‘খালেদা জিয়াকেও বিচারের আওতায় আনতে হবে’


ইউএনভি ডেস্ক:

‘বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা জেনারেল জিয়া যেমন ১৫ আগস্টের নৃশংস হত্যাকাণ্ডের নেপথ্য নায়ক, তেমনি তার সহধর্মিনী খালেদা জিয়াও ২১ আগস্টের গ্রেনেড হামলার নেপথ্য নায়িকা। দেশের ইতিহাসের জঘন্যতম হত্যাকাণ্ডের এই দুই প্রধান খলনায়ক ও খলনায়িকাকে অবশ্যই বিচারের মুখোমুখি করতে হবে।’

২০০৪ সালের ২১ আগস্ট আওয়ামী লীগের সমাবেশে বিএনপি-জামায়াত জোট সরকারের সন্ত্রাসী হামলায় নিহতদের স্মরণে শুক্রবার অনলাইন আন্তজার্তিক সম্মেলনে আলোচকরা এসব কথা বলেন। ‘১৫ ও ২১ আগস্টের ঘাতকদের অভিন্ন রাজনীতি ও উদ্দেশ্য :সরকার ও নাগরিক সমাজের করণীয়’ শীর্ষক এই সন্মেলনের আয়োজন করে একাত্তরের ঘাতক দালাল নির্মূল কমিটি।

সম্মেলনে সভাপতির ভাষণে শাহরিয়ার কবির বলেন, ‘মুক্তিযুদ্ধকালে যে রাজনীতি ইসলামের নামে স্মরণকালের নৃশংসতম গণহত্যাকে বৈধতা দিয়েছিল, বঙ্গবন্ধুর সরকার সাংবিধানিকভাবে যে রাজনীতি নিষিদ্ধ করেছিলেন, সেই মওদুদীবাদী, ওহাবিবাদী রাজনীতির ধারকরাই ১৯৭৫-এর ১৫ আগস্ট এবং ২০০৪ সালের ২১ আগস্টের নৃশংসতম হত্যাকাণ্ড ঘটিয়েছে। তাদের উদ্দেশ্য ছিল জাতির পিতা বঙ্গবন্ধুর এবং তার পরিবারের সকল সদস্য ও ঘনিষ্ঠ সহযোদ্ধাদের হত্যা করে একাত্তরের পরাজয়ের প্রতিশোধ নেওয়া। পাশাপাশি মুক্তিযুদ্ধের চেতনাদীপ্ত বাংলাদেশকে পাকিস্তানের মতো মৌলবাদী, সাম্প্রদায়িক, সন্ত্রাসী রাষ্ট্রে পরিণত করা।’

তিনি বলেন, ‘বঙ্গবন্ধুর বাহাত্তরের সংবিধান চেতনাগতভাবে পুনঃপ্রবর্তন করা না হলে বাংলাদেশে মুক্তিযুদ্ধের চেতনার অনুসারী ভিন্নমত, ভিন্নধর্ম ও ভিন্ন জীবনাধারার অনুসারীদের হত্যা ও সন্ত্রাস কখনও বন্ধ করা যাবে না।’

বিচারপতি শামসুদ্দিন চৌধুরী মানিক বলেন, ‘১৫ আগস্ট ও ২১ আগস্ট এ দেশের ইতিহাসের জঘন্যতম হত্যাকাণ্ড। এ ঘটনার নেপথ্য নায়ক-নায়িকা জেনারেল জিয়া ও তার সহধর্মিনী খালেদাকে অবশ্যই বিচারের মুখোমুখি করতে হবে। নইলে বাংলাদেশে ধর্মের নামে হত্যা যেমন অব্যাহত থাকবে, তেমনি আইনের শাসনও প্রতিষ্ঠা করা যাবে না।’

নিরাপত্তা বিশ্লেষক মেজর জেনারেল (অব.) আবদুর রশীদ বলেন, ‘মাঠপর্যায়ে জঙ্গী মৌলবাদী সন্ত্রাস দমনে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী যথেষ্ট সাফল্য দেখালেও সন্ত্রাসের দর্শন ও রাজনীতি মোকাবেলার ক্ষেত্রে তেমন কোনও উদ্যোগ দৃশ্যমান নয়। পরিবার, সমাজ ও রাষ্ট্রকে জঙ্গী মৌলবাদী সন্ত্রাস থেকে মুক্ত করতে হলে সরকার ও নাগরিক সমাজকে সম্মিলিতভাবে সমন্বিত প্রতিরোধ গড়ে তুলতে হবে।’

সম্মেলনে আরও আলোচনা করেন নির্মূল কমিটির সাধারণ সম্পাদক কাজী মুকুল, সমাজকর্মী আরমা দত্ত এমপি, অধ্যাপক ডা. মামুন আল মাহতাব, ব্যারিস্টার ড. তুরিন আফরোজ, গণজাগরণ মঞ্চের সংগঠক লেখক মারুফ রসুল, লেখক সাব্বির খান (সুইডেন), সমাজকর্মী স্বীকৃতি বড়ূয়া (যুক্তরাষ্ট্র), প্রামাণ্যচিত্রনির্মাতা প্রকাশ রায় (ফ্রান্স), অনলাইন অ্যাক্টিভিস্ট অমি রহমান পিয়াল (সুইজারল্যাণ্ড), সর্ব ইউরোপীয় নির্মূল কমিটির সভাপতি তরুণ কান্তি চৌধুরী, মাহফুজুর রহমান (যুক্তরাষ্ট্র), ড. একরাম চৌধুরী (অস্ট্রেলিয়া), ড. মুজিবুর দপ্তরি (ফিনল্যান্ড), তুরস্ক শাখার সাধারণ সম্পাদক শাকিল রেজা ইফতি, ভারতের পশ্চিমবঙ্গ শাখার সাধারণ সম্পাদক বিদ্যুৎ দেবনাথ প্রমুখ।


শর্টলিংকঃ