পুঠিয়ায় সাবেক এমপির এপিএস ও তার স্ত্রীর ওপর সন্ত্রাসী হামলা


পুঠিয়া প্রতিনিধি:
রাজশাহী-৫ (পুঠিয়া-দুর্গাপুর) আসনের বর্তমান ক্ষমতাসিন দল আ’লীগের সাবেক এমপি আবদুল ওয়াদুদ দারা’র ব্যক্তিগত সহকারী (এপিএস) বদিউজ্জামান (৩৫) ও তার স্ত্রী শ্যামলী খাতুন (৩০) সন্ত্রাসী হামলার শিকার হয়েছেন।

 

তারা দাবী করছেন, স্থানীয় যুবলীগের এক প্রভাবশালী নেতার লোকজন তার কাছে সাড়ে ৩ লাখ টাকা চাঁদা দাবী করেন। ওই চাঁদার টাকা না দেয়ায় তাদের ওপর হামলা করা হয়েছে। স্থানীয় লোকজন তাদেরকে দু’জনকেই গুরুতর আহত অবস্থায় উদ্ধার করে রাজশাহী মেডিকেল কলেজ (রামেক) হাসপাতালে ভর্তি করেছেন।

রোববার (২০ অক্টোবর) দুপুর দেড়টার দিকে উপজেলার বানেশ্বর বাজারের ধানহাটা নামক স্থানে এ হামলার ঘটনা ঘটেছে। ঘটনার পর তাৎক্ষণিকভাবে ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছে পুঠিয়া থানা পুলিশ। বদিউজ্জামান বদি জেলার দুর্গাপুর উপজেলার ঝালুকা ইউনিয়নের ভাঙ্গুরপাড়া গ্রামের বাসিন্দা ও ঝালুকা ইউনিয়ন আ.লীগের সভাপতি আকবর আলীর ছেলে।

স্থানীয় আ’লীগের নেতাকর্মীরা বলেন, তিনি স্ত্রীকে নিয়ে মোটরসাইকেল যোগে শশুড়বাড়ি বানেশ্বর-তাতারপুর থেকে ধানহাটা সড়ক হয়ে ফিরছিলেন। বদি গত ১০ বছর পুঠিয়া দুর্গাপুরের সাবেক সাংসদ আব্দুল ওয়াদুদ দারা’র একান্ত ব্যক্তিগত সহকারী হিসেবে কাজ করেছেন। বর্তমানে তিনি বানেশ্বর সরকারী কলেজে শিক্ষকতা পেশায় কর্মরত আছেন এছাড়াও তার স্ত্রী আহত শ্যামলী খাতুন একজন’ সরকারী কর্মকর্তা হিসাবে চাকুরি করেন।

প্রত্যক্ষদর্শীই আলী বলেন, বদি মোটরসাইকেল যোগে তার স্ত্রীকে নিয়ে বানেশ্বর ধানহাটা নামক এলাকায় পৌছালে স্থানীয় দুই যুবক তার গতিরোধ করেন। সে সময় মোটরসাইকেলের পেছনে একজন নারীও বসা ছিলেন। হঠাৎ মোটরসাইকেল আরোহী ব্যক্তিটিকে তারা মারধর শুরু করে এ সময় আশে পাশে থেকে আরো কয়েকজন যুবক এসে তাকে এলোপাথারি মারধর শুরু করে। তার সঙ্গে থাকা নারী তাদের থামানোর চেষ্টা করলে তিনিও মার খেয়েছেন। পরে তিনি একটি দোকানের ভেতরে গিয়ে আশ্রয় নেন।

আহতবদিউজ্জামান মুঠোফোনে জানান, দুই যুবক তার গতিরোধ করে বলেন, বানেশ্বর কলেজে বিনা টাকায় চাকরি পেয়েছিস এখন সাড়ে ৩ লাখ টাকা দিয়ে যা। বলেই তার মোটরসাইকেলের চাবি ছিনিয়ে নেয়। তিনি তাদের বলেন, আমরা রাস্তার মাঝখানে না দাড়িয়ে সাইডে গিয়ে কথা বলি। ওমনি ওই সন্ত্রাসীরা আমাকে কিল ঘুষি দিতে শুরু করে। এর মধ্যে আরো ৫/৬ জন যুবক এসে আমাকে মারতে শুরু করে। সে সময় আমার স্ত্রী তাদের বাঁধা দিতে গেলে তার উপরেও হাত তুলেছে। বদি বলেন, কোনো উপায় না পেয়ে আমার স্ত্রী আমাকে পাশের একটি দোকানের ভেতরে পাঠিয়ে দেয়।

তিনি অভিযোগ করে বলেন, জেলা যুবলীগের সহ-সভাপতির লোকজন আমার কাছে সাড়ে ৩ লাখ টাকা চাঁদা দাবী করেছে। এ ব্যপারে তিনি থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের করবেন বলেও জানিয়েছেন। নাম প্রকাশ না করার শর্তে স্থানীয় একাধিক ব্যবসায়ীরা বলেন, যারা এ ঘটনাটি ঘটিয়েছে তারা বানেশ্বর এলাকার চিহ্নিত যুবলীগের নেতাকর্মী। এ ঘটনাকে কেন্দ্র করে বানেশ্বর জুড়ে বর্তমান এমপির অনুসারী ও সাবেক এমপির অনুসারীদের মধ্যে চরম উত্তেজনা বিরাজ করছে।

বিষয়টি নিশ্চিত করে পুঠিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) রেজাউল ইসলাম বলেন, বানেশ্বর এলাকায় কিছু ছেলে বদিউজ্জামান নামের এক ব্যক্তিকে মারধর করেছে। এসময় তার স্ত্রী তাদের বাঁধা দিতে গিয়ে তিনিও আহত হন। তাদের রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। ঘটনাস্থল পরিদর্শন করা হয়েছে বর্তমানে পরিস্থিতি শান্ত রয়েছে।


শর্টলিংকঃ