রাজশাহীতে শনিবার থেকে বন্ধ টিকা দান কার্যক্রম


নিজস্ব প্রতিবেদক:

রাজশাহীর জন্য বরাদ্দকৃত করোনা টিকার মজুদ শেষ হয়ে গেছে। তাই শনিবার (২২ মে) থেকে রাজশাহী সিটি করপোরেশন এলাকা ও জেলার নয় উপজেলায় করোনার টিকা দান কার্যক্রম বন্ধ থাকবে।রাজশাহীসহ গোটা দেশে দ্বিতীয় ডোজের জন্য আরও ২০ লাখ ডোজ টিকা প্রয়োজন।


এ দ্বিতীয় ডোজের টিকা সংগ্রহের জন্য সরকারের পক্ষ থেকে সর্বোচ্চ চেষ্টা চালানো হচ্ছে। টিকা পেলে আবার কার্যক্রম শুরু করা হবে। সে পর্যন্ত সংশ্লিষ্ট সবাইকে অপেক্ষা করতে হবে।রাজশাহীতে বৃহস্পতিবার (২০ মে) সর্বশেষ টিকা দেওয়া হয়েছে। এরপরই মজুদ ফুরিয়ে যায়।

স্বাস্থ্য বিভাগের কর্মকর্তারা বলছেন, প্রথম টিকা নেওয়ার পর চার মাস পর্যন্ত দ্বিতীয় ডোজের টিকা নেওয়া যাবে। তারা এর মধ্যেই সেরাম ইনস্টিটিউটে উৎপাদিত অক্সফোর্ড অ্যাস্ট্রাজেনেকার নতুন ভ্যাকসিন আনার চেষ্টা করছেন। টিকা পেলে আবার কার্যক্রম শুরু করা হবে।

জানতে চাইলে শুক্রবার (২১ মে) রাজশাহী সিভিল সার্জন ডা. মো. কাইয়ুম তালুকদার  বলেন, প্রথম দফায় এক লাখ ৮০ হাজার ডোজ করোনার টিকা রাজশাহীর জন্য পাঠানো হয়েছিল। সেখান থেকে টিকা দান কার্যক্রম শুরুর পর দুই হাজার টিকা মজুদ ছিল। দ্বিতীয় দফার ৮৪ হাজার ডোজ টিকা আসার পর দ্বিতীয় ডোজের কার্যক্রম শুরু হয়। পাশাপাশি নতুন করে প্রথম ডোজের টিকা দান কার্যক্রমও চলে। এরপর নতুন করে আর ভ্যাকসিন আসেনি।

রাজশাহীতে কোভিড-১৯ টিকা গ্রহণকারীর সংখ্যা কত প্রশ্নে- রাজশাহী সিভিল সার্জন ডা. মো. কাইয়ুম তালুকদার বলেন, রাজশাহীতে প্রথম দফায় এক লাখ ৩৩ হাজার ৭৭৪ জনকে করোনার টিকা দেওয়া হয়েছে। আর নির্দিষ্ট সময়ের ব্যবধানে দ্বিতীয় দফায় টিকা দেওয়া হয়েছে ৮১ হাজার ৬৪০ জনকে। মোট টিকা গ্রহীতার সংখ্যা দুই লাখ ১৫ হাজার ৪১৪। এছাড়া মজুদ শেষ হওয়ায় দ্বিতীয় ডোজের টিকা নিতে পারছেন না জেলায় এমন ব্যক্তির সংখ্যা ৫২ হাজার ১৩৪ জন।

তিনি আরও বলেন, এখন পর্যন্ত যারা ভারত থেকে আসা সেরাম ইনস্টিটিউটে উৎপাদিত অক্সফোর্ড অ্যাস্ট্রাজেনেকার ভ্যাকসিন নিয়েছেন তাদের একই প্রতিষ্ঠানের ভ্যাকসিন নেওয়ার বাধ্যবাধকতা রয়েছে। তবে তা চার মাসের মধ্যে নিলেও হবে। তাই টিকা সংগ্রহের জন্য সর্বোচ্চ চেষ্টা চলছে।

এদিকে, রাজশাহী বিভাগের আর আট জেলার মধ্যে রাজশাহীসহ আরও ছয়টি জেলায় করোনার টিকার মজুদ ফুরিয়ে গেছে। এ ছয় জেলার মধ্যে রয়েছে- রাজশাহী, নাটোর, নওগাঁ, জয়পুরহাট, পাবনা ও সিরাজগঞ্জ। এখনও চাঁপাইনবাবগঞ্জ ও বগুড়ায় কিছু টিকা অবশিষ্ট থাকায় সেখানে কার্যক্রম চলবে। কারণ, গত মঙ্গলবার (১৮ মে) বগুড়ায় ৬০০ ভায়াল টিকা এসেছে। এক ভায়াল থেকে ১০ জনকে টিকা দেওয়া যায়। তাই সেখানে আরও বেশ কয়েকদিন টিকা দান কার্যক্রম চলবে।

রাজশাহী বিভাগীয় স্বাস্থ্য পরিচালক ডা. হাবিবুল আহসান তালুকদার বলেন, রাজশাহী বিভাগের আট জেলায় প্রথম ডোজের টিকা গ্রহীতার মোট সংখ্যা ছয় লাখ ৬৪ হাজার জন। দ্বিতীয় ডোজ পেয়েছেন প্রায় তিন লাখ ৯২ হাজার জন। এখন রাজশাহী বিভাগের প্রায় দুই লাখ ৭২ হাজার মানুষ দ্বিতীয় ডোজের অপেক্ষায় থাকবেন। মজুদ ফুরিয়ে আসায় এখন প্রথম ডোজের টিকা দেওয়া পুরোপুরি বন্ধ।

এখন যে জেলায় স্বল্পসংখ্যক টিকা রয়েছে তা দ্বিতীয় ডোজ হিসেবেই দেওয়া হবে। স্বাস্থ্য বিভাগের পক্ষ থেকে তারা যে টিকা দিয়েছেন- সেটা প্রথম ডোজ নেওয়ার আট থেকে ১২ সপ্তাহের মধ্যে দ্বিতীয় ডোজ নেওয়ার নিয়ম রয়েছে। তবে নতুন করে কীভাবে টিকা দেওয়া হবে, সেটা গবেষকদের সঙ্গে আলোচনার পর ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষ ঠিক করে দেবে বলেও জানান বিভাগীয় স্বাস্থ্য পরিচালক।


শর্টলিংকঃ