পদ্মাপাড়ের উন্মুক্ত লালনশাহ্ পার্ক ইজারা দিচ্ছে রাসিক


বিশেষ প্রতিবেদক :

 

নিজেরা রক্ষণাবেক্ষণ করতে না পারায় এবার লালন শাহ্ পার্ক ইজারা দিতে যাচ্ছে রাজশাহী সিটি কর্পোরেশন (রাসিক)। ২/১মাসের মধ্যেই পার্কটি বেসরকারীখাতে ছেড়ে দেয়া হবে। এর আগেও এমন উদ্যোগ নেয়া হয়েছিল। তবে নাগরিক সমাজের সমালোচনার মুখে সিদ্ধান্ত থেকে সরে আসে রাসিক।

রাজশাহী সিটি কর্পোরেশনের দেড় কোটি টাকার লালন শাহ্ পার্ক দখল করে চলছে গরুর খামার। নজরদারি না থাকায় স্থানীয়রা অবাধেই গড়ে তুলেছে বসতিও। ফলে জৌলুস হারিয়ে পার্কটির এখন পরিত্যক্ত অবস্থা। তবে নিরুপায় হলেও প্রতিদিনই পদ্মাপাড়ের সৌন্দর্যপিয়াসীরা ভীড় জমান এখানে। রক্ষণাবেক্ষণ করতে না পেরে এখন পার্কটি ইজারা দেয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে সিটি কর্পোরেশন।

 

বিনোদনপ্রেমীদের জন্য নগরীর পাঠানপাড়া এলাকায় পদ্মা নদীর ধারে পরিত্যক্ত জায়গায় দৃষ্টিনন্দন পার্ক গড়ে তোলার পরিকল্পনা গ্রহণ করেন তৎকালীন সিটি মেয়র এএইচএম খায়রুজ্জামান লিটন। প্রায় দেড় কোটি টাকা খরচে এই লালন শাহ্ পার্কটি  নির্মাণ করে সিটি কর্পোরেশন। পার্কটি উদ্বোধন করা হয় ২০১৩ সালে। তবে কিছুদিন না যেতেই পার্কের ভেতরের বেশকিছু অংশ দখল হয়ে যায়। সেখানে গড়ে উঠেছে কয়েকটি গরুর খামার। খামারীদের মধ্যে কয়েকজন নারীও রয়েছেন। তারা জানান, জীবিকার তাগিদেই তারা পদা্মাপাড়ে গাভী পালন করে দুধ বিক্রি করেন। এখান থেকে উচ্ছেদ করা হলে জীবিকার পথও তাদের বন্ধ হয়ে যাবে।

 

রাসিক জানায়, পার্কে এক হাজার ১৩২ বর্গমিটার আয়তনের একটি মুক্তমঞ্চ,  ফুডকোর্ট, দুটি কফিশপ ও দু’হাজার ৫৫৮ দশমিক ৮৫ বর্গমিটার দীর্ঘ হাঁটার রাস্তা নির্মাণ করা হয়। কিন্তু দোকানগুলো চালুর কোনো খবর নেই এখনো। এরইমধ্যে চুরি হয়ে গেছে বিভিন্ন সরঞ্জাম। ময়লা আর আবর্জনার স্তুপে ঢাকা পড়েছে পার্কের সব সৌন্দর্যই। বিকেলে লালন শাহ্ পার্কে বেড়াতে আসা সোহেল আফগান বলেন, ‘রাজশাহীতে এমনিতেই বিনোদনের সুযোগ কম। তাই সিটি মেয়র লিটন ভাই এই পার্কটি করেছিলেন। কিন্তু এই পার্কটি এখন কাজে আসে নি।  এটি দুঃখজনক।

এ অবস্থায় পার্কের সৌন্দর্য ফেরাতে উদ্যোগ নিয়েছে সিটি কর্পোরেশন। তবে নিজস্ব ব্যবস্থাপনায় নয়, এবার ব্যক্তিমালিকানার প্রতিষ্ঠানকে এটি ইজারা দেয়া হবে। রাজশাহী সিটি কর্পোরেশনের প্রধান প্রকৌশলী আশরাফুল হক জানান, স্থানীয়দের উৎপাতের কারণে পার্কটি রক্ষণাবেক্ষণ কঠিন হয়ে পড়েছে। তাই এটি জাঁকজমকপূর্ণ করতে প্রাইভেট প্রতিষ্ঠানকে দিতে চাই। এজন্য এরইমধ্যে সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে। শিগগিরই চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত হবে।

 

এবিষয়ে রাজশাহী রক্ষা সংগ্রাম পরিষদের সাধারণ সম্পাদক জামাত খান বলছেন, নদীপাড়ের বিনোদনকেন্দ্র সবার জন্যই উন্মুক্ত রাখা উচিত। কারণ, এখানে সব শ্রেণী ও  পেশার মানুষ আসেন। কিন্তু বেসরকারীখাতে ইজারা দিয়ে টিকিট চালু করা হলে সাধারণ মানুষের বিনোদনের জায়গা সংকুচিত হয়ে পড়বে।

 

 


শর্টলিংকঃ