মধ্যপ্রাচ্যে হামাস-ইসরায়েলের সংঘাতের প্রতিক্রিয়ায় বিশ্ববাজারে অপরিশোধিত তেলের দাম প্রতি ব্যারেলে ৯০ ডলার ছাড়িয়ে গেছে। সোমবার সকালে অপরিশোধিত তেলের দাম প্রতি ব্যারেলে ৯০ ডলার ছাড়িয়ে যায়। সেই সঙ্গে মার্কিন ডলার আগের মতোই শক্তিশালী, যদিও ইকুইটির বাজার ছিল কিছুটা দুর্বল। খবর রয়টার্সের।
ইসরায়েল-হামাস সংঘাতের কারণে বিনিয়োগকারীরা বিচলিত হয়ে পড়েছেন। বাজারে তার প্রভাব পড়েছে।
ইসরায়েলে হামাসের হামলার পরদিন থেকেই বিশ্ব বাজারে অপরিশোধিত তেলের দাম বাড়তে শুরু করে। এরপর তা কিছুটা কমে গত শুক্রবার আবার বৃদ্ধির ধারায় ফেরে। এরপর আজ সোমবার তা ব্যারেলপ্রতি ৯০ ডলার ছাড়িয়ে যায়। আজ সকালে ব্রেন্ট ক্রুডের দাম ব্যারেলপ্রতি ৯১ দশমিক ২০ ডলারে ওঠার পর কিছুটা কমে ৯০ দশমিক ৮৪ ডলারে নেমে আসে।
সোমবার সকালে এশিয়ার বিভিন্ন শেয়ারবাজারে সূচকের পতন হয়েছে। জাপানের নিকেই সূচক ১ শতাংশের বেশি পড়েছে; অস্ট্রেলিয়ার এসঅ্যান্ডপি/এএসএক্স ২০০ সূচকের পতন হয়েছে শূন্য দশমিক ১৫ শতাংশ। নিউজিল্যান্ডের ইকুইটি বাজারের মানদণ্ড হিসেবে পরিচিত এনজেড ৫০-এর পতন হয়েছে শূন্য দশমিক ৯ শতাংশ।
এর আগে গত সপ্তাহের শেষ কার্যদিবস শুক্রবারে সর্ব-ইউরোপীয় স্টকস ৬০০ সূচকের পতন হয়েছে শূন্য দশমিক ৯৮ শতাংশ এবং নিউইয়র্কের এসঅ্যান্ডপি ৫০০ সূচকের পতন হয় শূন্য দশমিক ৫০ শতাংশ। তবে আজ সোমবার আইএস স্টক ফিউচার্সের শূন্য দশমিক ১৮ শতাংশ উত্থান হয়েছে।
গত ৭ অক্টোবর হামলার জেরে ইসরায়েলের মুদ্রা শেকলের দর আট বছরের মধ্যে সর্বনিম্ন পর্যায়ে নেমে যায়। সেই হামলার প্রতিশোধ নিতে ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু হামাস বাহিনীকে ধ্বংস করার ঘোষণা দেন।
এদিকে মধ্যপ্রাচ্যের উত্তেজনা যেন আর না বাড়ে, সে লক্ষ্যে এখন ওই অঞ্চল সফরে রয়েছেন মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্রমন্ত্রী অ্যান্টনি ব্লিঙ্কেন। ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী নেতানিয়াহু দক্ষিণ গাজার বিভিন্ন অংশে পানি সরবরাহ চালু করতে সম্মত হয়েছেন।
আর্থিক খাতের বিশ্লেষকেরা বলছেন, পরিস্থিতি দ্রুত বদলাচ্ছে, তাই শুক্রবার যেসব হেজিং করা হয়েছে সেগুলো যে অপ্রয়োজনীয় ছিল, সে কথা এখনই বলা যাচ্ছে না।
ইরান জানিয়েছে, ফিলিস্তিনিদের সহায়তা করা তাদের দায়িত্বের মধ্যে পড়ে; স্বাভাবিকভাবেই জ্বালানি ও আর্থিক বাজার এখন ইরানের উদ্যোগের দিকে তাকিয়ে থাকবে।
এদিকে ১০ বছর মেয়াদি মার্কিন ট্রেজারি বন্ডের সুদহার সামান্য পরিবর্তিত হয়েছে, যা এখন ৪ দশমিক ৬৪ শতাংশে দাঁড়িয়েছে। গত শুক্রবার এই ১০ বছর মেয়াদি ট্রেজারি বন্ডের সুদ হার ৮ ভিত্তি পয়েন্ট কমেছে। তাই বাজারের বিনিয়োগকারীদের মধ্যে বন্ডের নিরাপত্তা নিশ্চিত করার দাবি উঠেছে।
সপ্তাহের শুরুতে গতকাল বিশ্বের বিভিন্ন মুদ্রার গতিপ্রকৃতি কিছুটা স্থিতিশীল হয়েছে। আগের সপ্তাহে যে পরিস্থিতি ছিল, সেখান থেকে কিছুটা মূলের দিকে ফিরেছে। ইউএস ডলার ইনডেক্সের মান আজ ১০৬.৫৫, যা গত শুক্রবার ১০৬.৭৯-এ উঠেছিল। ইউরোপীয় মুদ্রা ইউরোর মান ১ শতাংশ বেড়ে দাঁড়িয়েছে ১.০৫২২ ডলার।