মেয়েকে পুড়িয়ে হত্যার পর বাবার আত্মহত্যা


বরগুনার পাথরঘাটা উপজেলায় পেট্রল ঢেলে ঘরে আগুন দিয়ে সৎ মেয়েকে হত্যা ও তার মাকে পুড়িয়ে হত্যাচেষ্টার পর বেল্লাল নামের এক যুবক আত্মহত্যা করেছেন।

বুধবার দিবাগত রাত ২টার দিকে উপজেলার সদর পাথরঘাটা ইউনিয়নের রুহিতা গ্রামে বাড়িতে মা সাজেনুর বেগম (৩০) ও মেয়ে কারিমা (১০) আটকে রেখে পেট্রল ঢেলে আগুন ধরিয়ে দেয়।

এতে ঘটনাস্থলেই মেয়ে কারিমা (১০) দগ্ধ হয়ে মারা যায়। পরে বেল্লাল বাড়ি থেকে প্রায় ৪ কিলোমিটার দূরে গিয়ে একই ইউনিয়নের পূর্ব হাতেমপুর এলাকার ছৈলাতলা গ্রামে খালের পারের একটি আম গাছের সঙ্গে ফাঁস দিয়ে আত্মহত্যা করে।

বৃহস্পতিবার বেলা ১১টার দিকে পাথরঘাটা থানা পুলিশ এক অজ্ঞাত পরিচয়ের লাশ উদ্ধার করে। পরে জানা গেছে লাশটি সাজেনুরের স্বামী বেল্লালের।

কারিমা ও বেল্লালের লাশ পুলিশ উদ্ধার করে পাথরঘাটা থানায় নিয়ে আসে। বেল্লালের স্ত্রী সাজেনুর বেগমের (৩০) অবস্থা আশঙ্কাজনক হওয়ায় তাকে উন্নত চিকিৎসার জন্য বরিশাল মেডিকেলে পাঠান হয়েছে।

এদিকে সাজেনুরকে চিকিৎসক জন্য পাথরঘাটা উপজেলা প্রশাসন পক্ষ থেকে নগদ ১০ হাজার অনুদান দেয়া হয়েছে।

সাজেনুরের চাচাতো ভাই মো. ইব্রাহিম জানান, বেল্লাল হোসেনের বাড়ি বরগুনার তালতলী উপজেলার ছকিনা এলাকায়। প্রায় দেড় বছর আগে সাজেনুরের সঙ্গে বেল্লালের বিবাহ হয়। বিয়ের পর থেকেই তাদের দাম্পত্য জীবনে কলহ সৃষ্টি চলতে থাকে। এ নিয়ে স্থানীয় পর্যায় একাধিকবার সালিশও হয়েছে। বেল্লাল হোসেন মা-মেয়েকে আগুনে পুড়ে মারার হুমকি দিয়ে আসছিল।

সাজেনুরের ফুফাতো বোন ফাতেমা বেগম বলেন, আমার বোন সাজেনুর অসুস্থ অবস্থায় বলেছেন ঘটনার সময় রাতে ঘর থেকে বাহিরে যাওয়ার কথা বলে বের হয়। এর কিছুক্ষণের মধ্যেই দাউ দাউ করে আগুন জ্বলতে শুরু করে।

এ সময় সাজেনুর ও তার মেয়ে কারিমা আক্তার ঘর থেকে বের হতে চাইলে মা-মেয়েকে রামদা দিয়ে ধাওয়া করলে ঘর থেকে আর মা-মেয়ে বের হতে পারেননি। এতে ঘটনাস্থলেই ঘরের মধ্যে আগুনে পুড়ে মেয়ে কারিমা মারা যান। আর মা সাজেনুর শরীরের ৮০ ভাগই পুড়ে যায়।

পাথরঘাটা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের কর্তব্যরত চিকিৎসক ডা. মো. জিয়া উদ্দিন বলেন, সাজেনুরের অবস্থা আশঙ্কাজনক। তার শরীরের ৮০ ভাগই পুড়ে গেছে। সাজেনুরের অবস্থা আশঙ্কাজনক হওয়ায় উন্নত চিকিৎসার জন্য বরিশাল পাঠিয়ে দেয়া হয়েছে।

পাথরঘাটা থানার ওসি হানিফ শিকদার বলেন, বেল্লাল রাতে সৎ মেয়ে ও স্ত্রীকে হত্যার উদ্দেশ্যে ঘরে আগুন দিয়ে পালিয়ে এসে নিজেও আত্মহত্যা করে। ঘটনাস্থল থেকে সৎ মেয়ে ও বাবার লাশ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য বরগুনা মর্গে পাঠানো হয়েছে।

পাথরঘাটা উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ইউএনও) মো. হুমায়ুন কবির বলেন, সাজেনুরকে উন্নত চিকিৎসার জন্য উপজেলা প্রশাসন থেকে নগদ ১০ হাজার টাকা দেয়া হয়েছে। সুত্র:যুগান্তর


শর্টলিংকঃ