বিজিএমইএ ভবন ভাঙ্গা হবে আধুনিক প্রযুক্তিতে


ইউএনভি ডেস্ক:

আধুনিক প্রযুক্তি দিয়ে বিজিএমইএ ভবন ভেঙে ফেলা হবে বলে জানিয়েছেন গৃহায়ণ ও গণপূর্তমন্ত্রী জনাব শ ম রেজাউল করিম। তিনি বলেছেন, ‘কোনোভাবেই ম্যানুয়াল পদ্ধতিতে নয়, আধুনিক নির্মাণ প্রযুক্তির ব্যবহার করেই বিজিএমইএ ভবনটিকে ভেঙে ফেলা হবে। টেন্ডারে অংশগ্রহণকারীরা আধুনিক প্রযুক্তির ব্যবহারে উপযুক্ত কি না সেটা খতিয়ে দেখা হবে।


বুধবার সকালে সচিবালয়ের নিজ দফতরে বিজিএমইএ ভবন ভাঙার সর্বশেষ অবস্থা বিষয়ে সাংবাদিকদের বিফ্রিংকালে গৃহায়ণ ও গণপূর্তমন্ত্রী এসব কথা বলেন।

তিনি বলেন, আমরা প্রথমে দেশীয় প্রতিষ্ঠানকে অগ্রাধিকার দিতে চাই। যদি না থাকে তাহলে আমরা বাইরের প্রযুক্তিসমৃদ্ধ প্রতিষ্ঠান নিয়ে আসব। যারা বাইরে এ জাতীয় নির্মাণ প্রযুক্তিতে দক্ষ তাদের সঙ্গে কথা হয়েছে। কোনোভাবেই মানুষের জীবন ও মালের ঝুঁকিপূর্ণ পদ্ধতিতে এই ভবন ভাঙা হবে না’।

গৃহায়ণ ও গণপূর্তমন্ত্রী বলেন, ‘সর্বোচ্চ আদালতের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী অবৈধভাবে নির্মিত বিজিএমইএ ভবন ভেঙে ফেলার সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হয়েছে। সুপ্রিমকোর্টের রায়ের আলোকে আমরা সেটাকে ভেঙে ফেলার কার্যক্রম গ্রহণ করেছি।

গতকাল মঙ্গলবার (১৬ এপ্রিল) বিজিএমইএ ভবন ভেঙে ফেলার আনুষ্ঠানিক কার্যক্রম আমরা শুরু করেছি। ইতিমধ্যে ভবনটিকে আমাদের দখলে নিয়েছি। ভবনে অন্য কারো প্রবেশ নিষিদ্ধ করা হয়েছে। ভবনের সেবামূলক সংযোগ বিচ্ছিন্ন করা হয়েছে’।

মন্ত্রী আরও বলেন, ‘এই ভবনটি ভাঙার জন্য একটি পরিবেশ তৈরি করা প্রয়োজন। ভবনটি গুঁড়িয়ে দেয়ার পর আশপাশে যেন কোনো দুর্ঘটনা না হয়, সে জন্য প্রয়োজনীয় প্রস্তুতি অর্থাৎ বিদ্যুতের লাইন অনেক দূর থেকে সরিয়ে দেয়া, পানি ও গ্যাসের লাইন দূর থেকে বিচ্ছিন্ন করে দেয়ার একটা প্রস্তুতির প্রয়োজন আছে’।

অতীতে র‌্যাংগস প্লাজা ভাঙতে গিয়ে প্রাণহানি হয়েছে উল্লেখ করে মন্ত্রী বলেন, ‘এবারে আমাদের প্রস্তুতি বিজ্ঞানসম্মত, প্রযুক্তিসম্মত। যাতে ভবন ভাঙতে গিয়ে কোনোভাবে প্রাণহানি অথবা কোনোরকম অনাকাঙ্ক্ষিত ক্ষতির মুখোমুখি যেন আমরা না হই, সে প্রস্তুতি নিয়ে আমরা এগিয়ে যাচ্ছি।

মন্ত্রী বলেন, ‘জাতীয় দৈনিকে বিজ্ঞাপন দিয়ে এ জাতীয় ইমারত ভাঙায় যারা অভিজ্ঞ তাদেরকে ২৪ এপ্রিলের মধ্যে কোটেশন দাখিল করতে অনুরোধ করা হয়েছে। আমরা আইনগত পদ্ধতি অনুসরণের স্বার্থে বিভিন্ন আগ্রহী প্রতিষ্ঠানের কাছে টেন্ডার আহ্বান করেছি। ২৪ এপ্রিলের মধ্যে টেন্ডার পেয়ে ২৫ এপ্রিলের মধ্যে আমরা সিদ্ধান্ত নেব কোন সংস্থা উপযুক্ত, যাকে দিয়ে ভবন ভাঙা সম্ভব হবে। উপযুক্ত সংস্থা না পাওয়া গেলে আধুনিক নির্মাণ প্রযুক্তির ব্যবহার করে রাজউকের পক্ষ থেকে ভবনটি উচ্ছেদের জন্য যে প্রক্রিয়া দরকার সে প্রক্রিয়ায় আমরা যাব।

মন্ত্রী আরও বলেন, ‘আমরা চাই রাষ্ট্রের চমৎকার একটি স্থাপনার মাঝে এ রকম বেআইনি একটি ভবন যেন টিকে না থাকে। দেশবাসীকে জানাতে চাই আইনের ঊর্ধ্বে কেউ নয়। যে যেখানে বেআইনি স্থাপনা নির্মাণ করবেন তাদের সবাইকে আমরা আইনের আওতায় আনতে চাই। আইনের শাসন প্রতিষ্ঠার স্বার্থে আমরা এ পদক্ষেপগুলো কার্যকর করতে চাই।

সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের উত্তরে মন্ত্রী বলেন, ‘ডিনামাইটের আকারে ভবন ভেঙে ফেলার একটি আধুনিক পদ্ধতি আছে যা কোনোভাবেই ডিনামাইট বোমা মেরে ভবন ভেঙে ফেলার পদ্ধতি নয়। এটা একটা নির্মাণ প্রযুক্তি এবং ভেঙে ফেলার একটা কৌশল’।

কবে নাগাদ এ ভবন ভেঙে ফেলা হবে এ সংক্রান্ত অপর এক প্রশ্নের উত্তরে মন্ত্রী বলেন, ‘২৫ এপ্রিলের পর এক সপ্তাহের ভেতরে বিজিএমইএ ভবন ভেঙে ফেলার কার্যাদেশ দেয়া সম্ভব হবে’।


শর্টলিংকঃ