সাংবাদিক ধরতে ৪০ জনের বাহিনী, তিনি কি সেরা সন্ত্রাসী: হাইকোর্ট


ইউএনভি ডেস্ক:

মধ্যরাতে অভিযান পরিচালনা এবং সাংবাদিককে কারাদণ্ড দেওয়ার ঘটনায় হাইকোর্ট বিস্ময় প্রকাশ করেছেন। পাঁচটি বিষয়ে রাষ্ট্রপক্ষের কাছে তথ্য জানতে চেয়েছেন আদালত।

করোনা: সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান ও বন্দর বন্ধের নির্দেশনা চেয়ে রিট

কুড়িগ্রামে সাংবাদিক আরিফুল ইসলাম রিগ্যানকে বাড়ি থেকে ডেকে নিয়ে জেলা প্রশাসনের ভ্রাম্যমাণ আদালতে শাস্তি দেওয়ার ঘটনায় হাইকোর্ট বিস্ময় প্রকাশ করেছেন। আদালত বলেন, ‘একজন সাংবাদিককে ধরতে মধ্যরাতে তার বাসায় ৪০ জনের বিশাল বাহিনী গেল, এ তো বিশাল ব্যাপার! তিনি কি দেশের সেরা সন্ত্রাসী?’

মধ্যরাতে এভাবে অভিযান পরিচালনা এবং সাংবাদিককে কারাদণ্ড দেওয়ার ঘটনায় হাইকোর্ট পাঁচটি বিষয়ে রাষ্ট্রপক্ষের কাছে তথ্য জানতে চেয়েছেন।

বিষয়টি নিয়ে ব্যবস্থা গ্রহণের দাবিতে করা এক রিটের শুনানিকালে রোববার বিচারপতি মো. আশরাফুল কামাল ও বিচারপতি সরদার মো. রাশেদ জাহাঙ্গীরের হাইকোর্ট বেঞ্চ সোমবারের মধ্যে এসব তথ্য জানাতে রাষ্ট্রপক্ষকে মৌখিক নির্দেশ দেন।

হাইকোর্টের জানতে চাওয়ার বিষয়গুলো হলো- সাংবাদিক আরিফুল ইসলামকে দেওয়া সাজা ও দণ্ড আদেশের অনুলিপি, অভিযান কারা পরিচালনা করেছে- মোবাইল কোর্ট নাকি টাস্কফোর্স, রাতে অভিযান পরিচালনার বিষয়ে আইন অনুসারে পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে কি না, অভিযান পরিচালনার কারণ এবং আইন অনুসারে ঘটনা কার সম্মুখে কখন সংঘটিত হলো।

কুড়িগ্রামের জেলা প্রশাসকের সঙ্গে যোগাযোগ করে ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল দেবাশীষ ভট্টাচার্য্য সোমবার আদালতকে এসব তথ্য জানাবেন।

সাংবাদিক আরিফুল ইসলাম রিগ্যান
রোববার সকালে বাংলা ট্রিবিউনের নির্বাহী সম্পাদক হারুন উর রশীদ জনস্বার্থে হাইকোর্টের সংশ্লিষ্ট শাখায় একটি রিট আবেদন করেন। আবেদনে টাস্কফোর্সের নামে আরিফুল ইসলামকে অবৈধ সাজা ও আটক করা কেন সংবিধান পরিপন্থি হবে না, আরিফুল ইসলামকে ৫০ লাখ টাকা কেন ক্ষতিপূরণ দেওয়া হবে না- এ মর্মে রুল জারির আবেদন করা হয়।

রিট আবেদনের পক্ষে শুনানি করেন আইনজীবী ইশরাত হাসান ও ব্যারিস্টার সৈয়দ সায়েদুল হক সুমন। অন্যদিকে, ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল দেবাশীষ ভট্টাচার্য্য ছিলেন রাষ্ট্রপক্ষে।

কুড়িগ্রামের ডিসি, সিনিয়র সহকারী কমিশনার, সহকারী কমিশনার ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটকে তাদের ভূমিকার ব্যাখ্যা দেওয়ার জন্য তলবের নির্দেশনাও চাওয়া হয়েছে। একইসঙ্গে সাংবাদিক আরিফুল ইসলাম রিগ্যানের বিরুদ্ধে করা ভ্রাম্যমাণ আদালতের মামলার নথি এবং টাস্কফোর্স পরিচালনার নথি তলব করা হয়েছে।

এদিকে ২৫ হাজার টাকায় সাংবাদিক রিগ্যানকে অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট মো. সুজাউদ্দৌলা রোববার জামিন দেন।

অন্যদিকে, মধ্যরাতে সাংবাদিককে বাড়ি থেকে ডেকে নিয়ে কুড়িগ্রাম জেলা প্রশাসনের ভ্রাম্যমাণ আদালতের মাধ্যমে কারাদণ্ড দেওয়ার অভিযোগের তদন্ত করছে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ।

সাংবাদিক আরিফুল ইসলামের রিগ্যানের পক্ষে দাবি করা হয়, শুক্রবার মধ্যরাতে জেলা প্রশাসনের লোকজন দরজা ভেঙে তার বাড়ির ভেতরে প্রবেশ করেন। পরে তাকে জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ে নিয়ে বাড়িতে ‘আধা বোতল মদ ও দেড়শ গ্রাম গাঁজা’ পাওয়ার অভিযোগে ভ্রাম্যমাণ আদালত বসিয়ে কারাদণ্ড দেওয়া হয়।

ঘটনার শুরু থেকেই সাংবাদিক রিগ্যানের সহকর্মী ও পরিবার দাবি করে আসছে, একটি পুকুর সংস্কার নিয়ে পত্রিকায় প্রতিবেদন করায় ক্ষুব্ধ হয়ে তাকে ফাঁসিয়েছেন জেলা প্রশাসক মোছা. সুলতানা পারভীন।

সূত্র: টি বি এস


শর্টলিংকঃ