সরকারি হাসপাতালে ফাঁকি দিয়ে চিকিৎসকরা ক্লিনিকে!


তারেক রহমান, চাঁপাইনবাবগঞ্জ:

চাঁপাইনবাবগঞ্জ সদর হাসপাতালের বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকরা সরকারি হাসপাতালে ফাঁকি দিয়ে নিয়ম করে প্রাইভেট ক্লিনিকে রোগী দেখায় ব্যস্ত থাকেন। নিয়মের তোয়াক্কা না করে ইচ্ছে মতো হাসপাতালে আসা-যাওয়া করেন। ফলে সদর হাসপাতালে চিকিৎসা নিতে আসা রোগীদের চিকিৎসকদের জন্য ঘন্টার পর ঘন্টা অপেক্ষা করতে হচ্ছে।

চাঁপাইনবাবগঞ্জ আধুনিক সদর হাসপাতাল। ছবি: সংগৃহীত

তবে কর্তৃপক্ষের দাবি- হাসপাতালে ২১ জন চিকিৎসক পদের মধ্যে ৯টি পদ শূণ্য। ফলে চিকিৎসক সংকটের কারণে রোগীদের হাসপাতালে এসে বিভিন্ন সময় ভোগান্তি পোহাতে হচ্ছে।

খোঁজ নিয়ে জানা যায়, জেলার সদর হাসপাতালটি ৫০ শয্যা থেকে আড়াইশো’ শয্যায় উন্নীত হলেও সেই অনুযায়ী জনবল বাড়েনি এখনও। ফলে চিকিৎসক সংকটে রোগীদের ভোগান্তি পোহাতে হয়। তবে সেই ভোগান্তি মাত্রা ছাড়িয়েছে চিকিৎসকদের ফাঁকিবাজিতে।

কর্মরত অধিকাংশ বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক বেলা ১১টার আগে হাসপাতালে আসেন না এবং দুপুর ১২টার আগে রোগীর চিকিৎসা করেন না। বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকরা নিজেদের ইচ্ছে অনুযায়ী হাসপাতালে আসা-যাওয়া করেন। অথচ পাশ্ববর্তী প্রাইভেট ক্লিনিকগুলোতে নিয়ম করে রোগী দেখেন।

ফলে দূর-দূরান্ত থেকে চিকিৎসা নিতে আসা রোগীদের বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকদের জন্য তাদের চেম্বারের সামনে ঘন্টার পর ঘন্টা দাঁড়িয়ে অপেক্ষা করতে হয়। শুধু তাই নয়, কোনো কোনো চিকিৎসক রোগীদের সাথে চরম দূর্ব্যবহার করেন বলেও বিস্তর অভিযোগ রয়েছে।

চাঁপাইনবাবগঞ্জ আধুনিক সদর হাসপাতাল চত্বর। ছবি: সংগৃহীত

এদিকে, হাসপাতালের আবাসিক চিকিৎসককে হাসপাতালের কোয়ার্টারে (আর.এম.ও ভবন) থাকার বাধ্যবাধকতা থাকলেও দীর্ঘ ১৫বছর ধরে কোন আবাসিক চিকিৎসক সেখানে বসবস করেন না। ফলে রাত হলে চিকিৎসা সেবা মেলে না বললেই চলে। অথচ লাখ লাখ টাকা ব্যয়ে নির্মিত আবাসিক চিকিৎসকের বাসভবন পড়ে থেকে নষ্ট হচ্ছে।

এছাড়া হাসপাতালের নোংরা ও দুর্গন্ধময় পরিবেশ চিকিৎসা নিতে আসা রোগী ও তাদের স্বজনদের দুর্ভোগ আরও বাড়িয়ে দিয়েছে। রোগীদের অভিযোগ- দীর্ঘদিন ধরে বেড অপরিস্কার থাকে, আশেপাশে নোংরা ময়লা আবর্জনা ঠিকমতো পরিস্কার করাও হয় না।

হাসপাতালেরর তত্ত্বাবধায়কের দায়িত্বে থাকা সিভিল সার্জন ডা. সাইফুল ফেরদৌস মো. খায়রুল আতাতুর্ক বলেন, হাসপাতালের ২১ জন চিকিৎসকের মধ্যে ৯ জনের পদ শূণ্য রয়েছে। অল্প সংখ্যক চিকিৎসক নিয়ে রোগীদের চিকিৎসা দিতে হিমশিম খেতে হচ্ছে।

আবাসিক চিকিৎসক না থাকার বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, দীর্ঘদিন ধরে আবাসিক চিকিৎসকের পদ শূণ্য রয়েছে। ফলে কাজ চালিয়ে নেওয়ার জন্য একজনকে ভারপ্রাপ্ত হিসেবে দায়িত্ব দেয়া হয়েছে। এজন্য তিনি হাসপাতাল কোয়ার্টারে থাকেন না।


শর্টলিংকঃ