রাজশাহীতে বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সাংস্কৃতিক উৎসব শুরু


নিজস্ব প্রতিবেদক:

জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মবার্ষিকী উপলক্ষে রাজশাহীতে ১০ দিনব্যাপী বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সাংস্কৃতকি উৎসব ও বইমেলা শুরু হয়েছে। রোববার দুপুরে রাজশাহী নগরভবনের গ্রিনপ্লাজায় সাংস্কৃতিক উৎসব ও বইমেলার উদ্বোধন করেন বঙ্গবন্ধু মেমোরিয়াল ট্রাস্টের সদস্য সচিব কবি শেখ হাফিজুর রহমান।

উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে মেয়র খায়রুজ্জামান লিটনের সভাপতিত্বে প্রধান অতিথি ছিলেন বাংলাদেশ ব্যাংকের সাবেক গভর্নর ড. আতিউর রহমান।

তিনি বলেন, দেশ স্বাধীনের পর সুবিবেচনাভিত্তিক কৃষি ও শিল্পনীতির আলোকে বঙ্গবন্ধু বাংলাদেশকে অন্তর্ভুক্তিমূলক উন্নয়নের পথে এগিয়ে নিয়ে যাচ্ছিলেন। কিন্তু অপশক্তি তাঁকে আমাদের কাছ থেকে ছিনিয়ে নিয়ে গিয়েছিলো এবং আমরা অন্তর্ভুক্তিমূলক উন্নয়নের পথ থেকে সরে এসেছিলাম।

‘বহু বছর এবং বহু সংগ্রাম ও ত্যাগের পর আমরা আবার তাঁর সুযোগ্য কন্যা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে উন্নয়ন অভিযাত্রার পথে ফিরে আসতে পেরেছি।’

ড. আতিউর আরও বলেন, দারিদ্র্য, রপ্তানি পণ্যে বৈচিত্রের অভাব, জনসম্পদের দক্ষতার ঘাটতির মতো কিছু চ্যালেঞ্জ থাকা সত্ত্বেও আমরা আশাবাদী যে একটি গতিশীল ও বর্ধিষ্ণু অর্থনীতির দেশ হিসেবেই বাংলাদেশ বঙ্গবন্ধুর জন্ম শতবার্ষিকী পালন করতে পারবে। আমাদের সমাজ এবং অর্থনীতিকে আমরা একটা শক্ত ভিত্তির ওপর দাঁড় করাতে পেরেছি।

সভাপতির বক্তব্যে মেয়র খায়রুজ্জামান লিটন বলেন, ১৯৭৫ পরবর্তী কিছুকাল কালো মেঘে বাংলাদেশকে ঢেকে রাখা হয়েছিল। ইতিহাসকে বিকৃতি করা হয়েছিল। দুই/তিনটি প্রজন্মকে বিপথগামী করা হয়েছিল। এখন বঙ্গবন্ধু কন্যা শেখ হাসিনার দৃঢ়তা, রাজনৈতিক মেধা ও প্রজ্ঞায় সকল অপশক্তিকে ব্যর্থ করে দিয়ে জাতি সামনের দিকে এগিয়ে যাচ্ছে। সগৌরবে মাথা উচুঁ করে বিশ^কে জানিয়ে দিচ্ছে, আমরা রবীন্দ্রনাথের সোনার বাংলা, নজরুলের বাংলাদেশ, জীবনান্দের রুপশী বাংলা, রুপের যেন নাইকো শেষ।

উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি ছিলেন উপ-মহাদেশের প্রখ্যাত কথাসাহিত্যিক হাসান আজিজুল হক, রাবির সাবেক উপাচার্য অধ্যাপক ড. আবদুল খালেক, রাজশাহী-২ আসনের সংসদ সদস্য ফজলে হোসেন বাদশা।

বিভাগীয় কমিশনার নুর-উর-রহমান, আরএমপি কমিশনার একেএম হাফিজ আক্তার, ভাষাসৈনিক গোলাম আরিফ টিপু প্রমূখ। উৎসব উদযাপন পরিষদের আহ্বায়ক ভাষাসৈনিক আবুল হোসেন অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্য দেন।

অনুষ্ঠানে কথাসাহিত্যিক হাসান আজিজুল হক ও ভাষাসৈনিক গোলাম আরিফ টিপুকে সম্মাননা স্মারক তুলে দেন মেয়র খায়রুজ্জামান লিটন। এছাড়া চিত্রাঙ্কন প্রতিযোগিতায় বিজয়ী শিশুদের হাতে পুরস্কার তুলে দেন অতিথিরা।

এদিকে, সাংস্কৃতিক উৎসবের প্রথম দিনের দ্বিতীয় অধিবেশনে স্বাধীন বাংলা বেতার কেন্দ্রের গান, জাতীয় শিশু দিবস উপলক্ষে আলোচনা ও সাংস্কৃতিক উৎসব অনুষ্ঠিত হয়।

এরআগে সকালে বঙ্গবন্ধুর জন্মদিন ও সাংস্কৃতিক উৎসব উপলক্ষে সিটি মেয়র এএইচএম খায়রুজ্জামান লিটনের নেতৃত্বে নগরীর কুমারপাড়া মোড় থেকে বর্ণাঢ্য শোভাযাত্রা বের করা হয়। শোভাযাত্রাটি নগরীর বিভিন্ন সড়ক প্রদক্ষিণ শেষে নগরভবনে গিয়ে শেষ হয়।

শোভাযাত্রায় অংশ নেন বাংলাদেশ ব্যাংকের সাবেক গভর্নর ড. আতিউর রহমান, মহানগর আওয়ামী লীগের সিনিয়র সহ-সভাপতি শাহীন আকতার রেনী, সাধারণ সম্পাদক ডাবলু সরকারসহ বীর মুক্তিযোদ্ধারা।

জানা গেছে, ১০ দিনের উৎসবে ভারত, নেপালসহ বিভিন্ন দেশের প্রতিনিধিবৃন্দ অংশ নিচ্ছেন। আগামী ২৬ মার্চ পর্যন্ত নানা চলবে এই উৎসবে।


শর্টলিংকঃ