশলী বলেন, চুক্তি অনুযায়ী নির্মাণ ও আনুষঙ্গিক কাজ মে ২০২৫ এর মধ্যে সম্পন্ন হবে বিধায় প্রকল্পের মেয়াদ জুন ২০২৫ পর্যন্ত দুই বছর বৃদ্ধির প্রস্তাব করা হয়েছে। এ মেয়াদে প্রকল্পের কার্যক্রমসমূহ সম্পন্ন করার জন্য একটি সময়াবদ্ধ কর্মপরিকল্পনা আরডিপিপিতে সংযোজনে সবাই একমত হয়েছেন।

আর্থসামাজিক অবকাঠামো বিভাগের সদস্য (সিনিয়র সচিব) মোসাম্মৎ নাসিমা বেগম বলেন, প্রকল্পের শিরোনামে হাসপাতালের বেডের সংখ্যা উল্লেখ থাকা সমীচীন নয়। কেননা, সময় ও পরিস্থিতিতে এ সংখ্যার তারতম্য হতে পারে। এ ছাড়া, চাহিদা নিরূপণ ও সম্ভাব্যতা যাচাই ব্যতীত নতুন অঙ্গের অন্তর্ভুক্তির মাধ্যমে প্রকল্পের পরিধি, কার্যক্রম, ব্যয় ও মেয়াদ বৃদ্ধি করাও সমীচীন নয়। এমনকি প্রকল্প সংশোধন ব্যতীত অনুমোদন বহির্ভূত অঙ্গ/কাজের কার্যাদেশ দেওয়া পরিকল্পনা শৃঙ্খলার ব্যত্যয়।

তিনি বলেন, মূল প্রকল্পটি সারা দেশে ক্যান্সার রোগে আক্রান্ত বিপুল জনগোষ্ঠীকে চিকিৎসাসেবার আওতায় আনার লক্ষ্যে আটটি বিভাগীয় শহরে ১০০ শয্যাবিশিষ্ট পূর্ণাঙ্গ ক্যান্সার চিকিৎসাকেন্দ্র স্থাপনের জন্য অনুমোদিত হলেও পরবর্তীতে কিডনি ও ডায়ালাইসিস সেন্টার এবং হৃদরোগ ইউনিট সংযুক্ত করে হাসপাতালটিকে ৪৬০ শয্যায় উন্নীত করা হয়। এতে নকশা পরিবর্তন হওয়ায় ফ্লোর এরিয়া ও শয্যার সংখ্যা বৃদ্ধির সঙ্গে সঙ্গে নির্মাণ ও আনুষঙ্গিক ব্যয় বৃদ্ধির লক্ষ্যে প্রথম সংশোধন প্রস্তাব করা হয়েছে।

১. প্রকল্পের সংশোধন এবং ধীর বাস্তবায়ন অগ্রগতির কারণসমূহ সংক্ষিপ্ত ও সুনির্দিষ্টভাবে শিরোনামসহ বুলেট আকারে আরডিপিপিতে উল্লেখ করতে হবে। এক্ষেত্রে অঙ্গসমূহের ব্যয় হ্রাস-বৃদ্ধির বিষয়টি সুস্পষ্টভাবে ছকে উল্লেখ করতে হবে। প্রস্তাবিত মেয়াদে (জুলাই ২০১৯ হতে জুন ২০২৫) প্রকল্পের অবশিষ্ট কার্যক্রমসমূহ সুষ্ঠুভাবে সম্পন্ন করার জন্য একটি সময়াবদ্ধ ও কার্যকর কর্মপরিকল্পনা আরডিপিপিতে সংযুক্ত করতে হবে। জুন ২০২৩ পর্যন্ত হালনাগাদ ব্যয়ের ভিত্তিতে প্রকল্পের ক্রমপুঞ্জিত আর্থিক অগ্রগতির তথ্য আরডিপিপি’তে উল্লেখ করতে হবে। প্রকল্পের অঙ্গসমূহের পরিমাণের হ্রাস-বৃদ্ধিসহ অঙ্গভিত্তিক ও সার্বিক বাস্তব অগ্রগতির তথ্য ছক আকারে আরডিপিপি’তে উল্লেখ করতে হবে।

২. সম্ভাব্যতা যাচাই ব্যতীত প্রকল্পে নতুন অঙ্গের অন্তর্ভুক্তি এবং প্রকল্প সংশোধন ব্যতীত উক্ত অঙ্গের কাজের কার্যাদেশ দেওয়ার বিষয়ে আরডিপিপিতে যথাযথ ব্যাখ্যা প্রদান করতে হবে। ভবিষ্যতে প্রকল্প গ্রহণ ও সংশোধনের ক্ষেত্রে সম্ভাব্যতা যাচাইসহ সরকারি খাতে উন্নয়ন প্রকল্প প্রণয়ন, প্রক্রিয়াকরণ, অনুমোদন ও সংশোধন নির্দেশিকায় বর্ণিত সংশ্লিষ্ট বিধিবিধান অনুসরণের জন্য উদ্যোগী বিভাগকে অধিকতর যত্নবান হতে হবে। ঢাকা বিভাগে প্রকল্পের তথা হাসপাতালের স্থান কুর্মিটোলা জেনারেল হাসপাতালের পরিবর্তে কুয়েত-বাংলাদেশ মৈত্রী হাসপাতাল নির্ধারণের কারণ, যৌক্তিকতা ও ভিত্তি উপযুক্ত প্রমাণাদিসহ আরডিপিপিতে উল্লেখ করতে হবে। প্রস্তাবিত হাসপাতালসমূহে প্রতিটি কেন্দ্রের শয্যার সংখ্যা নির্ধারণের ভিত্তি, চূড়ান্তকৃত শয্যা সংখ্যা এবং বেইজমেন্ট/বাংকারসহ বিশদ ফ্লোর-ব্যবহার পরিকল্পনা আরডিপিপিতে সুস্পষ্টভাবে ছকে উল্লেখ করতে হবে।

dhakapost

৩. অর্থ বিভাগের জনবল কমিটির সুপারিশ না থাকায় ক্লিনার পদে নতুন প্রস্তাবিত ৬.৩৪ লাখ টাকার আউটসোর্স সেবা সংস্থানটি সংশোধন প্রস্তাব হতে বাদ দিতে হবে। ‘অভ্যন্তরীণ ভ্রমণ ব্যয়’ খাতে অনুমোদিত ডিপিপি’র সংস্থান ১০.০০ লাখ টাকা অপরিবর্তিত থাকবে। আউট সোর্সিং সেবা (দুটি) খাতে ক্রমপুঞ্জিত ব্যয় ২১.২৬ লাখ টাকা হতে অনুমোদিত সংস্থানের (১৯.৭৪ লাখ টাকা) অতিরিক্ত ব্যয় বাদ দিয়ে উক্ত খাতে মোট ৩৭.০০ লাখ টাকা প্রাক্কলন করতে হবে। এ ছাড়া, ‘স্ট্যাম্প ও সিল’ কোডে ৬.৪১ লক্ষ টাকা এবং ‘স্টেশনারি’ কোডে ৩.৮০ লাখ টাকা প্রাক্কলন করতে হবে।

৪. নতুন প্রস্তাবিত ‘ব্যবহার্য দ্রব্যাদি’ খাতটি (১০.০০ লাখ টাকা) আরডিপিপি হতে বাদ দিতে হবে। ‘আনুষঙ্গিক কর্মচারী/প্রতিষ্ঠান’ শীর্ষক নতুন অঙ্গে ০.৫০ লাখ টাকা প্রাক্কলনপূর্বক আরডিপিপি পুনর্গঠন করতে হবে।

৫. প্রকল্পের আওতায় দুটি গাড়ির ২৪ মাসের হায়ারিং চার্জবাবদ প্রচলিত দর ও বিধি মোতাবেক প্রাক্কলন করতে হবে। আটটি হাসপাতালের জন্য আটটি অ্যাম্বুলেন্স ক্রয়সহ খাতটি পুনর্নির্ধারণ করতে হবে।

৬. কনসালটেন্সি (একজন ক্রয় পরামর্শক) বাবদ ১২ জনমাসের জন্য ৩৬.০০ লাখ টাকার প্রাক্কলনসহ আরডিপিপি পুনর্গঠন করতে হবে। চিকিৎসা ও শল্য চিকিৎসা সরঞ্জামাদি (এমএসআর) খাতে ন্যূনতম তিন মাসের জন্য পরিমাণ ও ব্যয় প্রাক্কলন করতে হবে।

৭. প্রকল্পের নির্মাণ ও পূর্ত কাজের ব্যয় প্রাক্কলনের অসামঞ্জস্য দূর করে যথাযথ প্রাক্কলনের ভিত্তিতে আরডিপিপি পুনর্গঠন করতে হবে। নির্মাণ খাতের বিস্তারিত প্রাক্কলনে মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল অনুযায়ী অঙ্গ-উপাঙ্গভিত্তিক ব্যয়ের প্রস্তাবসহ মোট প্রাক্কলনের বিশদ বর্ণনা সুবিন্যস্ত ও ধারাবাহিকভাবে উল্লেখ করতে হবে।

৮. প্রকল্পের শিরোনাম হতে শয্যাসংখ্যার অংশটি বাদ দেওয়া যেতে পারে। স্থানীয় চাহিদার পরিপ্রেক্ষিতে স্টেকহোল্ডার কনসালটেশনের মাধ্যমে পুনঃপরীক্ষা করে প্রকল্পের আওতায় হাসপাতালসমূহের বেড সংখ্যা ও অন্যান্য সুযোগ-সুবিধা নির্ধারণ করতে হবে।

৯. আরডিপিপিতে প্রকল্প এলাকার বিবরণ এবং প্রকল্প এলাকাভিত্তিক ব্যয় বিভাজনে সংশ্লিষ্ট হাসপাতালসমূহের নাম উল্লেখ করতে হবে। প্রকল্পের লগফ্রেম প্রকল্পটির লক্ষ্য ও উদ্দেশ্যের বিপরীতে যথাযথ ইনপুট ও আউটপুটের ভিত্তিতে প্রণয়ন করতে হবে। বর্তমান প্রেক্ষাপটে সম্ভাব্য প্রভাবসমূহের ভিত্তিতে প্রকল্পের অর্থনৈতিক বিশ্লেষণ করা যেতে পারে।

১০. পিপিআর- ২০০৮ অনুযায়ী, প্রকল্পের ক্রয় পরিকল্পনায় পণ্য/কার্য/সেবার নির্ধারিত নাম/বিবরণের ভিত্তিতে প্যাকেজ নির্ধারণ, পণ্যের ধরন ভেদে প্যাকেজ সংখ্যা নির্ধারণ এবং সব ক্ষেত্রে ‘আর্থিক ক্ষমতা অর্পণ আদেশ’ অনুযায়ী উপযুক্ত ক্রয় অনুমোদনকারী কর্তৃপক্ষ, সঠিক ক্রয় পদ্ধতি ও ক্রয় অনুমোদনের সুনির্দিষ্ট তারিখ উল্লেখ করতে হবে। প্রকল্প ছকের তুলনামূলক ব্যয় বিভাজনসহ অন্যান্য অংশে উপযুক্ত একক ও পরিমাণের ভিত্তিতে আরডিপিপি পুনর্গঠন করতে হবে।

১১. প্রকল্প প্রণয়ন, প্রক্রিয়াকরণ, অনুমোদন ও সংশোধন সংক্রান্ত পরিপত্রের নিয়ম অনুযায়ী প্রকল্পের ভৌত কাজের মোট প্রাক্কলনের এক শতাংশ হারে ফিজিক্যাল কনটেজেন্সি এবং প্রকল্পের মোট প্রাক্কলিত ব্যয়ের এক শতাংশ হারে প্রাইস কনটেজেন্সি প্রাক্কলন করতে হবে।


শর্টলিংকঃ