গোপনে বৃহত্তম বিমানবাহী রণতরী বানাচ্ছে চীন


সারাদুনিয়া ডেস্ক :

সমুদ্র থেকে এক সঙ্গে অনেকগুলি যুদ্ধবিমান উড়ানোর জন্য চীন তার সবচেয়ে বড় এয়ারক্র্যাফ্ট কেরিয়ারটি (বিমানবাহী রণতরী) বানানো শুরু করেছে। এটি হবে দেশটির তৃতীয় এয়ারক্র্যাফ্ট কেরিয়ার।

একটি মার্কিন উপগ্রহের চিত্রে ওই এয়ারক্র্যাফ্ট কেরিয়ার নির্মাণের প্রস্তুতির ছবি ধরা পড়েছে বলে জানিয়েছে ওয়াশিংটনের একটি থিঙ্ক ট্যাঙ্ক সংস্থা সেন্টার ফর স্ট্র্যাটেজিক অ্যান্ড ইন্টারন্যাশনাল স্টাডিজ (সিএসআইএস)।

মার্কিন উপগ্রহের তোলা ছবিতে দেখা গেছে, শাংহাই থেকে সামান্য দূরে জিয়াংনান শিপইয়ার্ডে একটি বিশাল জাহাজে ওই এয়ারক্র্যাফ্ট কেরিয়ার বানানোর কাজ ৬ মাসেই আগেই শুরু করেছে বেইজিং।

আনন্দবাজার বলছে, চীনের কয়েকটি সরকারি সংবাদমাধ্যম এ ব্যাপারে ইঙ্গিত দিলেও বেইজিং এখনও সরকারিভাবে ওই এয়ারক্র্যাফ্ট বানানোর ব্যাপারে কিছুই জানায়নি।

তবে পেন্টাগন গত সপ্তাহে জানিয়েছে, চীন যে গোপনে ওই এয়ারক্র্যাফ্ট বানাচ্ছে, সম্প্রতি সে ব্যাপারে গুরুত্বপূর্ণ তথ্য মিলেছে।

চীনের প্রথম এয়ারক্র্যাফ্ট কেরিয়ারটি ছিল সোভিয়েত জমানার। সেটি পরে ইউক্রেনের কাছ থেকে কিনেছিল বেইজিং। তার নাম- ‘লিয়াওনিং’। দ্বিতীয় এয়ারক্র্যাফ্ট কেরিয়ারটি চীন নিজের দেশেই বানিয়েছে। তবে সেটি খুব একটা বড় নয়। আর সেটি এখনও চীনের নৌবাহিনীর হেফাজতে আসেনি।

বিশেষজ্ঞদের বক্তব্য, এই বৃহত্তম এয়ারক্র্যাফ্ট কেরিয়ারটি চীনা নৌবাহিনীর হাতে এলে তা এশিয়ায় মার্কিন নৌবাহিনীর ‘দাপাদাপি’কে তো চ্যালেঞ্জ জানাবেই, ক্ষমতার নিরিখে ভারত ও জাপানের নৌবাহিনীকেও পেছনে ফেলে দেবে।

মার্কিন উপগ্রহের পাঠানো যে ছবির ভিত্তিতে সিএসআইএস এই খবর দিয়েছে, তাতে প্রতিরক্ষা বিশেষজ্ঞদের ধারণা, ওই এয়ারক্র্যাফ্ট কেরিয়ারের সামনের দিকটা অনেকটাই ধনুকের মতো। পরে যা সমান হয়ে গেছে। আর সেই অংশটি লম্বায় ৩০ মিটার বা ৯৮ ফুট। এ ছাড়াও সেই জাহাজের কাঠামোটা ৪১ মিটার চওড়া।

বিশেষজ্ঞরা বলছেন, চীনের এই তৃতীয় এয়ারক্র্যাফ্ট কেরিয়ারটি ‘টাইপ ০০২’শ্রেণির। যা আদতে আমেরিকার সবচেয়ে বড় এয়ারক্র্যাফ্ট কেরিয়ারের তুলনায় ছোট। মার্কিন এয়ারক্র্যাফ্ট কেরিয়ারটির ওজন ১ লাখ টন। কিন্তু এটি ফ্রান্সের সাড়ে ৪২ হাজার টন ওজনের শার্লে দ্য গল এয়ারক্র্যাফ্ট কেরিয়ারের চেয়ে অনেকটাই বড়।

সিএসআইএস-এর বিশ্লেষক ম্যাথু ফুনাইওলে বলেছেন, ‘গত ৬ মাসে ওই এয়ারক্র্যাফ্ট কেরিয়ার নির্মাণের কাজ যে খুব দ্রুত গতিতে হচ্ছে, তার প্রমাণ মিলেছে।’

তবে এই এয়ারক্র্যাফ্ট কেরিয়ারটি চীন কীভাবে চালাবে, সে ব্যাপারে এখনও সঠিক কোনো তথ্য বিশেষজ্ঞদের হাতে আসেনি। তাদের একাংশের ধারণা, অন্যান্য দেশ যেভাবে এয়ারক্র্যাফ্ট কেরিয়ার চালায়, চীনও হয়তো সেইভাবেই চালাবে।

বিশেষজ্ঞদের আর একটি অংশ মনে করছেন, তা কোনো আধুনিক তড়িৎ-চুম্বকীয় পদ্ধতি বা পরমাণু শক্তিতেও চালানো হতে পারে।

এই মুহূর্তে চীনের হাতে এমন ১০টি সাবমেরিন রয়েছে, যেগুলি পরমাণু শক্তিতে চলে। কিন্তু এমন কোনো জাহাজ এখনও চীনের হাতে নেই, যা চলে পরমাণু শক্তিতে।

চীনের আগের দুটি এয়ারক্র্যাফ্ট কেরিয়ার অবশ্য আকারে ছিল অনেকটাই ছোট। সেগুলি থেকে বড়জোর ২৫টি যুদ্ধবিমান এক সঙ্গে উড়ানো সম্ভব। যা মার্কিন এয়ারক্র্যাফ্ট কেরিয়ারের ক্ষমতার অর্ধেক। তথ্যসূত্র : পরিবর্তন


শর্টলিংকঃ