‘ডাইনোসর উদযাপনের’ রহস্য


ইউএনভি ডেস্ক:

এইন্সলে এনলোভুর বলে শটটা খেলেই পয়েন্টে চোখ রেখে ভোঁ-দৌড়। উইকেটের অপরপ্রান্তে পৌঁছানোর আগেই দেখলেন বলটা সীমানা দড়িতে স্পর্শ করেছে। উদযাপনের শুরুতে একটু থামলেনও। তারপর ব্যাট ঘুরিয়ে, লাফিয়ে শূন্যে উঠে ক্যারিয়ারের তৃতীয় ডাবল সেঞ্চুরি উদযাপন করেন মুশফিকুর রহিম। শেষটায় হাত দিয়ে কিছু একটা এঁকে দেখালেন মুশফিক।

‘ডাইনোসর উদযাপনের’ রহস্য

দিন শেষে সংবাদ সম্মেলনে জানালেন, ছেলে মায়ানের ডাইনোসর খুব পছন্দ। ছেলের জন্যই হাত দিয়ে ডাইনোসরের ছবি এঁকেই ডাবলের উদযাপন করেছেন মুশফিক।

টেস্ট ইতিহাসে বাংলাদেশের আর কোনো ব্যাটসম্যানের নেই একাধিক ডাবল সেঞ্চুরি। জিম্বাবুয়ের বিরুদ্ধে পরপর দুই টেস্টে দুইটি ডাবল সেঞ্চুরি করলেন মুশফিক। ২০১৮ সালের নভেম্বরে এই মিরপুরেই ক্যারিয়ার সেরা অপরাজিত ২১৯ রান করেছিলেন। মজার বিষয়, ঐ ম্যাচের পর টেস্টে তার কোনো সেঞ্চুরিও ছিল না।

গতকাল অপরাজিত ২০৩ রানের ইনিংস খেলে রেকর্ডও গড়েছেন মুশফিক। তামিম ইকবালকে ছাড়িয়ে টেস্ট ইতিহাসে বাংলাদেশের পক্ষে সর্বোচ্চ রানের মালিক হয়ে গেলেন এই ডানহাতি। মুশফিকের ঝুলিতে এখন ৪ হাজার ৪১৩ রান। তামিম করেছেন ৪ হাজার ৪০৫ রান।

সংবাদ সম্মেলনে বিভিন্ন প্রশ্নের জবাবে মুশফিকের উত্তর তুলে ধরা হলো পাঠকদের জন্য।

ডাবল সেঞ্চুরির পর আপনার উদযাপনের চিন্তা কি আগেই করা ছিল?

এইটা আমি আগে থেকে চিন্তা করি নাই। ডাবল হান্ড্রেড করার পরে, আমার ছেলে আসলে ডাইনোসরের খুব বড়ো ফ্যান। ও সবসময় ডাইনোসর দেখলে অন্যরকম সেলিব্রেশন করে। সেটাই শুধু করার চেষ্টা করছিলাম। তো আমার ডাবল সেঞ্চুরিটা ওর জন্য।

আগের দুই ডাবলের সঙ্গে তুলনা করলে কী মনে হয়?

তুলনা যদি বলেন আমি মনে করি যে, সবচেয়ে সহজ উইকেট ছিল। ব্যাটিংয়ের উইকেটটা অনেক আদর্শ। ওদের খুব বেশি যে আহামরি থ্রেট ব্রোলার ছিল না, সুইং, রিভার্স সুইং বা স্পিন করছিল এমন বোলার নেই। তাই একটু সহজ আমার কাছে মনে হয়েছে।

ডিক্লেয়ার না করলে কি ৩০০ হয়ে যেত?

তা তো অবশ্যই, ইনশাআল্লাহ? হতো। আমি আসলে আশা করি নাই এরকম ডিক্লেয়ার দিবে। আমাদের চা-বিরতির সময় ওরকম কোনো আলোচনা হয়নি। শেষ হাফ ঘণ্টার আগে জানতে পেরেছি যে, শেষ ৬ থেকে ৮ ওভারের মতো ওদেরকে দেব। আমি মনে করি যে, ভবিষ্যতে যদি এরকম সুযোগ আসে চেষ্টা করব সেটা কাজে লাগানোর। এখন পর্যন্ত যেটা হয়েছে দল ভালো একটা পজিশনে আছে।

দেশের হয়ে প্রথম ৩০০ করার স্বপ্ন কি দেখেন?

দেখেন আমি যখন সর্বশেষ জিম্বাবুয়ের সঙ্গে করেছিলাম তারপর কেউ একজন প্রশ্ন করেছিল ৩০০ রান সম্ভব কি না? আমি মনে করি যে অবশ্যই সম্ভব। টপ অর্ডারে যারা ব্যাটিং করে সবার জন্যই সম্ভব। ভবিষ্যতে যদি আরো সুযোগ থাকে অবশ্যই হবে। আর শুধু একটা না, বিশ্ব ক্রিকেটে দেখেন একটা, দুইটা না অনেক ট্রিপল সেঞ্চুরি আছে। তারা যদি করতে পারে আমাদের বাংলাদেশি ব্যাটসম্যানরা কেন করতে পারবে না।

তামিমকে টপকে টেস্টে দেশের সর্বোচ্চ রান সংগ্রাহক এখন আপনি, এটা জানতেন…….

এটা এখনো আমি জানি না। ও জানে, ও আসলে সবকিছুই জানে। ও হয়তো কিছু একটা বলতে পারে। বাংলাদেশে আমার সবচেয়ে প্রিয় ব্যাটসম্যান তামিম ইকবাল। ওর সঙ্গে সবসময় একটা প্রতিযোগিতা থাকে আমার। স্বাস্থ্যকর প্রতিযোগিতা। ও আমাকে অনেক প্রেরণা দেয়, আমিও করি। আমি মনেপ্রাণে চাই, ও যেন হাই স্কোরার হয়। এটাও চাই যে—ওর চেয়ে এক রান হলেও যেন বেশি করতে পারি।

বাংলাদেশের সেরা ৫ ইনিংস

রান ব্যাটসম্যান প্রতিপক্ষ ভেন্যু সাল

২১৯* মুশফিকুর রহিম জিম্বাবুয়ে ঢাকা ২০১৮

২১৭ সাকিব আল হাসান নিউজিল্যান্ড ওয়েলিংটন ২০১৭

২০৬ তামিম ইকবাল পাকিস্তান খুলনা ২০১৫

২০২* মুশফিকুর রহিম জিম্বাবুয়ে ঢাকা ২০২০

২০০ মুশফিকুর রহিম শ্রীলঙ্কা গল ২০১৩


শর্টলিংকঃ