যেসব বিষয়ে দুদকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হবে স্বাস্থ্যের সাবেক ডিজিকে


ইউএনভি ডেস্কঃ

তলবে সাড়া দিয়ে দুর্নীতি দমন কমিশনে (দুদক)গেছেন স্বাস্থ্য অধিদফতরের সাবেক মহাপরিচালক (ডিজি) অধ্যাপক ডা.মোহাম্মদ আবুল কালাম আজাদ। স্বাস্থ্য খাতের নানান অনিয়ম নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য গত ৬ আগস্ট আজাদসহ ৫ কর্মকর্তাকে ‘জরুরি’ তলব করে দুদক।

তলবে সাড়া দিয়ে বুধবার সকাল ১০টার দিকে রাজধানীর সেগুনবাগিচায় দুদকের প্রধান কার্যালয়ে যান স্বাস্থ্যের আলোচিত-সমালোচিত সাবেক ডিজি। তবে তখন পর্যন্ত বাকি চার কর্মকর্তা এসে পৌঁছাননি।ইতিমধ্যে আবুল কালাম আজাদকে জিজ্ঞাসাবাদ শুরু করেছে দুদক।মূলক রিজেন্ট হাসপাতালের করোনা টেস্ট কেলেংকারি ও স্বাস্থ্য অধিদফতরের কেনাকাটায় নানা অভিযোগ সম্পর্কে আবুল কালাম আজাদকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হবে।

দুদক পরিচালক মীর মো. জয়নুল আবেদীন শিবলী স্বাক্ষরিত চিঠিতে আবুল কালাম আজাদকে আগামী ১২ আগস্ট এবং আরেক পরিচালক শেখ মো. ফানাফিল্যা স্বাক্ষরিত চিঠিতে তাকে ১৩ আগস্ট কমিশনে হাজির হতে বলা হয়েছে।

শেখ মো. ফানাফিল্যা স্বাক্ষরিত আরেক চিঠিতে স্বাস্থ্য অধিদফতরের সাবেক পরিচালক ডা. মো. আমিনুল হাসান, বর্তমান উপপরিচালক মো. ইউনুস আলী, ডা. মো. শফিউর রহমান ও গবেষণা কর্মকর্তা ডা. মো. দিদারুল ইসলামকেও আজ কমিশনে হাজির হতে বলা হয়েছে।

যেসব অভিযোগ নিয়ে আবুল কালাম আজাদকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হবে সে বিষয়ে জয়নুল আবেদীন শিবলীর চিঠিতে বলা হয়, স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয়, স্বাস্থ্য অধিদফতর ও কেন্দ্রীয় ঔষধাগারের (সিএমএসডি) কতিপয় কর্মকর্তা-কর্মচারীর বিরুদ্ধে বিভিন্ন অনিয়ম, দুর্নীতি ও ক্ষমতার অপব্যবহারের অভিযোগ রয়েছে।

এর মাধ্যমে তারা কভিড-১৯ এর চিকিৎসায় ব্যবহারের জন্য নিম্নমানের মাস্ক, পিপিই ও অন্যান্য স্বাস্থ্য সরঞ্জামাদি ক্রয় করেন। পরে এসব সামগ্রী বিভিন্ন হাসপাতালে সরবরাহের নামে অন্যদের যোগসাজশে কোটি কোটি টাকা আত্মসাৎ করেন। তাদের অবৈধ সম্পদ অর্জনের অভিযোগের সুষ্ঠু তদন্তে অধ্যাপক ডা. আবুল কালাম আজাদের বক্তব্য প্রয়োজন।

আর শেখ মো. ফানাফিল্যাহর চিঠিতে বলা হয়, রিজেন্ট হাসপাতাল লিমিটেডের চেয়ারম্যান মোহাম্মদ সাহেদ ও অন্যদের বিরুদ্ধে অভিযোগ জনসাধারণের সঙ্গে প্রতারণা করে করোনা সনদ দেয়ার নামে কোটি কোটি টাকা নেয়া হয়। এই অভিযোগ তদন্তে আবুল কালাম আজাদের বক্তব্য প্রয়োজন।

দেশে করোনাভাইরাসের প্রাদুর্ভাব শুরুর পর মাস্ক ও পিপিই নিয়ে নানা অনিয়ম-দুর্নীতির অভিযোগের প্রতিবেদন আসতে থাকে গণমাধ্যমে। এর মধ্যেই দেশজুড়ে আলোচনায় আসে রিজেন্ট হাসপাতাল ও জেকেজি হেলথ কেয়ারের মতো প্রতিষ্ঠানের করোনা পরীক্ষা নিয়ে ভুয়া রিপোর্ট প্রদানের বিষয়টি।

একপর্যায়ে অনুমোদনহীন রিজেন্ট হাসপাতালের সঙ্গে স্বাস্থ্য অধিদফতরের চুক্তির বিষয়টি নিয়ে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে ডিজি ডা. আবুল কালাম আজাদকে কারণ দর্শানোর নোটিশও (শোকজ) দেয়া হয়।

করোনা টেস্ট নিয়ে কেলেংকারি ও স্বাস্থ্যখাতে নানান অনিয়মের বিষয়টি জানাজানি হলে সমালোচনার মুখে ডা. আবুল কালাম আজাদ গত ২১ জুলাই জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ে স্বাস্থ্য অধিদফরের মহাপরিচালকের পদ থেকে পদত্যাগপত্র জমা দেন। প্রক্রিয়া শেষে ২২ জুলাই তার পদত্যাগপত্র গ্রহণ করা হয়। পরদিন ২৩ জুলাই স্বাস্থ্য অধিদফতরের নতুন মহাপরিচালক (ডিজি) হিসেবে নিয়োগ পান ঢাকা মেডিকেল কলেজের সার্জারি বিভাগের অধ্যাপক ডা. আবুল বাশার মোহাম্মদ খুরশীদ আলম।


শর্টলিংকঃ