পুত্রবধূকে হত্যার পর দোষ চাপালো জ্বীন-ভূতের ওপর


ইউএনভি ডেস্ক:
নীলফামারীতে চাঞ্চল্যকর মিনা রানী ঋষি ওরফে সাথী (২০) হত্যাকাণ্ডের ২৪ ঘণ্টার মধ্যেই রহস্য উদঘাটন এবং জড়িত তিনজনকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। গ্রেফতার ব্যক্তিরা আদালতে স্বীকারোক্তি মূলক জবানবন্দিও দিয়েছেন।

পুত্রবধূকে হত্যার পর দোষ চাপালো জ্বীন-ভূতের ওপর

শনিবার দুপুরে নীলফামারী পুলিশ সুপার কার্যালয়ের সম্মেলন কক্ষে অনুষ্ঠিত সংবাদ সম্মেলনে এ হত্যাকাণ্ডের রহস্য উদঘাটন এবং মামলার বিস্তারিত তথ্য জানান পুলিশ সুপার মোহাম্মদ মোখলেছুর রহমান (বিপিএম, পিপিএম)।

এ সময় উপস্থিত ছিলেন অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (প্রশাসন) এবিএম আতিকুর রহমান, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (নীলফামারী সার্কেল) রহুল আমিন, নীলফামারী সদর থানা পুলিশের ওসি মোমিনুল ইসলাম মোমিন, জেলা গোয়েন্দা পুলিশের অফিসার ইনচার্জ (ওসি) আফজালুল ইসলাম, নীলফামারী থানা পুলিশের পরিদর্শক (তদন্ত) মাহমুদ-উন-নবী ও ডিবি পুলিশ পরিদর্শক আজমিরুজ্জামান উপস্থিত ছিলেন।

সংবাদ সম্মেলনে পুলিশ সুপার জানান, গত বৃহস্পতিবার (২৮মে) সকাল সাড়ে সাতটার দিকে খবরের ভিত্তিতে সদরের খোকশবাড়ি ইউনিয়নের হালিরবাজার এলাকার মনির উদ্দিন উচ্চ বিদ্যালয়ের পেছন থেকে এক নারীর অর্ধ উলঙ্গ লাশ উদ্ধার করা হয়।

মিনা দিনাজপুরের বীরগঞ্জ উপজেলার শিবরামপুর ইউনিয়নের গোবিন্দপাড়া এলাকার মৃত. ভোম্বল ঋষীর মেয়ে। দুই বছর আগে খোকশাবাড়ি ইউনিয়নের হালিরবাজার এলাকার গণেশ রায়ের ছেয়ে তিমোথিয়ের সাথে বিয়ে হয় তার। বিয়ের পর থেকে পারিবারিক অশান্তি লেগেই ছিল তাদের।

এ নিয়ে বিভিন্ন সময় গ্রাম্য সালিসও হয়। তদন্তে দেখা গেছে, স্বামীর অন্য মেয়ের সাথে সম্পর্ক, সন্তান না নেয়ার অনিহা এবং শ্বশুরের কুপ্রস্তাবের কারণে বুধবার (২৭ মে) রাতে বাবার বাড়িতে যাওয়ার উদ্দেশ্যে স্বামীর বাড়ি থেকে বের হয়ে যায় মিনা। এরই মধ্যে স্বামী তিমোয়িথ, শাশুড়ি শিউলি ও কাকি শাশুড়ি মিনতি রানী ঘটনাস্থল থেকে মিনাকে ধরে মুখে ও যৌনাঙ্গে বালু-কাদা ঢুকিয়ে দিয়ে শ্বাসরোধ করে হত্যা করে।

পুলিশ সুপার আরও জানান, ঘটনার সাথে জড়িতরা অত্যন্ত চতুরভাবে গৃহবধূকে হত্যা করেও খোঁজাখুঁজি করতে থাকেন। তার জ্বীন-ভূতের আছর রয়েছে বলেও ভিন্ন খাতে প্রচারণা চালায়।

ঘটনার পর থেকে নীলফামারী থানা পুলিশ, জেলা পুলিশের একটি টিম, সিআইডির তদন্ত শেষে নিশ্চিত হওয়া যায় হত্যাকাণ্ডের সাথে তারাই জড়িত এবং পারিবারিক কারণেই তাকে হত্যা করা হয়। হত্যাকাণ্ডের এ ঘটনায় মিনার ভাই সুকুমার ঋষী বাদী হয়ে একটি মামলা করেছেন।

পুলিশ সুপার জানান, আদালতে স্বামী, শাশুড়ি ও কাকি শাশুড়ি হত্যায় জড়িত থাকার কথা স্বীকার করেছেন। শুক্রবার বিকেলে আসামিদের আদালতের মাধ্যমে জেলা কারাগারে প্রেরণ করা হয়েছে বলে জানান তিনি। এছাড়াও জড়িত শ্বশুর গণেশ রায়কেও গ্রেফতারের চেষ্টা চলছে।


শর্টলিংকঃ