পাতায়া থেকে যেভাবে কোরাল আইল্যান্ডে যাবেন


এম এ আমিন রিংকু:

দেশের বাইরে ঘুরতে যেতে চাইলে ভ্রমণপিপাসুদের মনে সবার আগে যে গন্তব্যের কথা মনে আসে সেটি থাইল্যান্ড। ছবির মত করে সাজানো এই দেশটিতে গিয়ে আপনি হারিয়ে যাবেন অন্য জগতে।থাইল্যান্ডের দর্শনীয় অনেক জায়গা আছে। পাতায়া এর মধ্যে অন্যতম।

কি নেই এখানে, সমুদ্রের নীল জল আপনার সব ক্লান্তি ধুয়ে মুছে সাফ করে দেবে। আর রাতের পাতায়া কি অসাধারণ মনমুগ্ধকর নিজ চোখে না দেখলে আপনাকে হয়তো বোঝানো যাবে না। আর নানা রঙ আর পদের নতুন নতুন খাবারের অসাধারণ স্বাদ আপনাকে নিয়ে যাবে অন্য এক ভুবনে।

আর কথা না বাড়িয়ে আজ আমরা আজ স্পিডবোটে যাব কোরাল আইল্যান্ডে (Coral Island)।  আমরা খুব সকাল সকাল রওনা দিয়েছিলাম। আর আগের দিন সন্ধ্যায় প্যাকেজ কনফার্ম করে রেখেছিলাম। সকাল আটটার মধ্যে নাস্তা শেষ করে সোজা বিচে। স্পিড বোটে কোরাল আইল্যান্ড পৌঁছাতে ৪০ মিনিট মত সময় লাগে। মাঝপথে রয়েছে প্যারাগ্লাইডিং স্টেশন। চাইলে ৫০০ থাই বাথ দিয়ে প্যারাসুটে আকাশ ভ্রমণের অসাধারণ অভিজ্ঞতা নিতে পারেন।

সাত মিনিট মত থাকা যায় আকাশে। তবে এই ৭ মিনিটে আপনার জীবনের রোমাঞ্চকর সাত মিনিট হতে রবে। আকাশ থেকে সুবিশাল সাগরের বুকে তাকালে পানি গুলো রূপালী মনে হয়। তবে সেলফি স্টিকে ছবি তোলার চেষ্টা না করাই ভালো। নিচে আপনার ছবি তোলার জন্য অনেকে দাঁড়িয়ে আছে। ফিরতি পথে স্পিডবোট থেকে নেমে দেখবেন আপনার ছবি রেডি হয়ে আছে।


১০০ থাই বাথ দিয়ে বাঁধাই করা ছবি পেয়ে যাবেন। প্যারাগ্লাইডিং শেষে আরো ২০ মিনিট সময় লাগবে কোরাল আইল্যান্ড পৌঁছাতে। এই ২০ মিনিটে সমুদ্রের প্রকৃত রূপ আর সৌন্দর্য আপনি উপভোগ করতে পারবেন। একটু পরে পরে ছোট ছোট পাথরের দীপ। স্পিড বোটের গতি আপনার আপনাকে মনে করিয়ে দিবে ফর্মুলা ওয়ান রেস কারের কথা। তবে ছবি তোলার সময় খুব সাবধান। খুব শক্ত করে ধরে না রাখলে সলিল সমাধি হবে আপনার প্রিয় মোবাইলের।

আর হ্যাঁ, এটা যদি আপনার সমুদ্রে প্রথমবারের মতো যাত্রা হয় তবে অবশ্যই নাকে রুমাল বেঁধে রাখার চেষ্টা করবেন। এছাড়া স্পিড বোটের গতি আর সমুদ্রের নোনা বাতাস আপনার অস্বস্তির কারণ হয়ে দাঁড়াবে। আর চেষ্টা করবেন কিবোর্ডে পেছনের দিকের সিটে বসার। তাহলে ছবি তুলে অথবা ভিডিও করে স্বচ্ছন্দ বোধ করবেন।

আর হ্যাঁ যাবার আগে অবশ্যই স্পঞ্জ স্যান্ডেল, সটস, এক্সট্রা টি-শার্ট আর তোয়ালে নিতে ভুলবেন না। সাথে পানি চিপস নিয়ে নিতে পারেন। আইল্যান্ডে প্রতিটা জিনিসের দাম প্রায় দ্বিগুণ।আইল্যান্ডে নানাধরনের ওয়াটার স্পোর্টসের ব্যবস্থা আছে। সবচেয়ে ভালো আইল্যান্ড এ গিয়ে আপনার ইচ্ছামত প্যাকেজ পছন্দ করে নেওয়া। স্নোর্কলিং, জেট স্কি, ব্যানানা বোট নানা ধরনের ওয়াটার স্পোর্টসে নিজের শারীরিক সক্ষমতা কে ঝালিয়ে নিতে পারেন।


দুপুরের খাবার যদি আপনার প্যাকেজের ইনক্লুড থাকে তাহলে আপনার ট্যুর গাইড আপনাকে নিদৃষ্ট হোটেলে নিয়ে যাবে। আর নিজে নিজে খেতে চাইলে সে ব্যবস্থাও রয়েছে। পছন্দমত হোটেলে গরম গরম সি ফুডে রসনা তৃপ্ত করতে পারবেন ১০০ থেকে দেড়শ থাই বাথের মধ্যে। ২০ বাথ দিয়ে ছাতা সহ চেয়ার ভাড়া করতে পারবেন। দর্শক আইল্যান্ডে এক ধরনের কাঁচা আম পাওয়া যায়। মিস করবেন না অবশ্যই।

দর্শক আইল্যান্ড থেকে ফিরতে হয় সন্ধ্যার আগেই। আর থাকতে চাইলে যাওয়ার আগে অবশ্যই কটেজ বুক করে যাবেন। ফেরার পথে নির্দিষ্ট কোম্পানির বোটেই আপনাকে ফিরে আসতে হবে। সুন্দরী কোরাল আইল্যান্ড ছেড়ে আসতে মোটেই ভাল লাগবে না আপনার। কিন্তু না এসে উপায় কি বাকি দর্শনীয় স্থানগুলোও তো শেষ করতে হবে। সৈকতে নেমে এবার হোটেলে ফেরার পালা।

আপনি যদি প্যাকেজ এগিয়ে থাকেন তাহলে সংশ্লিষ্ট ট্যুর অপারেটর আপনাকে হোটেল পর্যন্ত পৌঁছে দিবে । রুমে ফিরে সন্ধ্যায় ঢু মারতে পারেন ওয়াকিং স্ট্রিটে।

ভিডিও দেখুন এখানে


শর্টলিংকঃ