জাতীয় পুষ্টি সপ্তাহের টাকায় ত্রাণ দিলেন চিকিৎসকরা


নিজস্ব প্রতিবেদক :

জাতীয় পুষ্টি সপ্তাহ পালনের টাকা দিয়ে অসহায় মা ও করোনাকালে বেকার হয়ে পড়া পরিবারের মধ্যে ত্রাণসামগ্রীর উপহার প্যাকেট বিতরণ করেছেন রাজশাহীর বাগমারা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের চিকিৎসকেরা। সপ্তাহ ধরে কর্মসূচি নেওয়া হলেও করোনা সংকট বিবেচনা করে উল্লেখযোগ্য কিছুই করা হয়নি।

উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স সূত্রে জানা যায়, প্রতি বছরের মতো এবারও গত ২৩ এপ্রিল থেকে জাতীয় পুষ্টি সপ্তাহ শুরু হয়েছে। বুধবার শেষ পুষ্টি সপ্তাহের। সাতদিন ধরে পুষ্টি সপ্তাহ পালনের জন্য শোভাযাত্রা, আলোচনা সভা, চিত্র প্রদর্শনীসহ সব ধরনের কর্মসূচি হাতে নেওয়া হয়েছিল। করোনাভাইরাসের কারণে শুধু মাত্র স্বল্প পরিসরে ঘরোয়া আলোচনা সভা ছাড়া সব কিছু বাদ দেওয়া হয়।

অনুষ্ঠানের জন্য বরাদ্দ পাওয়া সরকারি অর্থ দিয়ে করোনা সংকটের শিকার গরীব লোকজনের পাশে দাঁড়িয়েছে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স। সে অনুসারে ১৭টি পরিবারের প্রত্যেককে ১০ কেজি চাল, পাঁচ কেজি আলু, এক কেজি ডাল, এক লিটার সয়াবিন তেল, এক কেজি পেঁয়াজ ও এক কেজি লবন দেওয়া হয়েছে। করোনাকালে বেকার হয়ে পড়া গরীব লোকজন ছাড়াও স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসা নেওয়া দুইজন গরীব রোগীকে দেওয়া হয়েছে স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের এই উপহার প্যাকেট। তাদের সমাজসেবা অধিদপ্তর থেকে বিনামূল্যে ওষুধ সরবরাহও করা হয়েছে।

এছাড়াও প্রসূতি মাতাদের দেওয়া হয়েছে পুষ্টিকর খাবার। প্রসূতি চক মহব্বতপুর গ্রামের রেহেনা খাতুন বলেন, উপজেলা স্বাস্থ্য কর্মকর্তাসহ চিকিৎসকেরা তাঁর বাড়িতে এসে উপহারের প্যাকেট পৌঁছে দিয়েছেন। এই খাবারগুলো অনেক দিন চলবে। স্বামী বেকার হয়ে পড়াতে পরিবারের রোজগার কমে গেছে। শ্বাসকষ্ট নিয়ে স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি হওয়া বাগমারার পূর্বপাড়া গ্রামের কিরণ বালা বলেন, পরিবারের রোজগারের মত একমাত্র ছেলে অনন্ত কুমার পেশায় মুচি।

দীর্ঘদিন ধরে অসুস্থ থাকায় সে কাজ করে ওষুধ কিনে দেয়। তবে করোনাকালে কর্মহীন হয়ে পড়েছে সঙ্গে রোগও বেড়েছে। নিরুপায়ে স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি হয়ে সেখান থেকে এবং সমাজ সেবা অধিদপ্তর থেকে বিনামূল্যে ওষুধ পেয়েছেন। চিকিৎসা শেষে বাড়ি ফেরার সময় খাবারের একটি প্যাকেট উপহার পেয়েছেন বলে জানান।

উপজেলা স্বাস্থ্য কর্মকর্তা গোলাম রাব্বানী বলেন, করোনার কারণে এবার পুষ্টি সপ্তাহ জাঁকজমকভাবে পালন করা হয়নি। ওই অনুষ্ঠানের অর্থ করোনাকালে বেকার হয়ে পড়া কয়েকটি পরিবার ও প্রসূতি মাতাদের দেওয়া হয়েছে। আরও পাঁচটি খাবারের উপহার প্যাকেট সংরক্ষণ করে রাখা হয়েছে। কোনো প্রসূতি বা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসা নিতে আসা গরীব রোগীকে দেওয়া হবে। এটি কর্তৃপক্ষের নির্দেশনায় করা হয়েছে।


শর্টলিংকঃ