রাবিতে শেষ হলো লেখক-পাঠক মিলনমেলা


রাবি প্রতিনিধি:

রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে (রাবি) লেখক-সাহিত্যিক প্রাণোচ্ছ্বল চিহ্নমেলা চিরায়তবাংলা আনন্দঘন পরিবেশে সমাপনী হয়েছে। মঙ্গবার রাত সাড়ে আটটায় এই মেলার সমাপনী পর্ব অনুষ্ঠিত হয়।

সমাপনী অনুষ্ঠানে প্রখ্যাত কথা সাহিত্যিক হাসান আজিজুল হক বলেন, ‘চিহ্ন পত্রিকার এমন একটা বিশিষ্টতা অর্জন করেছে, যাতে মনে হয়, প্রতিনিয়তই এই বাংলা কবিতা, সাহিত্য, সংস্কৃতিতে নিজে পথ তৈরি করে এগিয়ে যাচ্ছে। দুভাগ্যক্রমে আমাদের দেশে সাহিত্য চর্চা, জ্ঞানের চর্চা অন্ধকারে তলিয়ে যাচ্ছে। আমরা কিছুতেই উপরে আনতে পারছি না। এমনকি তা আমরা অনুভবও করতে পারি না। ’

এবারের মেলায় বাংলাদেশের শোয়েব শাহরিয়ার, মহীবুল আজিজ, আসাদ মান্নান, ভারতের দেবেশ রায়, প্রবালকুমার বসু, ইমানুল হকসহ দুই বাংলার দুই শতাধিক লেখক-কবি-সাহিত্যিকরা অংশ নেয়।

মেলায় বাংলাদেশের ৯৫টি এবং ভারতের ৩০টি বাংলা সাহিত্য বিষয়ক ছোট কাগজগুলোর স্টল বসেছেছিল। বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের পাশাপাশি রাজশাহীর বিভিন্ন অঞ্চল থেকে সাহিত্যপ্রেমীরা ভিড় জমায় এই লেখক-সম্পাদক সম্মেলন মেলায়।

মেলায় রবীন্দ্র-তর্পণ, ডিজিটাল বাংলাদেশে বাঙালির সাহিত্য বিষয়ক আলোচনা, ছোট প্রকাশনা: সম্ভাবনা ও সমস্যা, গ্রন্থের পাঠ উন্মোচন, কথাশিল্পী দেবেশ রায়ের বক্তৃতা, বিবর্তনের আলোয় সংগ্রহের ইতিহাস-১ শীর্ষক বিশেষ প্রদর্শনী এবং অংশগ্রহণকারী ছোটকাগজগুলোর সম্পাদককে চিহ্নক্রেস্ট প্রদান ও সাংস্কৃতিক সন্ধ্যা অনুষ্ঠিত হয়।

চিহ্নপ্রধান ও মেলার আহ্বায়ক অধ্যাপক ড. শহীদ ইকবাল বলেন, বাংলা সাহিত্যে সৃজনশীল ও মননশীল লেখক তৈরির উদ্দেশ্য নিয়ে চিহ্নের পথচলা। এ মেলার ফলে দুই বঙ্গের সাহিত্যিকরা একত্রিত হন। এতে তাঁদের সঙ্গে আমাদের তরুণ লেখকদের সাহিত্য ভাবনার আদান-প্রদান ঘটে।’

সকালে কবিতাপাঠের মাধ্যমে মেলার সমাপনী অনুষ্ঠান শুরু হয়। পরে দিনব্যাপী কয়েকটি আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়। মেলায় কুড়িগ্রামের উলিপুুর উপজেলার লেখক সরকার মাসুদকে সৃজনশীল ও যশোরের কৃষ্ণনগর উপজেলার হোসেন উদ্দীন হোসেনকে তাঁদের মননশীল লেখনীর জন্য চিহ্ন পুরস্কার দেওয়া হয়।

সন্ধ্যায় চিহ্নপুরস্কার ও ছোটকাগজ সম্মাননার পর কলকাতার ‘মনভাষা’ গানের দলের পরিবেশনার মাধ্যমে মেলার পর্দা শেষ।

এর আগে বিশ্ববিদ্যালয়ের শহীদুল্লাহ কলাভবন প্রাঙ্গণে এ মেলার উদ্বোধন করেন প্রখ্যাত কথাশিল্পী হাসান আজিজুল হক। বিশ্ববিদ্যালয়ের বাংলা সাহিত্য বিষয়ক লিটল ম্যাগ ‘চিহ্ন’ চতুর্থবারের মতো এ মেলার আয়োজন করেছে।

মেলায় বাংলাদেশের পাশাপাশি ভারতের লেখক- কবি-সাহিত্যিকরা অংশ নিয়েছেন। জমকালো আয়োজন আর কবি-সাহিত্যিকদের পদচারণায় মুখরিত হয়ে উঠেছিল মতিহারের সবুজ চত্বর।

প্রসঙ্গত, ২০১১ সাল থেকে প্রতি তিন বছর অন্তর এ মেলার আয়োজন করে আসছে ছোট কাগজ চিহ্ন।


শর্টলিংকঃ