রাসিক নির্বাচন : কে হচ্ছেন নৌকার কাণ্ডারি?


নিজস্ব প্রতিবেদক:

রাজশাহী সিটি কর্পোরেশন নির্বাচন সামনে। এই নির্বাচনে বিএনপি দলগতভাবে অংশ নেবে না বলে ইতোমধ্যে দলটির নেতারা জানিয়ে দিয়েছেন। তবে প্রত্যক্ষভাবে তাদের প্রার্থী না থাকলেও সাম্প্রতিক নানা সমীকরণের কারণে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের মধ্যকার দ্বন্দ্ব এবারের এই নির্বাচনকে জমিয়ে তুলতে পারে বলে ধারণা করা হচ্ছে।


সেক্ষেত্রে প্রথম প্রশ্ন উঠছে- কে হতে যাচ্ছেন নৌকার কাণ্ডারি? বর্তমান মেয়র দলের প্রেসিডিয়াম সদস্য এএইচএম খায়রুজ্জামান লিটনকে দীর্ঘদিন ধরেই এখানে অবিকল্প হিসেবে দেখা হয়ে থাকে। এর পেছনে তার নিজের রাজনৈতিক অবদান, নগরীর উন্নয়নে ভূমিকার পাশাপাশি তার পারিবারিক পটভূমিও বিবেচিত হয়ে আসছে। জাতীয় নেতা শহিদ এএইচএম কামারুজ্জামানের এই পুত্র গত তিন সিটি নির্বাচনেই প্রার্থী হয়েছেন।

২০০৮ সালের নির্বাচন দলীয় প্রতীকে না হলেও তিনিই মূলত ছিলেন দলের প্রধান প্রার্থী। সেবার জিতলেও ২০১৩ সালের সিটি নির্বাচনে দলীয় প্রার্থী হয়ে হেরে যান বিএনপি নেতা মোসাদ্দেক হোসেন বুলবুলের কাছে।২০১৮ সালের নির্বাচনে ফের নৌকার কাণ্ডারি হয়ে সেই বুলবলকে হারিয়েই মেয়র হন লিটন। তার এই মেয়াদে রাজশাহী নগরীর সৌন্দর্য্য দেশজুড়ে প্রশংসিত হয়। ফলে এবারের নির্বাচনেও দল তাকে মনোনয়ন দেবে- এমন ধারণাই বেশিরভাগ মানুষের মধ্যে আছে।

তবে নির্বাচনের কাছাকাছি সময়ে এসে স্থানীয় পর্যায়ে দলের ভেতরের বেশকিছু ঘটনা দ্বন্দ্ব ও সংকট তৈরি করেছে। দলের অভ্যন্তরে দেখা দিয়েছে পারস্পরিক অবিশ্বাস ও সন্দেহ। অতীতে এসব দ্বন্দ্ব অন্তত খায়রুজ্জামান লিটনকে ছুঁতে না পারলেও এবারের চিত্র খানিকটা ভিন্ন। নগর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ডাবলু সরকার স্বয়ং প্রধানমন্ত্রীর সামনে খায়রুজ্জামান লিটনের বিরুদ্ধে অভিযোগ করার বিষয়টি পত্রিকান্তরে প্রকাশিত হয়েছে। ফলে দলটির এই প্রেসিডিয়াম সদস্যের সর্বজনীন ইমেজ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে বলেই ধারণা করা হচ্ছে। ফলে ভোটের আগে দলীয় বিভাজন দূর করা এখন আওয়ামী লীগের সব থেকে বড় চ্যালেঞ্জ হয়ে দাঁড়িয়েছে।

আওয়ামী লীগে দ্বন্দ্বের নেপথ্যে

রাজশাহীতে আওয়ামী লীগের রাজনীতিতে দীর্ঘদিন ধরেই একচ্ছত্র আধিপত্য এএইচএম খায়রুজ্জামান লিটনের। ২০১৮ সালে সিটি নির্বাচনে বিজয়ী হওয়ার পর তার রাজনৈতিক শক্তি আরও বৃদ্ধি পায়। তবে ২০২০ সালের মার্চে মহানগর আওয়ামী লীগের সম্মেলনকে কেন্দ্র করে প্রথমবারের মতো চ্যালেঞ্জের মুখোমুখি হন তিনি। আগের মেয়াদে সভাপতি লিটনের সঙ্গে সাধারণ সম্পাদক হিসেবে ডাবলু সরকার নির্বাচিত হলেও ২০২০ সালের সম্মেলনে লিটন নানা কারণে ডাবলু সরকারকে নেতৃত্বে চাননি বলে আলোচনা আছে রাজনৈতিক মহলে। তারপরেও সম্মেলনে লিটন সভাপতি ও ডাবলু সরকার সাধারণ সম্পাদক হন। যদিও সম্মেলনের পর দলের ভেতরের কোনো সংকট খুব একটা প্রকাশ্যে আসেনি। এরপর গত বছর খায়রুজ্জামান লিটনকে দলের প্রেসিডিয়াম সদস্য করা হলে ভারপ্রাপ্ত সভাপতির দায়িত্ব পান বীর মুক্তিযোদ্ধা মোহাম্মদ আলী কামাল।

২০২২ সালে জেলা পরিষদ নির্বাচনে দলীয় মনোনয়ন ও ভোটকে কেন্দ্র করে আবারও দলের অভ্যন্তরে তৈরি হয় নতুন সংকট। দলটির পুরনো ও বয়জ্যেষ্ঠ নেতা বীর মুক্তিযোদ্ধা মীর ইকবাল জেলা পরিষদ চেয়ারম্যান পদে দলের মনোনয়ন চান। সম্পর্কের দিক থেকে মীর ইকবালের শ্যালক হচ্ছেন নগর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ডাবলু সরকার। সে কারণে খায়রুজ্জামান লিটন দলীয় মনোনয়ন পাবার ক্ষেত্রে মীর ইকবালের বিরোধিতা করেন বলে অভিযোগ ওঠে। এরপরেও মীর ইকবাল জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান পদে দলের মনোনয়ন পান। এবার নেপথ্যে থেকে পুরো নির্বাচনেই মীর ইকবালের প্রতিপক্ষ প্রার্থী আখতারুজ্জামানকে সহায়তার অভিযোগ ওঠে লিটনের বিরুদ্ধে। যদিও তার পক্ষ থেকে সব সময়ই এসব অভিযোগ নাকচ করা হয়েছে। নির্বাচনে মীর ইকবাল বিজয়ী হওয়ার পর নগর আওয়ামী লীগের বৈঠকে এই বিষয়টি আলোচনায় আসে। যদিও বৈঠক শেষে ডাবলু সরকার নিজেই তার বক্তব্যে পেছনের কথা ভুলে সামনের দিকে তাকানোর কথা বলে বিষয়টিকে সেখানেই থামিয়ে দেন।

অতি সম্প্রতি নগর আওয়ামী লীগের ঐক্যে আরও একটি বড়সড় পেরেক ঠুকে দেয়া হয় একটি অশ্লীল ভিডিওকে কেন্দ্র করে। নগর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ডাবলু সরকারের চেহারা সম্বলিত এই অশ্লীল ভিডিওটি প্রথমে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়ানো হয়। ডাবলু সরকার এ নিয়ে থানায় মামলা করেন। বিষয়টি নিয়ে রাস্তায় কর্মসূচি পালন করা শুরু করে একটি পক্ষ। সেই পক্ষের নেতৃত্বে ছিলেন অ্যাডভোকেট আবু রায়হান মাসুদ, যিনি জেলা পরিষদ নির্বাচনে মীর ইকবালের বিরুদ্ধে ভোটের মাঠের অন্যতম কুশীলব ছিলেন। এক পর্যায়ে এসব কর্মসূচিতে যোগ দেন মহানগর আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীদের একটি অংশ, যারা মূলত খায়রুজ্জামান লিটনের ঘনিষ্ঠ হিসেবে পরিচিত। এখানেই শেষ নয়, তারা ডাবলু সরকারের অপসারণ দাবি করে কেন্দ্রের কাছে চিঠি পাঠান। এই ঘটনার পর সম্প্রতি ঢাকায় দলের সভাপতি শেখ হাসিনার সামনে ডাবলু সরকার এসব ঘটনার পেছনে খায়রুজ্জামান লিটনকে অভিযুক্ত করেন।

পত্রিকান্তরে প্রকাশিত খবরে জানা যায়, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এসময় ডাবলু সরকারকে এলাকায় ফিরে দলীয়ভাবে ‘কাজ করা’র নির্দেশ দেন। কিন্তু বিষয়টি সেখানেই থেমে যায়নি। এরপর রাজশাহী মহানগরীর একটি কমিউনিটি সেন্টারে মহানগর আওয়ামী লীগের ব্যানারে প্রথম আলোর ভূমিকার সমালোচনা করে একটি সভার আয়োজন করা হয়। সেখানে আগামী সিটি নির্বাচনে খায়রুজ্জামান লিটনের পক্ষে কাজ করার জন্য সবাইকে ঐক্যবদ্ধ হতে বলা হয়। তবে সেই সভাটি করা হয় ডাবলু সরকারকে বাইরে রেখেই। ফলে পারস্পরিক দূরত্ব বেড়ে যায় আরও।

ওই সভায় উপস্থিত ছিলেন নগর আওয়ামী লীগের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা মোহাম্মদ আলী কামাল। তবে তার আধাঘণ্টা আগেই নগরীতে ডাবলু সরকারের দরিদ্রদের মাঝে নিয়মিত ইফতার বিলির আয়োজনে তার সঙ্গে ছিলেন তিনি। ভারপ্রাপ্ত সভাপতি নিজেও মনে করেন, যারা ডাবলুর বিরুদ্ধে এই ঘটনা ঘটিয়েছেন, তারা ‘অপরাধ’ করেছেন। তিনি বলেন, ‘(এ ব্যাপারে) দলের কাছে কেউ বিচারপ্রার্থী হয়নি, বিক্ষিপ্তভাবে বিভিন্ন সময় মানববন্ধন হয়েছে। এটা একটা অপরাধ।’

দ্বন্দ্ব মিটবে কীভাবে?

রাজশাহী মহানগর আওয়ামী লীগের এই দ্বন্দ্ব কীভাবে মিটবে, তা নিয়ে আলোচনা চলছে দলের ভেতরেই। দলের শুভাকাঙ্ক্ষীদের অনেকেই মনে করেন, দলীয় রাজনীতির অভ্যন্তরীণ স্বার্থসংশ্লিষ্ট কারণে ভিডিওটি ফাঁস করে ডাবলুর বিরুদ্ধে একাংশকে মাঠে নামানো হলেও নির্বাচনের বছরে বিষয়টি সার্বিকভাবে দলের স্বার্থের জন্য মারাত্মক ক্ষতিকর হয়ে উঠেছে। বিশেষ করে ওই ঘটনার পর নগর ছাত্রলীগের এক নেতার নামে অশ্লীল চ্যাট ও একজন সংসদ সদস্যের চেহারা সম্বলিত ভিডিও কল ফাঁস হওয়ার পর থেকে ভয়াবহ এই প্রবণতা নিয়ে শঙ্কিত হয়ে উঠেছেন তারা।

রাজশাহী মহানগর আওয়ামী লীগের উপদেষ্টামণ্ডলীর সদস্য বীর মুক্তিযোদ্ধা অধ্যাপক রুহুল আমিন প্রামাণিক মনে করেন, একটি ক্ষুদ্র স্বার্থের কাছে দলীয় বৃহৎ স্বার্থ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। তিনি বলেন, ‘ডাবলু সরকারের ভিডিও বানিয়ে ছড়ানো ও দলীয় ফোরামে আলোচনা ব্যতিরেকে তার বিরুদ্ধে রাস্তায় মিছিল মিটিং শুধু তাকে ব্যক্তিগত, পারিবারিক ও সামাজিকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত করেনি। বরং রাজশাহীর প্রগতিশীল রাজনীতির জন্যই একটি সংকট তৈরি করেছে। কারণ এই বছরটা নির্বাচনের বছর। সিটি নির্বাচন হবে। এরপর জাতীয় নির্বাচন। সে কারণেই কীভাবে এই পরিস্থিতির উত্তরণ ঘটানো যায়, তার ব্যবস্থা এখনই করতে হবে।’

অন্যদিকে, প্রধানমন্ত্রীর কাছে ডাবলু সরকার অভিযোগ জানানোর পরেও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে দলের বিভিন্ন অঙ্গ সংগঠনের বেশ কয়েকজন নেতাকর্মী ইস্যুটিকে নিয়ে ডাবলুর বিরুদ্ধে ব্যক্তিগত আক্রমণ করেছেন। তাদের কেউ কেউ ‘ডাবলুর সঙ্গে রাজনীতি করবো না’ বলেও উচ্চকিত হয়েছেন। নগর আওয়ামী লীগে ডাবলুর সমর্থকরা বিষয়টিকে মোটেও ভালোভাবে নেননি। সবমিলিয়ে দুপক্ষের ঐক্যবদ্ধ হয়ে সংকট মোকাবেলা করার বিষয়টি দুরুহ হয়ে উঠেছে।

নগর আওয়ামী লীগের একজন সহ সভাপতি নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, ‘নির্বাচনের আগে এসে এই বিষয়টি খুব ক্রিটিক্যাল হয়ে গেলো। এটা স্থানীয় দুই নেতা বা পক্ষের কোন্দলের চেয়ে বড় আকার ধারণ করেছে। কারণ এখানে একজন প্রেসিডিয়াম মেম্বারের নাম উঠে এসেছে। তিনি আবার দলের সম্ভাব্য মেয়র প্রার্থী। এখন তিনি কি মহানগর আওয়ামী লীগের একাংশকে রেখে ভোট করতে পারবেন? আবার তিনি নিজেই যেহেতু দলের সর্বোচ্চ নীতি নির্ধারণী ফোরামের সদস্য, সেহেতু তার সঙ্গে মহানগর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদকের দূরত্ব স্থানীয়ভাবে অন্য কেউ কমানোর উদ্যোগ নিতে পারবেন না। সেটা কাজেও দেবে না। তাহলে কেন্দ্রীয় কমিটির গুরুত্বপূর্ণ এক বা একাধিক নেতাকে হয়তো এখন উদ্যোগ নিতে হবে। আর তা নাহলে সরাসরি দলীয় প্রধানকে হস্তক্ষেপ করতে হবে। এর বাইরে আর কোনো বিকল্প নেই।’

নৌকার কাণ্ডারি লিটন নাকি অন্য কেউ?

রাজশাহী মহানগর আওয়ামী লীগের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা মোহাম্মদ আলী কামাল শুক্রবার এক সাক্ষাৎকারে বলেছেন, ‘আমরা এখানে (সিটি মেয়র) লিটনকেই চাই, লিটনই হবে হয়তো। তবুও বলে রাখি, জননেত্রী শেখ হাসিনা যাকে মনোনয়ন দিবে তার জন্যই আমরা কাজ করব। তিনিই আমাদের চালিকাশক্তি।’
দলীয় মনোনয়নের ক্ষেত্রে সব সময়ই ‘নেত্রীর সিদ্ধান্তই চূড়ান্ত’ হিসেবে উল্লেখ করে থাকেন আওয়ামী লীগের নেতারা। কাজেই রাজশাহী সিটি নির্বাচনেও শেষ পর্যন্ত দলীয় প্রধানের সিদ্ধান্তই হবে চূড়ান্ত। আগামী ৯ থেকে ১২ এপ্রিল দলীয় মনোনয়ন সংগ্রহ করে জমা দেয়ার তারিখ নির্ধারণ করেছে আওয়ামী লীগ। এরপরেই চূড়ান্ত হবে প্রার্থী।

খায়রুজ্জামান লিটন কি আবার মেয়র নির্বাচন করতে চান?

গত বছর লিটন দলের প্রেসিডিয়াম সদস্য হওয়ার পর থেকে এই প্রশ্নটি অনেকবারই আলোচনায় এসেছে। কিন্তু খায়রুজ্জামান লিটন নিজে এখনও স্পষ্ট কোনো কথা বলেননি। তবে দলের সর্বশেষ কেন্দ্রীয় সম্মেলনের পর তার ঘনিষ্ঠদের অনেকেই বলেছেন যে, কেন্দ্রীয় রাজনীতি করতে হলে মেয়র হিসেবে থেকে করা কঠিন। তাই তিনি এবার সংসদ নির্বাচনের জন্য প্রস্তুতি নিতে পারেন। তবে সর্বশেষ রাজশাহীতে প্রধানমন্ত্রীর জনসভার পর থেকে আবারও তিনি মেয়র নির্বাচন করবেন বলেই শোনা যায় তার ঘনিষ্ঠদের মুখে। বিষয়টি নিয়ে একাধিক সাক্ষাৎকারে মেয়র লিটন ইঙ্গিত দিয়েছেন, দলীয় প্রধান তাকে যেখানে নির্বাচন করতে বলবেন, তিনি সেখানেই করবেন। তবে তার ঘনিষ্ঠ একাধিক সূত্র জানিয়েছে, শনিবার তিনি ওমরাহ শেষে সৌদি আরব থেকে ঢাকা ফিরবেন। এরপর তিনি সিদ্ধান্ত নেবেন যে, কী করবেন। তবে আপাতত তিনি সিটি নির্বাচনে প্রার্থী হবেন বলে মনস্থ করেছেন।

দীর্ঘ সময় ধরে মেয়র লিটন প্রার্থী হলে দল থেকে অন্য কেউ মনোনয়ন চাইবেন না বলে আলোচনা ছিলো। তবে সাম্প্রতিক জটিলতাগুলো সেই পরিস্থিতি অনেকটাই বদলে দিয়েছে। ডাবলু সরকারের একাধিক ঘনিষ্ঠ সূত্র জানিয়েছে, এই নির্বাচনে ডাবলুও মেয়র পদে দলীয় মনোনয়ন চাইবেন। সে লক্ষ্যে তিনি বৃহস্পতিবার ঢাকায় গিয়েছেন। এখনও সেখানেই আছেন। বিষয়টি নিয়ে জানতে একাধিকবার যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও ডাবলু সরকার ফোন ধরেননি।

এছাড়া আরও একজন নেতা বর্তমানে ঢাকায় অবস্থান করছেন, যিনি মেয়র পদে মনোনয়ন চাইতে পারেন বলে তার ঘনিষ্ঠ সূত্রগুলো নিশ্চিত করেছে। তিনি হলেন জেলা আওয়ামী লীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক আসাদুজ্জামান আসাদ। জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘রাজশাহীর মেয়র হয়ে কেন্দ্রের পলিটিক্স করাটা একটু ঝামেলার। কিন্তু তারপরেও খায়রুজ্জামান লিটন যদি ভোট করেন, তাহলে আর কোনো কথা নেই। কিন্তু তিনি ভোট না করলে আমি প্রার্থী হতে চাই।’

এর বাইরে নগর যুবলীগের সভাপতি রমজান আলীও রাজশাহী সিটি নির্বাচনে দলীয় মনোনয়ন চাইতে পারেন বলে তার ঘনিষ্ঠ সূত্রগুলো নিশ্চিত করেছে।

ঢাকার আলোচনায় আছে বিকল্পও

রাজশাহী সিটি নির্বাচন ও জাতীয় সংসদ নির্বাচনের আগে এখানকার দলীয় সংকটগুলো নিয়ে গভীরভাবে কাজ করছে কেন্দ্রীয় কমিটিও। দলের একাধিক কেন্দ্রীয় সূত্র জানিয়েছে, এখানকার পরিস্থিতি নিয়ে বিভিন্ন সরকারি এজেন্সির রিপোর্ট ও দলীয় রিপোর্ট থেকে তারা নিশ্চিত হয়েছেন যে, খায়রুজ্জামান লিটনকে কেন্দ্র করে গড়ে ওঠা সংকট শুধু মহানগরেই সীমাবদ্ধ নেই। পুরো জেলাতেই এর প্রভাব পড়েছে। এর বাইরে ১৪ দলীয় জোটের সঙ্গে দূরত্বের বিষয়টিও সামনে এসেছে।
দলীয় সূত্রগুলো বলছে, মেয়র পদে খায়রুজ্জামান লিটনকে মনোনয়ন দিয়ে ডাবলু সরকারসহ অন্যদের সঙ্গে দূরত্ব ঘোচানোর বিষয়ে উদ্যোগ নেয়া হতে পারে। আবার দূরত্ব ঘোচানোর উদ্যোগ নিলেও তাদের কাউকেই এই নির্বাচনে প্রার্থী নাও করা হতে পারে। সেক্ষেত্রে জাতীয় নেতা শহিদ এএইচএম কামারুজ্জামানের পরিবারের অন্য দুজন সদস্যের নামও ঢাকায় আলোচনায় উঠে আসছে। তবে পরিস্থিতি বিবেচনায় একেবারে দরজায় দাঁড়িয়ে থাকা রাজশাহী সিটি কর্পোরেশন নির্বাচনে প্রার্থী মনোনয়ন ও অভ্যন্তরীণ সংকট উত্তরণের বিষয়টি নিয়ে দলীয় প্রধানের কৌশলের দিকেই তাকিয়ে আছেন দলটির নেতারা।


শর্টলিংকঃ