রাজশাহীতে ভিডিও চ্যাটিং চক্রের দুই নারীসহ গ্রেফতার ৩


নিজস্ব প্রতিবেদক:

রাজশাহীতে অনলাইনে অর্থের বিনিময়ে অশ্লীল ভিডিও চ্যাটিং চক্রের সন্ধান পেয়েছে পুলিশ। চক্রের দুই নারী সদস্যসহ তিনজনকে চ্যাটিংয়ে মগ্ন থাকা অবস্থায় আটক করা হয়েছে। বুধবার (০৮ মে) রাত ১১টার দিকে জেলার গোদাগাড়ী পৌরসভার মেডিকেল মোড় এলাকার ভাড়া বাড়িতে অভিযান চালিয়ে তাদের আটক করা হয়।

অশ্লীল ভিডিও চ্যাটিং চক্রের দুই নারী সদস্যসহ তিনজন আটক

আটককৃতরা হলেন- নাটোর জেলার আলাইপুরের খলিলুর রহমানের ছেলে মেহেদী হাসান (২৫), চাঁপাইনবাবগঞ্জ সদর উপজেলার বালিয়াডাঙ্গার হাবিবা খাতুন (১৭) ও একই উপজেলার দুর্গাপুরের মোছা. সুরভী বেগম (১৮)।

পুলিশ বলছে- তারা বিভিন্ন অপারেটরের ৩৫টি সিম ইন্টারনেট দুনিয়ায় ছড়িয়ে দিয়েছে। সেখানে আগ্রহীদের কল করতে যৌন আকর্ষণমূলক ছবি ও ছোট ভিডিও টিজার পোস্ট করে। কল করলেই বিকাশে টাকা পাঠিয়ে দিয়ে ফোন কল করতে বলে।

বিকাশে টাকা দিলে তারা ভাইবার, ইমো, ম্যাসেঞ্জারসহ বিভিন্ন অ্যাপসের মাধ্যমে নির্দিষ্ট সময় ভিডিও চ্যাটিং করে। এমনকি তারা বিভিন্ন বিদেশি চ্যাটিং সাইটে যুক্ত হয়েও নগ্ন ভিডিও চ্যাটিং করে আসছিল। তাদের বহরে লোক বাড়াতে মোটা অংকের বেতনে নিয়োগ বিজ্ঞপ্তিও ছড়িয়ে দেওয়ার কাজ করছিল চক্রটি।

রাজশাহীর গোদাগাড়ী সার্কেলের সহকারী পুলিশ সুপার মো. আব্দুর রাজ্জাক জানান, তিন মাস আগে মেহেদী হাসান এবং ওই দু্ই নারী গোদাগাড়ী পৌরসভার মেডিকেল মোড় এলাকার মজিবুর রহমান মাস্টারের বাড়িতে দু’টি কক্ষ ভাড়া নেয়। কিন্তু বাড়িতে ওঠার পর তারা বাইরে বের হতো না।

আশেপাশের মানুষের সঙ্গেও মিশতো না। তবে তারা দু’টি কক্ষে ওয়াইফাই নেট কানেকশন নিয়েছিল। সন্দেহ হওয়ায় এলাকার কয়েকজন বাসিন্দা বিষয়টি পুলিশকে অবগত করে। খবর পেয়ে পুলিশ বুধবার রাতে ওই বাড়িতে অভিযান চালায়।

চক্রের বহর বাড়াতে ভিডিও চ্যাটিং জব নামে লোভনীয় বেতনে বিজ্ঞপ্তিও ছড়িয়েছে চক্রটি

সহকারী পুলিশ সুপার আব্দুর রাজ্জাক বলেন, আমরা সেখানে গিয়ে তাদেরকে অশ্লীল ভিডিও চ্যাটিং করা অবস্থায় হাতেনাতে ধরেছি। তাদের কাছে থাকা ২টি ল্যাপটপ, ১টি কম্পিউটার, বিভিন্ন কোম্পানীর ৩৫টি সিম কার্ড, ২৫টি ভুয়া জাতীয় পরিচয়পত্র জব্দ করা হয়েছে।

তিনি আরও বলেন, তারা শুধু ভিডিওতে নয়, ইন্টারনেটে নম্বর ছড়িয়ে ফোনে অশ্লীল কথাবার্তা বলে মানুষের কাছ থেকে বিকাশের মাধ্যমে টাকা নিতো। এছাড়া বিভিন্ন বিদেশি সাইটে তারা ঘন্টা অনুযায়ী চুক্তিভিত্তিক নগ্ন চ্যাটিং করতো।

‘তারা নতুন করে ‘চ্যাটিং জব’ এর জন্য সুন্দরী নারী খুঁজতে বিজ্ঞপ্তিও দিয়েছে। যাতে দিনে ১০ ঘন্টা ভিডিও চ্যাটিংয়ের বিনিময়ে ২৩৮০০ টাকা বেতন দেওয়ার লোভনীয় অফার দেওয়া হয়েছে। যার কয়েক কপি ওই বাড়ি থেকে উদ্ধার করা হয়েছে’ বলে উল্লেখ করেন অভিযানে নেতৃত্ব দেওয়া পুলিশের এই কর্মকর্তা।

সহকারী পুলিশ সুপার জানান, তিন জনের বিরুদ্ধে প্রতারণা ও পর্নোগ্রাফি আইনে মামলা দায়ের করা হবে। বৃহস্পতিবার (০৯ মে) তাদেরকে আদালতের মাধ্যমে জেলহাজতে পাঠাবে পুলিশ।


শর্টলিংকঃ