তানোরে ৯ মাসে ক্লাস হয় ৫ দিন!


সাইদ সাজু, তানোর :

চলতি বছরের জানুয়ারী হতে অক্টোবর পর্যন্ত মাল্টিমিডিয়া প্রজেক্টর ব্যবহার করে ৯ মাসে মাত্র ৫ দিন ক্লাস হয়েছে তানোর পৌরসভা স্কুলে। প্রজেক্টর  থাকলেও ব্যবহার করেন না শিক্ষকরা।  মাস শেষে শিক্ষার্থীদের নিয়ে ছবি তুলে প্রধানমন্ত্রীর ড্যাশবোর্ডে পাঠানো হয় নিয়মিত। এমনটি জানা গেছে তানোরসহ উপজেলার বিভিন্ন স্কুল ঘুরে।

রাজশাহীর  তানোর উপজেলায় ১৪টি কলেজ, ৫৯টি উচ্চ বিদ্যালয় ও ২৮টি মাদ্রাসার মধ্যে ৭৮টি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে মাল্টিমিডিয়া প্রজেক্টর রয়েছে। কিন্তু আধুনিক তথ্যপ্রযুক্তিভিত্তিক মাল্টিমিডিয়া প্রজেক্টরে ক্লাস নেয়ার সব উপকরণ থাকা সত্বেও উপজেলার স্কুল, কলেজ ও মাদ্রাসাগুলো চলছে আগের নিয়মেই। ফলে শিক্ষার্থীরা যেমন তথ্যপ্রযুক্তি নির্ভর শিক্ষা থেকে বঞ্চিত হচ্ছে, তেমনি প্রজেক্টরগুলো অকেজো হয়ে যাচ্ছে। এ জন্য উপজেলা প্রশাসনের কর্মকর্তারা দায়ী করেছেন সংশ্লিষ্ট শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের শিক্ষকদের। উপজেলা নির্বাহী অফিসার ও উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তা সূত্রে জানা গেছে।

সরেজেমিনে দেখা যায়, কয়েকটি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান পুরনো আদলে ক্লাস নিচ্ছেন।  শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীরাই বলতেই পারে না যে ওই বিদ্যালয়ে মাল্টিমিডিয়া প্রজেক্টর রয়েছে। লোক দেখানোর জন্য প্রজেক্টরের ব্যবহার করা হয়।  ক্লাস না হলেও প্রধানমন্ত্রীর ড্যাশবোর্ডে নিয়োমিত তথ্য প্রেরণ করছে অধিকাংশ বিদ্যালয়।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক শিক্ষার্থীরা জানায়, প্রতিমাসে বিদ্যাপিঠের বিদ্যুৎবিল বাবদ নেয়া হয় বিশ টাকা, স্কাউট ফি পনের টাকা, পরিক্ষা ফি পাঁচশ টাকা ও বোর্ড ফি চারশ টাকা। এরসঙ্গে বেতন তো রয়েছেই। এভাবে বিভিন্ন পরিক্ষা ফি ও বেতন বাবদ বছরে প্রত্যেক শিক্ষার্থীর নিকট থেকে প্রায় এক হাজার টাকার উপরে আদায় করা হচ্ছে।

তানোর পৌরসভা উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক রবিউল ইসলাম বলেছেন, বিদ্যালয়টি প্রতিষ্ঠার প্রায় বিশ বছর ধরে বেতন হয়নি অনেক শিক্ষকের। এজন্য চাপ দিয়ে কিছু বলা যায় না। অনেক শিক্ষকের মাল্টিমিডিয়া প্রজেক্টরে ক্লাশ নেয়া ব্যাপারে তার কোন ধারণা নেই। তবে, একজন শিক্ষককে আইসিটি (তথ্য যোগাযোগ প্রযুক্তি) প্রশিক্ষণ দেয়া হয়েছে। ওই শিক্ষক নিয়মিত প্রজেক্টর ক্লাস নেন কি না খোঁজ নিয়ে দেখতে হবে। পরিক্ষা ফি, সেশন ফি, বোর্ড ফি ও বেতন ইচ্ছেমতো আদায় করার ব্যাপারে কোন মন্তব্য করেননি তিনি।

উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার আমিরুল ইসলাম জানান, বিদ্যপিঠগুলোর প্রধানরা পরিক্ষা ফি, সেশন ফি, বোর্ড ফি ও বেতন ইচ্ছেমতো আদায় করতে পারবেন না। এনিয়ে অভিযোগ পাওয়া গেলে ব্যবস্থা নেয়া হবে। তবে, প্রত্যেক শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানকেই মাল্টিমিডিয়া প্রজেক্টরের মাধ্যমে ক্লাস নিতে একাধিকবার নির্দেশ দেয়া হয়েছে। সব উপকরণ থাকা সত্বেও যে সকল শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান মাল্টিমিডিয়া প্রজেক্টরের ক্লাস নিচ্ছে না তাদের বিরুদ্ধে তদন্ত করে বিধি মোতাবেক ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলেও জানান তিনি।


শর্টলিংকঃ