সহজেই নারী উদ্যোক্তাদের ঋণ দেবে বাংলাদেশ ব্যাংক


নিজস্ব প্রতিবেদক, নওগাঁ:

বাংলাদেশের অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধির মূল চালিকা শক্তি ক্ষদ্র ও মাঝারি শিল্প উদ্যোগ। নারী উদ্যোক্তাদের খুঁজে বের করে এই খাতে অন্তর্ভুক্ত করে তাঁদেরকে দেশের উন্নয়ন কর্মকান্ড আরও জোরদার করতে হবে। নারী উদ্যোক্তাদের এগিয়ে নিতে তাঁদের প্রতি ব্যাংকারদের সহযোগিতার হাত বাড়াতে হবে। ব্যাংকাররা নারী উদ্যোক্তাদের হয়রানি করলে কঠোর ব্যবস্থা নেবে বাংলাদেশ ব্যাংক।

শনিবার বিকেলে নওগাঁর একটি বেসরকারি উন্নয়ন সংস্থার মিলনায়তনে বাংলাদেশ ব্যাংক ও এসএমই ফাউন্ডেশন আয়োজিত নারী উদ্যোক্তা-ব্যাংকার সম্পর্ক উন্নয়ন বিষয়ে মতবিনিময় সভায় বক্তারা এসব কথা বলেন। সভার উদ্বোধনী পর্বে প্রধান অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন, বাংলাদেশ ব্যাংকের নির্বাহী পরিচালক ও স্মল এন্ড মিডিয়াম এন্টারপ্রাইজ ডেভলভমেন্ট প্রজেক্ট-২ (এসএমইডিপি-২) এর প্রকল্প পরিচালক জোয়ার্দার ইসরাইল হোসেন।

বাংলাদেশ ব্যাংক প্রধান অফিসের যুগ্ন-পরিচালক আহমেদ জুবায়ের মাহবুবের সভাপতিত্বে এবং বাংলাদেশ ব্যাংকের উপ-পরিচালক বিধান চন্দ্র সাহার সঞ্চালনায় বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন, আন্তর্জাতিক নারী উদ্যোক্তা বিশেষজ্ঞ লিলিট অ্যাসাট্র্যান, দেশীয় নারী উদ্যোক্তা বিশেষজ্ঞ আখতারুজ্জামান ও মার্কেন্টাইল ব্যাংক নওগাঁ শাখার সিনিয়র ভাইস প্রেসিডেন্ট কামরুজ্জামান। সভায় স্থানীয় নারী উদ্যোক্তা ও ব্যাংকারদের উদ্দেশ্যে স্মল এন্ড মিডিয়াম এন্টারপ্রাইজ ডেভলভমেন্ট প্রজেক্ট-২ (এসএমইডিপি-২) এর পরিচিত, এই প্রকল্পের লক্ষ্য-উদ্দেশ্য ও এই প্রকল্প বাস্তবায়নে বাংলাদেশ ব্যাংকের গৃহীত পদক্ষেপগুলো তুলে ধরেন বাংলাদেশ ব্যাংকের উপ-পরিচালক বিধান চন্দ্র সাহা।

প্রধান অতিথির বক্তব্যে বাংলাদেশ ব্যাংকের নির্বাহী পরিচালক জোয়র্দার ইসরাইল হোসেন বলেন, ‘বাংলাদেশের নারী সমাজকে অর্থনৈতিক মূলধারায় নিয়ে আসতে এশিয়ান ডেভলবমেন্ট ব্যাংকের অর্থায়নে বাংলাদেশ সরকার প্রায় দুই হাজার কোটি টাকার প্রকল্প হাতে নিয়েছে। বিভিন্ন তফসিলি ব্যাংকের মাধ্যমে এই প্রকল্প বাস্তবায়ন করা হচ্ছে। বাংলাদেশ ব্যাংকের মূলধনের অভাব নেই। শুধু নারী উদ্যোক্তাদের এগিয়ে আসতে হবে। ঘরে বসে থাকলে হবে না। স্বপ্ন আর সাহস নিয়ে সামনে এগিয়ে আসলে ঋণ সুবিধা পাওয়া যাবে। এক্ষেত্রে নারী উদ্যোক্তাদের এগিয়ে নিতে ব্যাংকারদের সহযোগিতার হাত বাড়াতে হবে। ঋণ পেতে নারী উদ্যোক্তাদের ব্যাংকাররা হয়রানি করলে তাঁদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেবে বাংলাদেশ ব্যাংক।’

বিধান চন্দ্র সাহা বলেন, বাংলাদেশের অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধির মূল চালিকা শক্তি ক্ষদ্র ও মাঝারি শিল্প উদ্যোগ। দেশে ক্ষুদ্র ও মাঝারি শিল্প উদ্যোক্তার সংখ্যা প্রায় ৯০ শতাংশ। অথচ বিভিন্ন ব্যাংক থেকে এই উদ্যোক্তারা ঋণ সুবিধা পাচ্ছেন মাত্র ৫ থেকে ১০ শতাংশ। আর বাকি ১০ শতাংশ কর্পোরেট উদ্যোক্তারা পাচ্ছেন ৯০ শতাংশ ঋণ সুবিধা। দেশের প্রবৃদ্ধি বাড়াতে হলে ক্ষুদ্র ও মাঝারি শিল্প উদ্যোক্তাদের এগিয়ে নিতে হবে। বিশেষ নারী উদ্যোক্তাদের খুঁজে বের করে তাঁদের উন্নয়ন কর্মকান্ড অন্তর্ভুক্ত করতে হবে।

এই প্রকল্পের মাধ্যমে ক্ষুদ্র ও মাঝারি শিল্পে আরও বেশি উদ্যোক্তা সৃষ্টির সুযোগ রয়েছে বলে বক্তারা মন্তব্য করেন। সভায় অংশ নেওয়া স্থানীয় নারী উদ্যোক্তা এসএমই খাতে ঋণ বিতরণ কার্যক্রমের বিভিন্ন সমস্যা তুলে ধরেন। এছাড়া ব্যাংকাররা এই প্রকল্প বাস্তবায়নে বিভিন্ন সমস্যা-সম্ভাবনা ও সুপারিশ তুলে ধরেন।


শর্টলিংকঃ