নওগাঁয় ছোট যমুনা নদীতে ডুবে রুয়েট শিক্ষার্থীর মৃত্যু


কাজী কামাল হোসেন, নওগাঁ :
নওগাঁ ছোট যমুনা নদীতে গোসল করতে গিয়ে রুয়েটের এক মেধাবী শিক্ষার্থীর মৃত্যু হয়েছে ঐ শিক্ষার্থীর মরদেহ উদ্ধারে শুক্রবার দ্বিতীয় ধাপে রাজশাহী ফায়ার সার্ভিসের দু’জন ডুবুরী অভিযান চালিয়ে যাচ্ছেন। শুক্রবার দুপুরে এ রিপোর্ট লেখা পর্যন্ত মরদেহ উদ্ধার করা সম্ভব হয়নি।

নওগাঁ সদর থানা ও পরিবারের সুত্রে জানা গেছে, নওগাঁ শহরের কোমাইগাড়ি পূর্ব পাড়ার দরিদ্র সিরাজুল ইসলামের পুত্র শাফি মাহমুদ রিফাত রাজশাহী ইউনিভার্সিটি অব ইঞ্জিনিয়ারিং এন্ড টেকনোলজি (রুয়েট)-এর চুড়ান্ত বর্ষের শিক্ষার্থী।

অত্যন্ত মেধাবী হওয়ায় চরম দারিদ্রতা সত্বেও পিতা খুব কষ্ট করে ছেলেকে ইঞ্জিনিয়ারিং পড়ার খরচ চালিয়ে যাচ্ছিলেন। প্রত্যাশা একটিই যে ছেলে একদিন ইঞ্জিনিয়ার হয়ে বাবার মুখ উজ্বলসহ সংসারের অভাব দুর করবে। একটি সোনালী স্বপ্নের জাল বুনে চলেছিলেন তার বাবা। কিন্তু ছোট যমুনার রুপালী জলে ডুবে সে স্বপ্ন আর প্রত্যাশার সলিল সমাধি ঘটেছে।

রিফাত ঈদের আগের দিন রাজশাহী থেকে বাড়ি আসেন। ঈদের পরদিন বৃহষ্পতিবার বেলা ১টার দিকে তার অপন চাচাতো ভাই কে ডি সরকারী উচ্চ বিদ্যালয়ের ১০ম শ্রেনীর ছাত্র উল্লাস-এর সাথে পাশেই ছোট যমুনা নদীতে গোসল করতে যান রিফাত। নদীতে গিয়ে মনে ইচ্ছা জাগে সাঁতার দিয়ে নদীর ওপার যাওয়ার। দু’জনে সাঁতার দিতে শুরু করে।

উল্লাস নদীর ওপার যেতে পারলেও রিফাত মাঝপথে আটকে যায়। উল্লাসকে ডেকে বলে সে আর যেতে পারছেনা। ক্রমেই সে পানিতে তলিয়ে যেতে থাকে। এই অবস্থা দেখে ভাইকে বাঁচাতে উল্লাস নদীর পাড়ে কলাগাছ আনতে যায়। কলাগাছ এনে আর রিফাতকে দেখতে পায়নি। ততক্ষনে সে পানির নিচে তলিয়ে গেছে।

নওগাঁ ফায়ার সার্ভিসে সংবাদ দিলে রাজশাহী থেকে দু’জন ডুবুরী এসে উদ্ধার অভিযান শুরু করেন। বৃহষ্পতিবার বেলা আড়াইটা থেকে সন্ধা ৭টা পর্যন্ত প্রথম ধাপে অভিযান চালিয়ে মরদেহ উদ্ধার করতে না পেরে অভিযান স্থগিত করেন। শুক্রবার সকাল থেকে পুনরায় মরদেহ উদ্ধার অভিযান শুরু করেন ডুবুরীরা। শুক্রবার দুপুর ১২টায় এ রিপোর্ট লেখা পর্যন্ত উদ্ধার অভিযান অব্যাহত ছিল তখন পর্যন্ত রিফাতের মরদেহ উদ্ধার করা সম্ভব হয়নি।

এলাকার সকল মানুষ বলেছেন রিফাত একদিকে ছিলেন যেমন মেধাবী অন্যদিকে খুবই ভদ্র। সকলেই তাকে খুব ভালোবাসতেন। যার ফলে এলাকায় নেমে এসেছে দারুন শোকের ছায়া।


শর্টলিংকঃ