গোবিন্দগঞ্জে টেন্ডার ছাড়াই দশ লক্ষাধিক টাকার গাছ বিক্রি


গাইবান্ধা প্রতিনিধিঃ

গাইবান্ধার গোবিন্দগঞ্জ উপজেলার ফুলবাড়ী ইউনিয়নে সামাজিক বনায়ন বিভাগের দশ লক্ষাধিক টাকার গাছ টেন্ডার ছাড়াই বিক্রির অভিযোগ পাওয়া গেছে। অবৈধভাবে গাছটাকার সাথে ওই ইউনিয়নের চেয়ারম্যান মান্নান মোল্লা ও ইউপি সদস্য জয়নালের সম্পৃক্ততা রয়েছে বলে স্থানীয়রা জানান।

জানা গেছে, গোবিন্দগঞ্জ উপজেলার ফুলবাড়ী ইউনিয়নের বামনকুড়ি কইপাড়া মনতাজ এর বাড়ী থেকে জয়নালের বাড়ী পর্যন্ত প্রায় এক কিলোমিটার এলাকায় সামাজিক বনায়নের আওতায় প্রায় দেড় যুগ আগে ইউক্লিপটার্স সহ বিভিন্ন প্রজাতির গাছ লাগানো হয়। এ সড়কের প্রায় ৭শ’ গাছ গত কয়েকদিন ধরে স্থানীয় ইউপি সদস্য ও চেয়ারম্যানের ছত্রছায়ায় এক শ্রেনীর অসাধু ব্যক্তি প্রকাশ্যে এসব রাস্তার গাছ কাটার মহোৎসব চালাচ্ছে।

দিনে- দুপুরে অবৈধ ভাবে গাছ কাটা অব্যাহত থাকলেও তা যেন দেখার কেউ নেই। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক স্থানীয় এক গাছ ক্রেতা জানান, বিক্রি করা এসব গাছের মূল্য দশ লক্ষাধিক টাকা ছাড়িয়ে যাবে। যেহেতু অবৈধভাবে বিক্রি করা হয়েছে। সেখানে তো গাছ ক্রেতা কম মূল্যেই কিনবে। নিয়মানুসারে জেলা প্রশাসকের নির্দেশে সংশ্লিষ্ট উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা পরিপক্ক গাছ বিক্রির জন্য টেন্ডার আহবান করবেন।

এরপর উপজেলা প্রশাসন অনুমোদনের সকল প্রক্রিয়া শেষে গাছ কাটার অনুমতি দেবেন। অভিযোগ রয়েছে সরকারী এই নিয়ম-নীতির তোয়াক্কা না করে ওই প্রভাবশালী মহল উপজেলা প্রশাসনকে ম্যানেজ করে এসব গাছ কাটছেন। এতে করে একদিকে যেমন পরিবেশের ভারসাম্য নষ্ট হচ্ছে- অন্যদিকে সরকার এ খাত থেকে বিপুলপরিমান টাকার রাজস্ব হারাচ্ছে।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক স্থানীয় একাধিক ব্যক্তি জানান, আমরা ভাল-মন্দ কিছু বললে গেলে তারা আমাদের সমস্যায় ফেলবে। এজন্য আমরাও কিছু বলিনা। সড়কে গাছগুলো থাকার কারণে শোভাবর্ধণ ও পথচারির ছায়া প্রদানসহ প্রাকৃতিক সুন্দর্য বৃদ্ধি করেছিল। গাছগুলো কাটার পর এলাকাটি মহা শ্বশানের মত হয়ে গেছে। এ বিষয়ে সামাজিক বনায়নের সভাপতি রঞ্জু মিয়ার সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি জানান, গাছ কাটার বিষয়ে চেয়ারম্যানের সঙ্গে আলাপ করা হয়।

চেয়ারম্যানের অনুমতি নিয়েই গাছগুলো কাটা হচ্ছে। সেই সাথে সাংবাদিক সহ উপজেলার প্রশাসনকে ম্যানেজের জন্য চেয়ারম্যান দুই লক্ষাধিক টাকা নিয়েছেন। এ নিয়ে ইউপি সদস্য জয়নাল আবেদীন জানান, চেয়ারম্যানের কথা মত গাছগুলো কাটা হচ্ছে। আপনি চেয়ারম্যানের সাথে কথা বলেন। গাছ বিক্রির বিষয়ে ফুলবাড়ী ইউপি চেয়ারম্যান মান্নান মোল্লার নিকট জানতে চাইলে তিনি গাছকাটার বিষয়টি স্বীকার করে জানান, টেন্ডার ছাড়াই গাছগুলো বিক্রি করা হয়েছে।

বিনা টেন্ডারে গাছ বিক্রির বিষয়ে গোবিন্দগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা রামকৃষ্ণ বর্মন জানান, গাছ কাটার বিষয়টি আমি জেনেছি। গাছকাটা বন্ধ করে দেয়া হয়েছে। তবে টেন্ডার ছাড়াই যদি গাছগুলো কাটা হয়। তাহলে তাদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।


শর্টলিংকঃ